বিদ‘আত পরিচিতি
-ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান*
(১৮তম কিস্তি)
৮. বিদ‘আতীদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন প্রসঙ্গে
নারী-পুরুষের মাঝে সম্পর্ক স্থাপনের জন্য বিবাহ হচ্ছে একমাত্র বৈধ, বিধিবদ্ধ, সর্বজনীন এবং পবিত্র ব্যবস্থা। বল্গাহীন, স্বেচ্ছাচারী জীবনের উচ্ছৃঙ্খলতা ও নোংরামির অভিশাপ থেকে সুরক্ষার জন্য ইসলাম বিবাহের ব্যাপারে জোরালো তাকীদ প্রদান করেছে। নারী-পুরুষের পবিত্রতা ও সতীত্ব রক্ষার মোক্ষম ও বাস্তবসম্মত হাতিয়ার হল এ বিবাহ ব্যবস্থা। ঈমানদার নারী-পুরুষের মাঝে বৈবাহিক সম্পর্ক হয় স্থায়ী এবং দাম্পত্য জীবন হয় সুখ ও স্বাচ্ছন্দ্যের। তবে ইসলামী শরী‘আতে এমন কিছু বিষয় রয়েছে যার কারণে মুসলিম নারী-পুরুষের মাঝে বৈবাহিক সম্পর্ক বিনষ্ট হয়ে যায় কিংবা মুসলিম বংশ, পরিবার অথবা নামে মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও তাদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া উচিত নয়। যেমন বিদ‘আতীদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক রাখা যেমন ঠিক নয় অনুরূপভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়াও উচিত নয়। এক্ষেত্রে বিদ‘আতটি অবশ্যই কুফরী পর্যায়ের হতে হবে। তবে কুফরী নয় এমন বিদ‘আতকারীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া থেকে সর্বদা সতর্ক থাকা বাঞ্ছনীয়। কেননা বিদ‘আতের কারণে আগত সন্তান ও পরিবারে চরম দুর্যোগ নেমে আসতে পারে। নিম্নে আলোচনাটি মনোযোগ সহ পাঠ করুন!
সুধী পাঠক! বিদ‘আতীদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়টির দু’টি অবস্থা। যথা : (ক) বিদ‘আত কুফরী কিংবা শিরকী পর্যায়ের হওয়া এবং (খ) বিদ‘আত কুফরী কিংবা শিরকী পর্যায়ের না হওয়া। নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা উপস্থাপন করা হল :
(ক) বিদ‘আত কুফরী কিংবা শিরকী পর্যায়ের হওয়া
বিদ‘আত যদি সুস্পষ্ট কুফরী হয় অর্থাৎ কেউ যদি কুরআনকে মাখলূক্ব বা সৃষ্ট বলে, আল্লাহর গুণাবলীকে অস্বীকার করে ইত্যাদি বিভিন্ন বিদ‘আতে বিশ্বাসী হয়, যা তাকে দ্বীন থেকে বহিষ্কার করে দেয়, তাহলে সাধারণত তাদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করা হারাম। সুতরাং তাদের মহিলার সাথে আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের আক্বীদা পোষণকারীর বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করা বৈধ নয়। অনুরূপভাবে আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের আক্বীদা পোষণকারী কোন মহিলাকে বিদ‘আতী আক্বীদা পোষণকারী কোন পুরুষের সাথে বিবাহ প্রদান করাও বৈধ নয়। ইসলাম আহলে কিতাব ব্যতীত কাফির ও মুশরিকদের সাথে মুসলিমগণের উপর যে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করা হারাম ঘোষণা করেছে এ ক্ষেত্রে সেই দলীলগুলো সাব্যস্ত হবে।[১]
