বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০৪:০৭ পূর্বাহ্ন

সূদ-ঘুষ ও অবৈধ ব্যবসা

-ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর*


(৮ম কিস্তি)

(খ) পরিপক্ক হওয়ার পূর্বে ফল বিক্রি করা

পরিপক্ক হওয়ার আগে কোন গাছের ফল বিক্রি করা ইসলামে নিষিদ্ধ। ফল খাওয়ার উপযুক্ত হলে তা পাড়া বা মাড়ায় করতে হবে। কেননা খাওয়ার উপযুক্ত হওয়ার আগে তা পাড়া বা মাড়ায় করার মাধ্যমে ক্রেতা-বিক্রেতা অথবা ভোক্তা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ প্রসঙ্গে হাদীছে এসেছে, ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত,

أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَهَى عَنْ بَيْعِ النَّخْلِ حَتَّى يَزْهُوَ وَعَنِ السُّنْبُلِ حَتَّى يَبْيَضَّ.

‘রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লাল বা হলুদ বর্ণ হওয়া পর্যন্ত খেজুর বিক্রি করতে এবং শীষ জাতীয় বস্তু (পাকার পূর্বে) ক্রয়-বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন’।[১] ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

لَا تَبْتَاعُوا الثَّمَرَ حَتَّى يَبْدُوَ صَلَاحُهُ وَتَذْهَبَ عَنْهُ الْآفَةُ قَالَ يَبْدُوَ صَلَاحُهُ حُمْرَتُهُ وَصُفْرَتُهُ.

‘পরিপক্ক হওয়ার আগে ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ কেটে যাওয়ার পূর্বে তোমরা ফল ক্রয় কর না। বর্ণনাকারী বলেন, খাওয়ার যোগ্য হওয়ার অর্থ লাল বর্ণ ও হলদে বর্ণ ধারণ করা’।[২]

عَنْ أَبِى الْبَخْتَرِىِّ قَالَ سَأَلْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا عَنْ بَيْعِ النَّخْلِ فَقَالَ نَهَى رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ بَيْعِ النَّخْلِ حَتَّى يَأْكُلَ مِنْهُ أَوْ يُؤْكَلَ وَحَتَّى يُوْزَنَ قَالَ فَقُلْتُ مَا يُوْزَنُ فَقَالَ رَجُلٌ عِنْدَهُ حَتَّى يَحْزَرَ.

আবুল বুখতারী (রাহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা)-এর নিকট গাছে থাকা খেজুর বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলাম। তখন তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গাছের খেজুর বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন যতক্ষণ না তা খাওয়া যায় বা খাওয়ার যোগ্য হয় এবং ওজন করা যায়। রাবী বলেন, আমি ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা)-কে জিজ্ঞেস করলাম কিভাবে ওজন করবে? তখন তার পাশেই অবস্থানকারী জনৈক ব্যক্তি উত্তর দিল- পরিমাপ করবে।[৩]

গাছের ফল পরিপক্ক না হলে ক্রয়-বিক্রয় বৈধ নয়। খেজুর বা ফল হলে লাল বর্ণ অথবা হলুদ বর্ণ ধারণ করলে তখন ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে। আর শীষ জাতীয় বস্তুর ক্ষেত্রে পুরোপুরি পেকে গেলে ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে। অন্যথা এরূপ ব্যবসা হারামের অন্তর্ভুক্ত হবে। আবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ কেটে যাওয়ার পূর্বেও ফল ক্রয় করা নিষেধ। অর্থাৎ এমন পরিপক্ক অবস্থায় গাছের ফল কিনবে যেন তা পেড়ে লাভবান হতে পারে। কেনার পর বেশীদিন অপেক্ষা করতে হলে যে কোন দুর্যোগে তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ফলশ্রুতিতে ক্রেতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অনুরূপ আরো বর্ণিত হয়েছে-

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا  أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَهَى عَنْ بَيْعِ الثِّمَارِ حَتَّى يَبْدُوَ صَلَاحُهَا نَهَى الْبَائِعَ وَالْمُشْتَرِىَ.

ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গাছের ফল (খাওয়ার) উপযোগী হওয়ার পূর্বে ক্রয়-বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন। তিনি বিক্রেতা এবং ক্রেতা উভয়কেই নিষেধ করেছেন।[৪] অন্যত্র এসেছে-

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَهَى عَنْ بَيْعِ الثِّمَارِ حَتَّى تُزْهِيَ فَقِيْلَ لَهُ وَمَا تُزْهِيْ قَالَ حَتَّى تَحْمَرَّ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَرَأَيْتَ إِذَا مَنَعَ اللهُ الثَّمَرَةَ بِمَ يَأْخُذُ أَحَدُكُمْ مَالَ أَخِيْهِ.

