উত্তর : এটা শরী‘আতে হারাম। যদি কোন মহিলা এমন পোশাক পরিধান করে যা পুরুষের জন্য নির্দিষ্ট (যেমনঃ ট্রাউজার, পায়জামা-পাজ্ঞাবি, প্যান্ট-শার্ট ইত্যাদি) তবে তা ছালাতের মধ্যে হোক কিংবা ছালাতের বাইরে উভয়াবস্থাতেই হারাম। অনুরূপভাবে স্ত্রীর জন্য জায়েয নয় স্বামীর পোশাক পরিধান করা, অথবা এর বিপরীত। বালিকার জন্য বালকের পোশাক পরিধান করা নাজায়েয। একই রকম পুত্রের জন্য কন্যার বস্ত্র পরিধান করা অবৈধ। কেননা এটাও সাদৃশ্যের অন্তর্ভুক্ত। আলেমগণ বলেন, পোশাকের ক্ষেত্রে ছোট-বড় সকলের জন্য একই বিধান (ফাতাওয়া নূর আলাদ র্দাব, ১১/১৮৮-১৯১ পৃ.)।
ইদানীং আমাদের মুসলিম সমাজের ছেলে-মেয়েদের মধ্যেও স্কিন-টাইট ও মিনি-স্কার্ট পোশাকের প্রথা অধিকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আধুনিকতার নামে বেহায়াপনা, অগ্রগতির নামে অশ্লীলতা, সভ্যতার নামে অসভ্যতা, সংস্কৃতির নামে অপসংস্কৃতি, পরিবর্তনের নামে উন্মুক্ত যৌনাচার, শিক্ষার নামে যৌনশিক্ষা, পোশাকের নামে নগ্নতা এ সবই পাশ্চাত্য সভ্যতার অন্ধ অনুকরণের বিষফল। ইহুদী, খ্রীষ্টান, হিন্দু ও অন্যান্য বিজাতীদের দেখাদেখি নির্বোধ মুসলিমরাও এই অপসংস্কৃতির মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়ছে। গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে কিছু বিপথগামী তরুণ-তরুণী আগ্রাসী পাশ্চাত্য সভ্যতার শিকারে পরিণত হচ্ছে। এই অপসংস্কৃতি বিস্তৃতির অন্যতম কারণ হল, বিভিন্ন চলচিত্র জগতের অভিনেতা-অভিনেত্রী, গায়ক-গায়িকা, মডেল, ক্রীড়াবিদ ইত্যাদির অন্ধ ভক্তি এবং অন্ধ অনুকরণ। অথচ ইসলাম কাফিরদের সঙ্গে সাদৃশ্য স্থাপন করতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছে।
রাসূল (ﷺ) বলেছেন, مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ ‘যে ব্যক্তি বিজাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করে, সে তাদের দলভুক্ত গণ্য হবে’ (আবূ দাঊদ, হা/৪০৩১; ছহীহ বুখারী, হা/৩৪৫৬)। প্রত্যেক মুসলিম নারী-পুরুষের ইসলামী আদর্শ, নৈতিকতা ও চরিত্র গঠনের প্রতি আগ্রহ-উৎসাহ প্রকাশ করা দরকার এবং তাদের আনন্দ, উৎসব, পোশাক, খাওয়া, পান করা এবং সমস্ত কিছুতেই ইসলামী রীতি-নীতি মেনে চলা অপরিহার্য। কাফিরদের সাদৃশ্যে এমন সংকীর্ণ পোশাক পরিধান করা অবৈধ, যা তাদের দেহের গোপনীয় বিষয়গুলোকে সংজ্ঞায়িত করে। (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ৩/৩০৬-৩০৭ পৃ.)।
প্রশ্নকারী : আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ, রংপুর।