আর শরী‘আত বিধিবদ্ধ করেছে যে, মুসলিম কোন পুরুষের সাথে কাফির কিংবা মুশরিক কোন মহিলার বিবাহ করা হারাম। যেমনটি আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَ لَا تَنۡکِحُوا الۡمُشۡرِکٰتِ حَتّٰی یُؤۡمِنَّ ؕ وَ لَاَمَۃٌ مُّؤۡمِنَۃٌ خَیۡرٌ مِّنۡ مُّشۡرِکَۃٍ وَّ لَوۡ اَعۡجَبَتۡکُمۡ ۚ وَ لَا تُنۡکِحُوا الۡمُشۡرِکِیۡنَ حَتّٰی یُؤۡمِنُوۡا ؕ وَ لَعَبۡدٌ مُّؤۡمِنٌ خَیۡرٌ مِّنۡ مُّشۡرِکٍ وَّ لَوۡ اَعۡجَبَکُمۡ ؕ اُولٰٓئِکَ یَدۡعُوۡنَ اِلَی النَّارِ ۚۖ وَ اللّٰہُ یَدۡعُوۡۤا اِلَی الۡجَنَّۃِ وَ الۡمَغۡفِرَۃِ بِاِذۡنِہٖ ۚ وَ یُبَیِّنُ اٰیٰتِہٖ لِلنَّاسِ لَعَلَّہُمۡ یَتَذَکَّرُوۡنَ
‘ঈমান না আনা পর্যন্ত মুশরিক নারীকে তোমরা বিবাহ কর না, মুশরিক নারী তোমাদেরকে মুগ্ধ করলেও; নিশ্চয় মুমিন ক্রীতদাসী তা অপেক্ষা উত্তম। ঈমান না আনা পর্যন্ত মুশরিক পুরুষের সঙ্গে তোমরা বিবাহ দিও না, মুশরিক পুরুষ তোমাদেরকে মুগ্ধ করলেও, মুমিন ক্রীতদাস তা অপেক্ষা উত্তম। তারা অগ্নির দিকে আহ্বান করে এবং আল্লাহ তোমাদেরকে নিজ অনুগ্রহে জান্নাত ও ক্ষমার দিকে আহ্বান করেন। তিনি মানুষের জন্য স্বীয় বিধান সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত করেন, যাতে তারা তা হতে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২২১)। অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা ঈমানদার নারীদের সম্বোধন করে বলেন, وَ لَا تُمۡسِکُوۡا بِعِصَمِ الۡکَوَافِرِ ‘তোমরা কাফির নারীদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক (যা পূর্বে ছিল) বজায় রেখো না’ (সূরা আল-মুমতাহিনা : ১০)।
উক্ত আয়াত দু’টিতে মুসলিমদের উপর মুশরিক নারীদের বিবাহ করাকে সাধারণভাবে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। তবে আহলে কিতাব তথা ইহুদী-খ্রিষ্টান নারীদের মধ্যে যারা নেককার তাদের ক্ষেত্রে ভিন্ন ফায়সালা বর্ণিত হয়েছে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
اَلۡیَوۡمَ اُحِلَّ لَکُمُ الطَّیِّبٰتُ ؕ وَ طَعَامُ الَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡکِتٰبَ حِلٌّ لَّکُمۡ ۪ وَ طَعَامُکُمۡ حِلٌّ لَّہُمۡ ۫ وَ الۡمُحۡصَنٰتُ مِنَ الۡمُؤۡمِنٰتِ وَ الۡمُحۡصَنٰتُ مِنَ الَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡکِتٰبَ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ
‘আজ তোমাদের জন্য সমস্ত ভাল জিনিস হালাল করা হল, যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের খাদ্যদ্রব্য তোমাদের জন্য হালাল ও তোমাদের খাদ্যদ্রব্য তাদের জন্য হালাল; আর মুমিন সচ্চরিত্রা নারী ও তোমাদের পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের সচ্চরিত্রা নারী তোমাদের জন্য বৈধ করা হল’ (সূরা আল-মায়েদাহ : ৫)।