আনাস ইবনু মালিক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রং ধারণ করার আগে ফল বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। জিজ্ঞেস করা হল, রং ধারণ করার অর্থ কী? তিনি বললেন, লাল বর্ণ ধারণ করা। পরে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, দেখ যদি আল্লাহ তা‘আলা ফল ধরা বন্ধ করে দেন, তবে তোমাদের কেউ (বিক্রেতা) কিসের বদলে তার ভাইয়ের মাল (ফলের মূল্য) নিবে।[৫]

অতএব ফল পেকে গেলে তথা খাওয়ার উপযোগী হলে কেনাবেচা করতে হবে। গাছের ফলের রং ধারণের পূর্বে তা বিক্রয় বা ক্রয় করা নিষেধ। রং ধরার অর্থ হল লাল বা হলুদ হওয়া এক কথায় পাকাপোক্ত হওয়া। আর এই নির্দেশ ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের জন্যই। পরিপক্ক হওয়ার আগে যেমন কেনা যাবে না, তেমনি বেচাও যাবে না। আর ফল আসার পূর্বে কেনার তো কোন সুযোগই নেই।

(গ) অগ্রিম কয়েক বছরের জন্য বাগান বিক্রয় করা

কয়েক বছরের জন্য অগ্রিম বাগান বা ফল গাছ বিক্রয় করা শরী‘আতের দৃষ্টিতে হারাম। যে কোন ধরনের ফলবান গাছ বা বাগানের অন্তর্ভুক্ত। অথচ আমাদের দেশে বহু মুসলিম আম বাগান বা লিচু বাগান কয়েক বছরের জন্য অগ্রিম বিক্রি করে থাকে। যা সঠিক নয়। জাবির ইবনু আব্দুল্লাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত,

أَنَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَهَى عَنْ بَيْعِ السِّنِيْنَ وَوَضَعَ الْجَوَائِحَ.

‘নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘কোন গাছের বা কোন বাগানের ফল কয়েক বছরের জন্য অগ্রিম ক্রয়-বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন এবং ক্ষতিপূরণের জন্য মূল্য কর্তনের ব্যবস্থা রেখেছেন’।[৬] অপর এক বর্ণনায় রয়েছে, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘মুয়াওমাহ তথা কয়েক বছরের জন্য (ফল) বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন’।[৭] আবার রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একথাও বলেছেন, ‘দেখ যদি আল্লাহ তা‘আলা ফল ধরা বন্ধ করে দেন, তবে তোমাদের কেউ (বিক্রেতা) কিসের বদলে তার ভাইয়ের মাল (ফলের মূল্য) নিবে’।[৮]

ফলের গাছ বা বাগান একাধিক বছরের জন্য ক্রয়-বিক্রয় করা শরী‘আতে নিষেধ। এরূপ কেনাবেচা হারাম। উদাহরণস্বরূপ কেউ তিন বছরের জন্য কারো আম বা লিচু বাগাম কিনল। কিন্তু আল্লাহ ফল ধরা বন্ধ করে দিলেন, তখন কিসের ভিত্তিতে ক্রেতার টাকা বিক্রেতা ভোগ করবে। আরো পরিষ্কার করে বলা যায়, কেউ একটা আম বাগাম তিন বছরের জন্য এক লক্ষ টাকায় কিনল। কিন্তু দেখা গেল তিন বছরে সে দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাযার টাকার আম বিক্রয় করল। তখন সে অধিক লাভবান হওয়ার জন্য খুবই খুশি হবে। পক্ষান্তরে বাগানের মালিক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বেজার হবে। স্বীয় নির্বুদ্ধিতার দরুন নিজেকে দোষারূপ করতে থাকবে। আবার কোন কারণে আম হল না বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে নষ্ট হয়ে গেল। ফলে তিন বছরে সে আশি হাযার বা এক লক্ষ টাকার আম বিক্রি করল। তখন সে ক্ষতিগ্রস্ত হল আর বিক্রেতা লাভবান হল। তাই কেউ প্রচুর পরিমাণ লাভ করে আনন্দ করবে, আর প্রতিপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বেদনার আগুনে জ্বলবে এই বিধান ইসলামে রাখা হয়নি। ইসলামের নীতিতে ব্যবসা করলে লাভ-ক্ষতি হবে। তবে তা সামঞ্জস্যপূর্ণ ভাবে হবে।

