উত্তর : শাফা‘আত বা সুপারিশ দুই প্রকারের। যথা : (১) খাছ বা নির্দিষ্ট : অর্থাৎ এমন শাফা‘আত, যা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর জন্য নির্দিষ্ট ও নির্ধারিত। এর অনেকগুলো স্তর বা প্রকার আছে। সব থেকে বড় ও সম্মানিত শাফা‘আত হল ‘মাক্বামে মাহমূদ’, আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে তা প্রদান করার অঙ্গীকার করেছেন। তিনি বলেন, وَ مِنَ الَّیۡلِ فَتَہَجَّدۡ بِہٖ نَافِلَۃً لَّکَ ٭ۖ عَسٰۤی اَنۡ یَّبۡعَثَکَ رَبُّکَ مَقَامًا مَّحۡمُوۡدًا ‘আর রাত্রির কিছু অংশে তাহাজ্জুদ পড়ুন, এটা আপনার জন্য এক অতিরিক্ত কর্তব্য। আশা করা যায় আপনার প্রতিপালক আপনাকে প্রতিষ্ঠিত করবেন প্রশংসিত স্থানে’ অর্থাৎ মাক্বামে মাহমূদে’ (সূরা বানী ইসরাঈল : ৭৯)। এটি এমন একটি শাফা‘আত, যার মাধ্যমে তিনি ক্বিয়ামতের দিন তাওহীদপন্থীদের ও ঈমানদারদের কষ্ট লঘুকরণার্থে বা দূরীকরণার্থে সুপারিশ করবেন।
(২) ‘আম বা অনির্দিষ্ট : অর্থাৎ এমন শাফা‘আত, যা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এবং সকল মুমিনদের জন্য সাধারণ। এরও অনেকগুলো প্রকার আছে। যথা : (ক) এমন মুমিন বা তাওহীদপন্থী ব্যক্তি, যে কোন পাপের কারণে জাহান্নামের অধিকারী হয়ে গেছে। জানাযার ছালাতের মাধ্যমে তার জন্য যদি এমন চল্লিশজন বা ততধিক মুমিন ব্যক্তি বা তাওহীদপন্থী ব্যক্তি সুপারিশ করেন, তাহলে তার পক্ষে তাদের সুপারিশ মঞ্জুর করা হয়। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন,
مَا مِنْ رَجُلٍ مُسْلِمٍ يَمُوْتُ فَيَقُوْمُ عَلَى جَنَازَتِهِ أَرْبَعُوْنَ رَجُلًا لَا يُشْرِكُوْنَ بِاللهِ شَيْئًا إِلَّا شَفَّعَهُمُ اللهُ فِيْهِ.
‘কোন মুসলিম ব্যক্তি মারা গেলে, তার জানাযার ছালাতে যদি এমন চল্লিশজন ব্যক্তি অংশগ্রহণ করে, যারা কখনো কোন কিছুকে আল্লাহর সাথে শরীক করেননি তবে মহান আল্লাহ তার অনুকূলে তাদের সুপারিশ কবুল করেন’। অন্য বর্ণনায় এসেছে, তিনি বলেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি, অন্তত চল্লিশজন মুমিন অপর মুমিন ব্যক্তির সুপারিশ করলে, আল্লাহ তাদের সুপারিশ কবুল করেন’ (ছহীহ মুসলিম, হা/৯৪৮, ২০৮৮)। অন্য হাদীছে একশ’ জনের কথা এসেছে (ছহীহ মুসলিম, হা/৯৪৭, ২০৮৭)।
(খ) ঈমানদার ও তাওহীদপন্থী জাহান্নামীদের জাহান্নাম থেকে মুক্তির জন্য সুপারিশ (ছহীহ বুখারী, হা/৭৪৩৯; ছহীহ মুসলিম, হা/১৮৩; নাসাঈ, হা/৫০১০; ইবনু মাজাহ, হা/৬০)। (গ) মুমিনদের পদমর্যাদা বৃদ্ধির জন্য সুপারিশ। আর এটি এক মুমিন অপর মুমিনদের জন্য করে থাকেন (ছহীহ মুসলিম, হা/৯২০; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৬৫৪৩)। অনুরূপভাবে জানাযার ছালাতে দু‘আ করা হয়ে থাকে (আল-ক্বাউলুল মুফীদ ‘আলা কিতাবিত তাওহীদ, ১/৩৩১ পৃ.; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-১১৯৩১)।
প্রশ্নকারী : আব্দুর রহমান, রাজশাহী।