সুধী পাঠক! উক্ত আলোচনায় আহলে কিতাবের মধ্যে নেককার মহিলাদের বিবাহ করাকে সাধারণভাবে বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং কাফির ও মুশরিক নারীদের সাথে বিবাহ সম্পাদন করাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যেমন যারা মূর্তি, চন্দ্র, তারকা ও আগুন ইত্যাদির পূজা করে, তাদের সাথে মুসলিমদের বিবাহ করা সর্বোতভাবে হারাম। সুতরাং মুসলিমদের জন্য মুশরিকদের সাথে বিবাহ করার যে বিধান অনুরূপভাবে কুফরী বিদ‘আতের কারণে তাদের সাথে অনুরূপ বিধান, যদিও তারা ইসলামের দিকে সম্পৃক্ত হোক না কেন। ইবনু কাছীর (রাহিমাহুল্লাহ) (৭০১-৭৭৪ হি.) বলেন, ‘মূর্তি পূজা বা অন্যান্য শিরকের কারণে মুমিনগণের উপর মুশরিক নারীদেরকে বিবাহ করা হারাম। এই নিষেধাজ্ঞা সাধারণভাবে উদ্দেশ্য হওয়ায় কিতাবধারী ও মূর্তিপূজকদের প্রত্যেক শিরককে অন্তর্ভুক্ত করে। তবে এ বিধান থেকে আহলে কিতাব নারীদের মধ্যে নেককার নারীদেরকে নির্দিষ্ট করা হয়েছে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَ الۡمُحۡصَنٰتُ مِنَ الَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡکِتٰبَ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ اِذَاۤ اٰتَیۡتُمُوۡہُنَّ اُجُوۡرَہُنَّ مُحۡصِنِیۡنَ غَیۡرَ مُسٰفِحِیۡنَ وَ لَا مُتَّخِذِیۡۤ اَخۡدَانٍ ‘তোমাদের পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের সচ্চরিত্রা নারী তোমাদের জন্য বৈধ করা হল যদি তোমরা তাদের মোহর প্রদান কর বিবাহের জন্য, প্রকাশ্য ব্যভিচার অথবা গোপন প্রণয়িনী গ্রহণের জন্য নয়’ (সূরা আল-মায়েদাহ : ৫)।[২]
আহলে কিতাবের নেককার নারীদের ব্যতীত সকল কাফির ও মুশরিক নারীকে মুসলিমদের জন্য বিবাহ করাকে হারাম হওয়ার ব্যাপারে আহলে ইলম ঐকমত্য পোষণ করেছেন। যেমন,
১. ইবনু কুদামা (রাহিমাহুল্লাহ) (৫৪১-৬২০ হি./১১৪৭-১২২৩ খ্রি.) বলেন,
وَسَائِرُ الْكُفَّارِ غَيْرُ أَهْلِ الْكِتَابِ كَمَنْ عَبَدَ مَا اسْتَحْسَنَ مِنْ الْأَصْنَامِ وَالْأَحْجَارِ وَالشَّجَرِ وَالْحَيَوَانِ فَلَا خِلَافَ بَيْنَ أَهْلِ الْعِلْمِ فِيْ تَحْرِيْمِ نِسَائِهِمْ وَذَبَائِحِهِمْ
‘যারা চন্দ্র, পাথর, গাছ, প্রাণীদেরকে সুন্দরভাবে ইবাদত করে, আহলে কিতাব ব্যতীত গোটা কাফির সম্প্রদায় তাদের ন্যায়। সুতরাং তাদের নারীদের সাথে বিবাহ করা ও তাদের যব্হকৃত (প্রাণী ভক্ষণ করা) হারাম হওয়ার ব্যাপারে আহলে ইলমের মাঝে কোন মতবিরোধ নেই’।[৩]
২. শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইয়িম্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) (৬৬১-৭২৮ হি./১২৬৩-১৩২৮ খ্রি.) ক্বাদারিয়া ও তাদের বিধান সম্পর্কে অনেকগুলো হাদীছ একত্রিত করে বলেন, وَأَمَّا الْمُشْرِكُوْنَ فَاتَّفَقَتْ الْأُمَّةُ عَلَى تَحْرِيْمِ نِكَاحِ نِسَائِهِمْ وَطَعَامِهِمْ ‘উম্মতের ঐকমত্য হল, যারা মুশরিক, তাদের নারীদের বিবাহ করা ও তাদের খাদ্য ভক্ষণ করা হারাম’।[৪]
