শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫৬ অপরাহ্ন
উত্তর : শায়খ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘এ ব্যাপারে আলেমদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। তবে সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য মতানুযায়ী শাওয়াল মাসের ছয়টি বা অন্যান্য সুন্নাত ছিয়ামের পূর্বে রামাযানের ক্বাযা আদায় করাটাই বিধিসম্মত। কারণ রাসূল (ﷺ) বলেছেন, مَنْ صَامَ رَمَضَانَ ثُمَّ أَتْبَعَهُ سِتًّا مِنْ شَوَّالٍ كَانَ كَصِيَامِ الدَّهْرِ  ‘যে ব্যক্তি রামাযান মাসের ছিয়াম পালন করল, অতঃপর তার পিছুপিছু শাওয়াল মাসে ছয়টি ছিয়াম পালন করল, সে যেন সারা বছরই ছিয়াম পালন করল (অর্থাৎ সে সারা বছর ছিয়াম পালনের ছাওয়াব অর্জন করল)’ (ছহীহ মুসলিম, হা/১১৬৪; আবূ দাঊদ, হা/২৪৩৩; তিরমিযী, হা/৭৫৯; ইবনু মাজাহ, হা/১৭১৬; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৩৫৩৩, ২৩৫৫৬, ২৩৫৬১)।

উক্ত হাদীছের আলোকে বুঝা যায়, যে ব্যক্তি রামাযানের ক্বাযা আদায়ের পূর্বেই শাওয়াল মাসের ছয়টি ছিয়াম পালন করল, সে কিন্তু সম্পূর্ণ রামাযানের অনুসারী হতে পারল না, বরং সে রামাযানের কিছু অংশের অনুসারী হয়েছে, অথচ হাদীছের মধ্যে বলা হয়েছে যে ব্যক্তি সম্পূর্ণ রামাযানের ছিয়াম পালনের পর শাওয়ালের ছয়টি ছিয়াম রাখবে, সে পুরো বছর ছিয়াম পালনের ছাওয়াব পাবে। এখানে কিন্তু শাওয়ালকে রামাযানের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। অন্য দিকে রামাযানের ক্বাযা আদায় করা ফরয, আর শাওয়াল ছয়টি ছিয়াম পালন মুস্তাহাব। সেক্ষেত্রে ফরয সর্বদা অগ্রাধিকার পাবে’ (মাজমূঊ ফাতাওয়া লিইবনি বায, ১৫/৩৯২ পৃ.)।

সঊদী আরবের স্থায়ী ফাতাওয়া কমিটি বলেন, ‘নফল ছিয়ামের পূর্বে ক্বাযা আদায় করাটাই সর্বাধিক উত্তম এবং নিরাপদ। এমনকি শাওয়াল মাসের ছয়টি ছিয়াম ছুটে গেলেও তার জন্য ফরয ছিয়ামের ক্বাযা আগে আদায় করাটা শরী‘আতসম্মত। কেননা রাসূল (ﷺ) এমনটিই বলেছেন (ছহীহ মুসলিম, হা/১১৬৪; আবূ দাঊদ, হা/২৪৩৩; তিরমিযী, হা/৭৫৯)।

হাদীসের মধ্যে বলা হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি রামাযান মাসের পূর্ণাঙ্গ ছিয়াম পালন করল’, সুতরাং যে ব্যক্তির ছিয়াম ক্বাযা আছে, সে উক্ত ক্বাযা আদায় না করা পর্যন্ত তার ক্ষেত্রে এ কথা বলা যায় না যে সে রামাযান মাসের ছিয়াম পালন করেছে। পক্ষান্তরে ব্যক্তির উপর ক্বাযা আদায় করা ওয়াজিব, সুতরাং তাকে আগে আদায় করাটাই সর্বাধিক উত্তম’ (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ৯/২৯৩-২৯৫ পৃ.)। কিন্তু কেউ যদি আগে শাওয়াল মাসের ছয়টি ছিয়াম রাখে, তার পর ক্বাযা আদায় করে সেক্ষেত্রে সে গুনাহগার হবে না এ কথা নিশ্চিত, তবে হাদীছে বর্ণিত ছাওয়াব অর্জিত হবে না। কেননা এর জন্য রামাযান মাসের ছিয়াম পূর্ণ করা শর্ত (ঐ, ৯/৩০৪-৩০৫ পৃ. ও ১০/৩৯২-৩৯২ পৃ.)।

