উত্তর : ক্রুশযুক্ত পোশাক পরিধান করা হারাম (আল-ইনসাফ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩৩৪; কাশফুল কুনা, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৮০)। আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ كَانَ لَا يَتْرُكُ فِيْ بَيْتِهِ شَيْئًا فِيْهِ تَصْلِيْبٌ إِلَّا قَضَبَهُ ‘রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর ঘরে ক্রুশ চিহ্নযুক্ত কোন জিনিসই অবশিষ্ট রাখতেন না, বরং তিনি সেগুলোকে ছিঁড়ে বা ভেঙ্গে ফেলতেন’ (ছহীহ বুখারী, হা/৫৯৫২; আবূ দাঊদ, হা/৪১৫১)। অন্যত্র আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, لَمْ يَكُنْ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ يَدَعُ فِيْ بَيْتِهِ ثَوْبًا فِيْهِ تَصْلِيْبٌ إِلَّا نَقَضَهُ ‘রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর ঘরে ক্রুশ চিহ্নযুক্ত কোন কাপড়ই রাখতেন না, বরং তিনি সেগুলোকে ছিঁড়ে ফেলতেন’ (মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪২৬১, ২৫৯৯৬, ২৬১৪২, সনদ ছহীহ)।
ইমাম ইবনু হায্ম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘পোশাক-প্রসাধনী, অলংকার, সাজ-সজ্জার উপকরণ, সুশোভিতকরণ বা অন্যান্য কোন কিছুতেই ক্রুশ/ক্রসচিহ্ন অবশিষ্ট রাখা বৈধ নয়’ (আল-মুহাল্লা, ৭ম খণ্ড, পৃ. ৫১৬)। শায়খ বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘ছবিযুক্ত পোশাক ও অলংকার পরিধান করা জায়েয নয়। অনুরূপভাবে ক্রুশযুক্ত পোশাকও পরিধান করা নাজায়েয। কেননা এর মধ্যে খ্রিষ্টানদের সাদৃশ্য রয়েছে’ (ইবনু বায, ফাতাওয়া নূরুন ‘আলাদ দারব, ৭ম খণ্ড, পৃ. ২৮৮)। শায়খ ছালেহ আল-উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘ছালাতের মধ্যে ও বাইরে উভয় অবস্থাতেই ক্রুশযুক্ত পোশাক পরিধান করা হারাম’ (শারহু রিয়াযিছ ছালেহীন, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ৩০০)।
দ্বিতীয়তঃ বর্তমানে এই ধরনের খ্রিষ্টান মিশনারী স্কুল-কলেজে পড়াশোনা করে লক্ষ লক্ষ মুসলিম তরুণ-তরুণী ঈমানহারা ও নাস্তিকে পরিণত হচ্ছে। তাই পিতা-মাতাদের উচিত সন্তানদের ভালো ইসলামী প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নের ব্যবস্থা করে দেয়া। যেখানে ঈমান ও দ্বীনের ক্ষতি হবে, এমন কোন বিধর্মী ও অইসলামী প্রতিষ্ঠানে ভর্তি না করা (ইসলাম ওয়েব, ফৎওয়া নং-১০৬৮১)। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
مَا مِنْ مَوْلُوْدٍ إِلَّا يُوْلَدُ عَلَى الْفِطْرَةِ فَأَبَوَاهُ يُهَوِّدَانِهِ وَيُنَصِّرَانِهِ أَوْ يُمَجِّسَانِهِ
‘প্রত্যেক নবজাতকই ইসলামী ফিতরাতের (অর্থাৎ তাওহীদের) উপর জন্মগ্রহণ করে। অতঃপর তার পিতা-মাতা তাকে ইয়াহুদী, খ্রিষ্টান অথবা অগ্নিপূজারী রূপে গড়ে তোলে’ (ছহীহ বুখারী হা/১৩৫৮-১৩৫৯, ১৪৮৫, ৪৭৭৫, ৬৫৯৯)।
শায়খ ছালেহ আল-মুনাজ্জিদ (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন, ‘এমন প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান যেখানে সন্তান ধর্মত্যাগী ও ঈমানহারা হতে পারে, সেখান থেকে সন্তান-সন্ততিদের বিরত রাখা প্রত্যেক পিতা-মাতার উপর অপরিহার্য কর্তব্য। কেননা ঈমান সবকিছুরই উপরে। সুশিক্ষার নামে ঈমান বিসর্জন দেয়া কোন অবস্থাতেই জায়েয নয়’ (ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফাতাওয়া নং-১৪৫৩৫২)।
প্রশ্নকারী : আব্দুন নূর, শেরপুর, ময়মনসিংহ।