উক্ত আলোচনায় স্পষ্ট হয়েছে যে, আহলে কিতাবের মধ্যে নেককার নারী ব্যতীত সকল মুশরিক ও কাফির নারীদের সাথে মুসলিমদের বিবাহ করা হারাম। ঠিক একইভাবে কুফরী ও শিরক পর্যায়ের বিদ‘আতীদের সাথে যেমন জাহমিয়্যাহ, ক্বাদারিয়্যাহ ও রাফেযী (শী‘আ) ইত্যাদি ভ্রান্ত আক্বীদাপন্থীদের সাথে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আহর আক্বীদাপন্থীদের বিবাহ করা হারাম। কেননা এ সমস্ত ফের্কা তাদের কুফরের কারণে তারা দ্বীন থেকে বহিষ্কারের বিধানের অন্তর্ভুক্ত। আর যারা বাতিনী ফের্কা তথা আদ-দুরূয[৫], আন-নাছীরিয়্যাহ[৬] এবং যিনদীক্বদের মধ্যে হুলূলিয়্যাহ ও তানাসাখিয়্যাহ ইত্যাদি আক্বীদাপন্থীদের মেয়েদের সাথে বিবাহ করা কঠিনভাবে হারাম। কেননা এই সকল ফের্কার অনুসারীরা মুশরিক ও দ্বীন থেকে বহিষ্কৃত। সুতরাং তাদের কোন মহিলাকে বিবাহ করা কখনোই বৈধ নয়। এ সম্পর্কে সালাফদের বক্তব্য নি¤œরূপ :
১. বিখ্যাত তাবেঈ আবূ মুহাম্মাদ ত্বালহা ইবনু মুছাররফ আল-ইয়ামী (রাহিমাহুল্লাহ) (মৃ. ১১২ হি.) বলেন, الرافضة لا تنكح نساؤهم ولا تؤكل ذبائحهم لأنهم أهل ردة ‘রাফেযী আক্বীদার মহিলাদের বিয়ে কর না এবং তাদের যব্হকৃত প্রাণীর গোশত ভক্ষণ কর না। কেননা তারা মুরতাদ’।[৭]
২. সাহল ইবনু আব্দুল্লাহ আত-তুসতারী (রাহিমাহুল্লাহ) (মৃ. ২৮৩ হি.) হতে বর্ণিত,
أَنَّهُ سُئِلَ عَنِ الصَّلَاةِ خَلْفَ الْمُعْتَزِلَةِ وَالنِّكَاحِ مِنْهُمْ وَتَزَوَّجُهُمْ. فَقَالَ: لَا، وَلَا كَرَامَةَ! هُمْ كُفَّار
‘নিশ্চয় মু‘তাযিলা আক্বীদায় বিশ্বাসী এবং তাদের মধ্যে কাউকে বিয়ে করা এবং তাদের সাথে বিয়ে প্রদানকারী ব্যক্তির পিছনে ছালাত আদায় করা সম্পর্কে তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, না, ছালাত আদায় করা যাবে না এবং তাদের সম্মানও করা যাবে না। কেননা তারা কাফির’।[৮]
৩. আব্দুল কাহির আল-বাগদাদী (রাহিমাহুল্লাহ) (৯৮০-১০৩৭ খ্রি.) তাঁর বিখ্যাত ‘আল-ফারকু বায়নাল ফিরাক্ব’ গ্রন্থের শেষের দিকে প্রসিদ্ধ চার মাযহাবের অনুসারী কতিপয় ফের্কার বিধান বর্ণনায় আহলুল ইলমের মতামত উল্লেখ করেছেন। যেমন, রাফেযী (শী‘আ)-এর মধ্যে সাব্বাইয়্যাহ এবং খারেজীদের মধ্যে আল-বায়ানিয়্যাহ, আল-মুনীরিয়্যাহ, আল-মানসূরিয়্যাহ, আল-জানাহিয়্যাহ, আল-খিত্বাবিয়্যাহ, আল-হুলূলিয়্যাহ, আল-বাতিনিয়্যাহ, আল-ইয়াযীদিয়্যাহ এবং মাইমূনিয়্যাহ ইত্যাদি। অতঃপর তিনি বলেছেন,
فان حكم هَذِه الطوائف الَّتِى ذَكرنَاهَا حكم الْمُرْتَدين عَن الدّين وَلَا تحل ذَبَائِحهم وَلَا يحل نِكَاح الْمَرْأَة مِنْهُم
‘এই সকল দলসমূহের বিধান, যা আমরা আলোচনা করলাম সেটা হল, তারা দ্বীন থেকে বহিষ্কৃত, তাদের যব্হকৃত কিছু খাওয়া বৈধ নয় এবং তাদের মধ্যকার মহিলাদের বিবাহ করাও বৈধ নয়’।[৯]
৪. আবূ হামিদ মুহাম্মাদ ইবনু মুহাম্মাদ আল-গাযযালী আত-তূসী (রাহিমাহুল্লাহ) (মৃ. ৫০৫ হি.) কতিপয় বাতিনী ফের্কার হুকুম বর্ণনা করে তাদের সম্পর্কে বলেন,
وَأما أبضاع نِسَائِهِم فَإِنَّهَا مُحرمَة فَكَمَا لَا يحل نِكَاح مرتدة لَا يحل نِكَاح باطنية معتقدة لما حكمنَا بالتكفير
‘তাদের মহিলাদের গোপনাঙ্গ তথা বিবাহ করা হারাম। যেমন মুরতাদকে বিবাহ করা বৈধ নয়, বৈধ নয় বাতীনি আক্বীদার কাউকে বিয়ে করা। যেমনটি আমরা কুফরীর বিধান আরোপ করেছি’।[১০]