শায়খ উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘যে মহিলার উপর রামাযানের ছিয়াম ক্বাযা আছে, সে যেন ক্বাযা আদায় করার আগেই শাওয়াল মাসের ছয়টি ছিয়াম পালন না করে। কারণ রাসূল (ﷺ) বলেছেন, যে ব্যক্তি রামাযান মাসের ছিয়াম পালন করল, অতঃপর তার পিছুপিছু শাওয়াল মাসে ছয়টি ছিয়াম পালন করল, সে যেন সারা বছরই ছিয়াম পালন করল (অর্থাৎ সে সারা বছর ছিয়াম পালনের ছাওয়াব অর্জন করল)’ (ছহীহ মুসলিম, হা/১১৬৪; আবূ দাঊদ, হা/২৪৩৩; তিরমিযী, হা/৭৫৯)। কোনো ব্যক্তির উপর ক্বাযা থাকা সত্ত্বেও যদি শাওয়াল মাসের ছয়টি ছিয়াম আগে রাখে, তাহলে কি বলা যাবে যে, সে রামাযানের পূর্ণাঙ্গ ছিয়াম পালন করেছে এবং তার পিছুপিছু শাওয়ালের ছয়টি ছিয়াম পালন করেছে? না, কারণ সে রামাযানের পূর্ণাঙ্গ ছিয়াম পালন করেনি, আর ক্বাযা আদায় না করা পর্যন্ত এ কথা বলাও যাবে না। সুতরাং প্রমাণিত হল যে, ক্বাযা আদায় না করে শাওয়াল মাসের ছিয়াম রাখলে হাদীছে বর্ণিত ছাওয়াবের অধিকারী হওয়া যাবে না। অতএব যার উপর ক্বাযা আছে সে কিন্তু রামাযান মাসের ছিয়াম পরিপূর্ণ করেনি। আর ক্বাযা আদায় না করা পর্যন্ত কিন্তু শাওয়ালের ছয়টি ছিয়ামের ছাওয়াব হাসিল হবে না। যদি ধরে নেয়া যায় যে, কোন একজন মহিলা ‘নিফাসের’ (প্রসব পরবর্তী রক্তপাতের) কারণে রামাযান মাসে একটিও ছিয়াম রাখতে পারেনি, এখন সে পুরো শাওয়াল মাসে রামাযানের ক্বাযা আদায় করছে। আর ক্বাযা আদায় করতে করতেই যুলকা‘দাহ মাস চলে এসেছে, এখন সে যদি ঐ ছয়টি ছিয়াম রাখে তবুও কিন্তু ছাওয়াব পাবে, কেননা এই বিলম্ব বিশেষ কারণে হয়েছে। এক্ষেত্রে সে নির্দোষ এবং ছাওয়াবের অধিকারী’ (মাজমূঊ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল লিইবনি উছাইমীন, ২০/১৯-২০ পৃ.)।

প্রশ্নকারী : ওমর ফারুক, সাতক্ষীরা।





প্রশ্ন (৩০) : জনৈক ব্যক্তি ভাড়া বাসায় থাকে। সেখানে একজন হিন্দু ও আরেকজন মুসলিম থাকে। মুসলিম নিয়মিত ছালাত আদায় করে না এবং দ্বীন সম্পর্কে কিছুটা জানলেও আমল করে না। এদের সাথে থাকা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১১) : পৃথিবীতে যা কিছু আছে আল্লাহর কাছে মাছির ডানা সমতুল্য নয়, তাহলে আল্লাহর  শাস্তি এত কঠোর কেন? মাথায় এমন প্রশ্ন আসলে কি ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৭) : কোন টাকা বা মূল্যবান বস্তু পাওয়া গেলে কী করা উচিত? অনেকেই বলেন, ফকীরকে বা মসজিদে দিয়ে দিতে। এটি কতটুকু সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৪) : ‘পীর-অলীদের মৃতদেহ মাটিতে খায় না বরং তা অক্ষত থাকে’-এরূপ আক্বীদা সঠিক কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৫) : দাঁত সাজানো কি জায়েয? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২১) : প্রচলিত আছে যে, মাগরিবের আযানের সময় শুয়ে থাকা যাবে না। এর কোন দলীল আছে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১০) : ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর ইসলাম গ্রহণের সঠিক ঘটনা কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৬) : যিলহজ্জের দশ তারিখের বিশেষ কোন বৈশিষ্ট্য আছে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৯) : প্রত্যেক রোগের ঔষধ আছে। এ কথা কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৯) : অনেকে বলে থাকেন, বর্তমান প্রচলিত ইসলামের ইতিহাসে অনেক ভুল আছে। তাহলে ইসলাম সম্পর্কে পড়াশুনা করে লাভ কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৮) : কবরস্থানের গাছের ফলমূল ও পাতা খাওয়া বা ব্যবহার করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৪) : মৃত্যুর কারণে কান্নাকাটি করার শারঈ বিধান কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ

ফেসবুক পেজ