৫. শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) (৬৬১-৭২৮ হি./১২৬৩-১৩২৮ খ্রি.) রাফেযীদের (শী‘আ) সীমালঙ্ঘন এবং নাছীরিয়্যাহ ও ইসমাঈলীয়্যাহদের মধ্যে কতিপয় দল কর্তৃক আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর ব্যাপারে সীমালঙ্ঘন সম্পর্কে হাদীছ পেশ করে বলেন,
فَإِنَّ جَمِيْعَ هَؤُلَاءِ الْكُفَّارِ أَكْفَرُ مِنْ الْيَهُوْدِ وَالنَّصَارَى فَإِنْ لَمْ يَظْهَرْ عَنْ أَحَدِهِمْ ذَلِكَ كَانَ مِنْ الْمُنَافِقِيْنَ الَّذِيْنَ هُمْ فِي الدَّرْكِ الْأَسْفَلِ مِنْ النَّارِ وَمَنْ أَظْهَرَ ذَلِكَ كَانَ أَشَدَّ مِنْ الْكَافِرِيْنَ كُفْرًا . فَلَا يَجُوْزُ أَنْ يُقِرَّ بَيْنَ الْمُسْلِمِيْنَ لَا بِجِزْيَةِ وَلَا ذِمَّةٍ وَلَا يَحِلُّ نِكَاحُ نِسَائِهِمْ وَلَا تُؤْكَلُ ذَبَائِحُهُمْ؛ لِأَنَّهُمْ مُرْتَدُّوْنَ مِنْ شَرِّ الْمُرْتَدِّيْنَ
‘অতঃপর নিশ্চয় তারা সকলেই ইহুদী-খ্রিষ্টানদের চেয়ে বড় কাফের। যখন তাদের কারো নিকট থেকে এটা প্রকাশ না পায়, তখন তারা মুনাফিক্বদের অন্তর্ভুক্ত। যারা জাহান্নামের তলদেশে অবস্থান করবে। আর যখন তাদের নিকট থেকে তা প্রকাশ পায়, তখন তা কাফেরদের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন কুফরী হিসাবে গণ্য হয়। সুতরাং তাদেরকে জিযিয়া ও যিম্মাদারী নিয়েও মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত গণ্য করা বৈধ নয়। আর বৈধ নয় তাদের মহিলাদের বিবাহ করা, বৈধ নয় তাদের যব্হকৃত কিছু ভক্ষণ করা। কেননা তারা মুরতাদদের মধ্যে নিকৃষ্ট মুরতাদ’।[১১] ভ্রান্ত ফের্কা নাছীরিয়্যাহদের সম্পর্কে তিনি আরো বলেন,
وَقَدْ اتَّفَقَ عُلَمَاءُ الْمُسْلِمِينَ عَلَى أَنَّ هَؤُلَاءِ لَا تَجُوزُ مُنَاكَحَتُهُمْ ؛ وَلَا يَجُوزُ أَنْ يَنْكِحَ الرَّجُلُ مَوْلَاتِهِ مِنْهُمْ وَلَا يَتَزَوَّجَ مِنْهُمْ امْرَأَةً وَلَا تُبَاحُ ذَبَائِحُهُمْ
‘মুসলিম ওলামায়ে কিরাম ঐকমত্য পোষণ করেছেন যে, তাদেরকে বিবাহ করা বৈধ নয়। তাদের মধ্যকার কোন পুরুষ বন্ধুকে বিবাহ করা বৈধ নয় এবং তাদের মধ্যকার কোন মহিলাকেও বিবাহ করা বৈধ নয়। আর তাদের যব্হকৃত কিছু (খাওয়াও) বৈধ নয়’।[১২]
সুধী পাঠক! মুসলিম মহিলার জন্য মুশরিক পুরুষকে বিবাহ করা এবং মুসলিম পুরুষ র্কতৃক মুশরিক নারীকে বিবাহ করা যেমন হারাম, তেমনি কোন বিদ‘আতী ও অন্য ভ্রান্ত আক্বীদায় বিশ্বাসী নারী-পুরুষকে পরস্পর বিবাহ করাও হারাম। সুতরাং বিদ‘আতীর বিদ‘আত যদি কুফরের সীমা পর্যন্ত পৌঁছে যায় যেমন জাহমিয়্যাহ ও ক্বাদারিয়্যাহ ইত্যাদি বিদ‘আতীদের বিদ‘আত, তাহলে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের কারো জন্য তাদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করা বৈধ হবে না। এ সম্পর্কে আল-কুরআন, সুন্নাহ ও উম্মতের ইজমা সংক্রান্ত অনেক দলীল প্রমাণ রয়েছে। এছাড়া এ ব্যাপারে আহলুস সুন্নাহর ওলামায়ে কিরামের মাঝে ইজমা সংঘটিত হযেছে। আল্লাহ তা‘আলাই সর্বাধিক জ্ঞাত।
(ইনশাআল্লাহ চলবে)
* শিক্ষক, আল-জামি‘আহ আল-ইসলামিয়্যাহ, খড়খড়ি, রাজশাহী।
তথ্যসূত্র :
[১]. মাওক্বিফু আহলিস সুন্নাতি ওয়াল জামা‘আতি মিন আহলিল হাওয়া ওয়াল বিদাঈ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩৭৩।
[২]. তাফসীরু কুরআনিল ‘আযীম, ১ম খণ্ড, পৃ. ৫৮২।
[৩]. ইবনু কুদামা আল-মাক্বদেসী, আল-মুগনী (মাকতাবাতুল ক্বাইরাহ, তা.বি.), ৭ম খণ্ড, পৃ. ।
[৪]. ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ, মাজমূঊল ফাতাওয়া, ৮ম খণ্ড, পৃ. ১০০।
[৫]. ‘দুরূয’ একটি একেশ্বরবাদী ধর্মীয় ও সামাজিক সম্প্রদায়। এটি মূলত শী‘আ সম্প্রদায়ের একটি শাখা। দুরূযদের মূল আবাসভূমি সিরিয়া-লেবানন। ইসরাইল ও জর্দানে দুরূয ধর্মকে আলাদা ধর্ম হিসাবে স্বীকৃতি দেয়া হয় না। কারণ এই ধর্মের ভিত্তিমূল মূলত ইসলাম। দুরূযদের ধর্ম বিধানে ইবরাহীমীর ধর্মসমূহের পাশাপাশি নিওপ্লাতিনিক ও পিথাগোরীয় মতবাদের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। দুরূযগণ নিজেদেরকে ‘আহলে তাওহীদ’ তথা একেশ্ববাদী মানুষ বা একতাবদ্ধ মানুষ বা ‘আল-মুওয়াহিদূন’ বলে পরিচয় দেয়। দুরূযদের সামাজিক রীতি-নীতি মুসলিম, ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের থেকে ভিন্ন। দুরূয অনুসারীগণ প্রধানত সিরিয়া, লেবানন, জর্দান এবং ইসরাইলে বসবাস করে। ‘ইনস্টিটিউট অফ দুরূয’-এর গবেষণা থেকে জানা যায় যে, ৫০-৫৫% দুরূয সিরিয়ায়, ৪০% লেবাননে, ৬-৭% ইসরাইলে এবং ১-২% জর্দানে বাস করে। মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইউরোপ, লাতিন আমেরিকা, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ আফ্রিকায় দুরূয অনুসারীগণ উল্লেখযোগ্য হারে বসবাস করে। দুরূযগণ আরবীতে কথা বলেন ও প্রাচ্যীয় ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের সামাজিক রীতিনীতি অনুসরণ করেন। পৃথিবীতে দুরূয অনুসারীগণের সংখ্যা দশ লাখেরও বেশি।
দুরূয অনুসারীগণ বিশ্বাস করেন আল-হাকিম বি আমরিল্লাহ হচ্ছে আল্লাহ প্রেরিত নবী। দুরূয নামটি এসেছে মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাইল নাশতাকিন আদ-দারাযীর নাম থেকে। প্রথম দিকে আদ-দারাযী গোপনে তাঁর মতবাদ প্রচার করতেন। তিনি প্রচার করতেন সৃষ্টিকর্তা মানুষের মাঝে বিরাজ করেন। বিশেষ করে আলী ইবনু আবী তালিব ও তার বংশধরদের মাঝে। তৎকালীন খলীফা আল-হাকিম বি-আমরিল্লাহর মাঝেও সৃষ্টিকর্তা আছেন বলে প্রচার করেন। ‘আদ-দারাযী’ নিজেকে ‘বিশ্বাসের তরবারী’ ঘোষণা করেন।
দেশের প্রতি দুরূযদের আনুগত্য এবং ভালোবাসা প্রবল। নিজ সম্প্রদায়ের প্রতি দুরূযগণ খুবই সহমর্মী। দেশে-বিদেশে যেখানেই হোক দুরূযগণ একে অন্যের প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করে। দুরূযদের ক্ষমতার ইতিহাস আছে। ঐতিহাসিক পূর্ব-ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে বসবাসকারী অন্য সম্প্রদায়ের তুলনায় দুরূযরাই সব থেকে বেশি স্বাধীনতা ভোগ করেছে। দুরূযদের ধর্মগ্রন্থের নাম ‘কিতাব আল-হিকমাহ’ বা ‘রাসাইল হিকমাহ’ (আরবী رسـائـل الـحـكـمـة, বাংলা : জ্ঞানের বই)। তারা মধ্যপ্রাচ্যের একটি বড় উপজাতি। এরা মূলত মধ্যপ্রাচ্যের পাহাড়ী এলাকায় বাস করে। দ্র. : ইহসান এলাহী যহীর আল-পাকিস্তানী, আশ-শী‘আতু ওয়াত তাশী‘ (লাহোর : ইদারাতু তারজুমানিস সুন্নাহ, ১০ম সংস্করণ, ১৪১৫ হি./১৯৯৫ খ্রি.), পৃ. ২৩৬-২৩৯; ড. গালিব ইবনু আলী আল-‘ইওয়াযী, ফিরাকুন মু‘আছিরাহ (জেদ্দা : আল-মাকতাবাতুল ‘আছরিয়্যাহ আয-যাহাবিয়্যাহ, ৪র্থ সংস্করণ, ১৪২২ হি./২০২২ খ্রি.), ২য় খণ্ড, পৃ. ৫৯১-৬৩৭।
[৬]. শী‘আদের মাঝে সবচেয়ে উগ্রপন্থী হল এই নাছীরিয়্যাহ সম্প্রদায়। তারা নিজেদেরকে ইমাম মুহাম্মাদ ইবনু নাসির আল-মানীরীর দিকে সম্পৃক্ত করে। এরা শী‘আ রাফেযীদের ‘ইছনা ‘আশারিয়া’ সম্প্রদায়ের অন্যতম দল। আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর ব্যাপারে এরা বাড়াবাড়িমূলক চিন্তা লালন করে। এমনকি তারা তাকে ‘ইলাহ’ বা উপাস্য বলেও সাব্যস্ত করে। (নাউযুবিল্লাহ)। তাদের অন্যতম মিত্র হল উগ্রপন্থী খ্রিষ্টানরা। এই উগ্রপন্থী বর্বর খ্রিষ্টানরা তাদের নিকট অস্ত্র সরবরাহ করত। নাছীরিয়্যাদের সাথে কুখ্যাত তাতারী বাহিনী বা মোঙ্গলীয়ানদের মিত্রতা ছিল দেখার মত। যুদ্ধে তারা তাতারীদের পক্ষে অবস্থান করত। নাছীরিয়্যারা সর্বদা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে থাকে। তারা রাসূল (ﷺ)-এর বহু হাদীছকে বিকৃত করে এবং সমাজে বহু বানোয়াট হাদীছ ছড়িয়ে দিয়েছে। শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়া (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘শী‘আদের নাছীরিয়্যাহ দলের লোকেরা এবং বাতেনী সম্প্রদায়ের লোকেরা ইহুদী-খ্রিষ্টানদের থেকেও অধিক মুসলিম বিদ্বেষী। তারা সর্বদা মুসলিমদের ক্ষতিসাধনে লিপ্ত থাকে। তারা যুদ্ধের ময়দানে কাফেরদের সাথে অবস্থান করে। তারা সর্বদা অজ্ঞ-মূর্খ মুসলিমদের বিপদগামী করার জন্য লিপ্ত থাকে। তারা পরকাল, জান্নাত-জাহান্নাম, নবী-রাসূলে বিশ্বাসী নয়। তারা পৃথক একটা ভ্রান্ত ধর্মের অনুসারী।
কুখ্যাত তাতাররা যখন ইসলামী খেলাফতের রাজধানী বাগদাদ দখল করে তখন তারা এই সম্প্রদায়ের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহায়তায় যুদ্ধ করে। সমরবিজ্ঞদের মতে, যদি তাতাররা এই বাহিনীর বা এই গোষ্ঠীর কোনরূপ সহায়তা না পেত তাহলে তারা কখনো বাগদাদ দখল করতে পারত না। এই নাছীরিয়্যাহ সম্প্রদায়ের লোকেরা বিভিন্ন নামে মুসলিমদের মাঝে পরিচিত। তাদের নামগুলো হল, মুলহিদ, কারামিতা, বাতিনিয়্যাহ, ইসমাঈলিয়্যাহ, খারমিয়া ও মাহমারা। এই নামগুলো দ্বারা কখনো তাদের সম্পূর্ণ নাছীরিয়্যাহ দলকে বুঝানো হয়। আবার কখনো তাদের মধ্যকার বিশেষ শ্রেণীকে বুঝানো হয়। মোটকথা যেটাই হোক, এরা সবাই শী‘আ সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। তারা ধর্মত্যাগী মুরতাদ। তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা, তাদের উপর শাস্তি আরোপ করা ঈমানী দায়িত্ব। আবূ বকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) ও তার যামানায় মুরতাদদের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম যুদ্ধ পরিচালনা করেছেন। অতএব তাদের ব্যাপারে কেউ কিছু জানলে সেটা অন্যকে জানিয়ে সতর্ক করে দিতে হবে।
বর্তমানে এই নাছীরিয়্যাহ দলটি ‘আলাভী’ নামে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। সিরিয়াতে তারা সর্বদা মুসলিম নিধনে খ্রিষ্টানদের পক্ষে যুদ্ধ করে। তারা হলো গাদ্দার, মুনাফিক, লম্পট ও সহিংস। নাছীরিয়্যাহ সম্প্রদায়ের কতিপয় ভ্রান্ত আক্বীদা : ১. ইমাম আলী ইবনু আবী তালিব (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে ইলাহ বা উপাস্য মনে করা। তারা মনে করে, তিনি মেঘমালায় থাকেন, বজ্রধ্বনি হলো তার আওয়াজ। বিজলী হলো তার হাসি। এ জন্য তাদের কেউ কেউ মেঘমালাকে খুব সম্মান করে থাকে। ২. মানুষ পুনর্জীবন লাভ করে। শী‘আরা বা নাছীরিয়্যাহরা বিশ্বাস করে, তাদের মতে, যারা আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর ইবাদত করে না, তারা গাধা, ঘোড়া ও খচ্চরের আকৃতিতে পূনর্জন্ম গ্রহণ করে। আর যারা আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) এর ইবাদত করে তথা তাদের মুমিনরা প্রতিজন সাতবার পুনর্জীবন লাভ করে। ৩. তারা বছরে দু’টি ঈদ পালন করে। যেদিন তারা সকলে সমবেত হয়। এ সময় তারা ‘নাবীয’ পান করে এবং নানান অশ্লীল ও গর্হিত কাজ করে। ঈদ দু’টি হল, ঈদুল গুতাস ওয়াল বারবারা। এ দু’টি খ্রিষ্টানদের উৎসব এবং ঈদুল নাইরোজ। এটি অগ্নিপূজকদের উৎসব। দ্র. : আশ-শী‘আতু ওয়াত তাশী‘, পৃ. ২৫৫-২৬৩; ফিরাকুন মু‘আছিরাহ, ২য় খণ্ড, পৃ. ৫৩৩-৫৯০।
[৭]. আবূ আব্দিল্লাহ ওবাইদুল্লাহ ইবনু বাত্তা, আশ-শারহু ওয়াল ইবানাহ আলা উছূলিস সুন্নাহ ওয়াদ দিয়ানাহ (মদীনা মুনাওয়ারাহ : মাকতাবাতুল ঊলূম ওয়াল হিকাম, ১ম সংস্করণ, ১৪২৩ হি./২০০২ খ্রি.), পৃ. ১৭৭।
[৮]. ইমাম কুরতুবী, আল-জামিঊ লি আহকামিল কুরআন (কায়রো : দারুল কুতুবিল মিছরিয়্যাহ, ২য় সংস্করণ, ১৩৮৪ হি./১৯৬৪ খ্রি.), ৭ম খণ্ড, পৃ. ১৪১।
[৯]. আবূ মানছূল আব্দুল কাহির ইবনু তাহির ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু আব্দুল্লাহ আল-বাগদাদী, আল-ফারকু বায়নাল ফিরাক্ব ওয়া বায়ানু ফিরক্বাতিন নাজিয়াহ (বৈরূত : দারুল আফাক্ব আল-জাদীদাহ, ২য় সংস্করণ, ১৯৭৭ খ্রি.), পৃ. ৩৫০।
[১০]. আবূ হামিদ মুহাম্মাদ ইবনু মুহাম্মাদ আল-গাযযালী আত-তূসী, ফাযাইহুল বাতিনিয়্যাহ (কুয়েত : মুওয়াসসাসাতু দারিল কুতুব আছ-ছাক্বাফিয়্যাহ, তা.বি.), পৃ. ১৫৭।
[১১]. ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ, মাজমূঊল ফাতাওয়া, ২৮শ খণ্ড, পৃ. ৪৭৪-৪৭৫।
[১২]. ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ, মাজমূঊল ফাতাওয়া, ৩৫শ খণ্ড, পৃ. ১৫৪।
প্রসঙ্গসমূহ »:
শিরক, বিদ‘আত ও কুসংস্কার