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَدِمَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمَدِيْنَةَ وَهُمْ يُسْلِفُوْنَ بِالتَّمْرِ السَّنَتَيْنِ وَالثَّلَاثَ فَقَالَ مَنْ أَسْلَفَ فِىْ شَىْءٍ فَفِى كَيْلٍ مَعْلُوْمٍ وَوَزْنٍ مَعْلُوْمٍ إِلَى أَجَلٍ مَعْلُوْمٍ

ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মদীনায় আসেন তখন মদীনাবাসী দু’ বা তিন বছর মেয়াদে খেজুর আগাম ক্রয়-বিক্রয় করত। তিনি বললেন, কেউ অগ্রিম খেজুর ক্রয়-বিক্রয় করতে চাইলে সে যেন ওজন, পরিমাপ ও মেয়াদ নির্দিষ্ট করে অগ্রিম ক্রয় বিক্রয় করে’।[৯] অগ্রিম ফল বেচতে চাইলে কত মণ, কত টাকায় এবং কত দিনের জন্য তা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। তখন অগ্রিম কেনাবেচা বৈধ হবে।

(ঘ) বাগান বিক্রির পর ক্রেতা ক্ষতিগ্রস্ত হলে ছাড় না দেয়া

ফলের বাগান বিক্রি করার পর ক্রেতা যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে তাকে ছাড় দেয়া উচিত। ছাড় না দেয়া এক প্রকার অবিচার। বিক্রেতা ক্রেতাকে ইনছাফপূর্ণভাবে ছাড় দিবে। জাবির ইবনু আব্দুল্লাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত। নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

مَنْ بَاعَ ثَمَرًا فَأَصَابَتْهُ جَائِحَةٌ فَلَا يَأْخُذْ مِنْ مَالِ أَخِيْهِ شَيْئًا عَلَامَ يَأْخُذُ أَحَدُكُمْ مَالَ أَخِيْهِ الْمُسْلِمِ

‘কোন ব্যক্তি ফলের বাগান বিক্রয় করার পর প্রাকৃতিক দুর্যোগে তা বিনষ্ট হলে, সে যেন তার ভাই (ক্রেতা) থেকে কিছু গ্রহণ না করে। তোমাদের কেউ কিসের বিনিময়ে তার মুসলিম ভাইয়ের মাল গ্রহণ করবে’।[১০]

(ঙ) অধিকারে আসার পূর্বে পণ্য বিক্রয় করা

কোন জিনিস অধিকার আসার পূর্বেই বিক্রয় করা ইসলামে নিষিদ্ধ। ক্রয়-বিক্রয় হবে স্বীয় মালীকানাধীন হওয়ার পর। তার অধিকারেই আসেনি, তাহলে কিসের ভিত্তিতে বিক্রয় করবে? এগুলো জাহেলী যুগের ব্যবসা-বাণিজ্য। কতদিন পর অধিকারে আসবে তার হিসাব নেই, অথচ বিক্রি করে দিয়েছে। এরূপ ব্যবসা ইসলাম স্বীকৃত নয়।

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا يَقُوْلُ أَمَّا الَّذِيْ نَهَى عَنْهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَهُوَ الطَّعَامُ أَنْ يُبَاعَ حَتَّى يُقْبَضَ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ وَلَا أَحْسِبُ كُلَّ شَيْءٍ إِلَّا مِثْلَهُ

ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা নিষেধ করেছেন, তা হল অধিকারে আনার পূর্বে খাদ্য বিক্রয় করা। ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, আমি মনে করি, প্রত্যেক পণ্যের ব্যাপারে অনুরূপ নির্দেশ প্রযোজ্য হবে।[১১] রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

لَا يَحِلُّ بَيْعُ مَا لَيْسَ عِنْدَكَ وَلَا رِبْحُ مَا لَمْ يُضْمَنْ

‘যে জিনিস তোমার নিকট বিদ্যমান নেই, তা বিক্রয় করা হালাল নয়। আর লোকসানের ঝুঁকি গ্রহণ না করা পর্যন্ত মুনাফা/লাভ গ্রহণ করা হালাল নয়’।[১২]

একদা রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একজন ছাহাবীকে মক্কায় পাঠানোর সময় নিষেধ করেছিলেন, نَهَاهُ عَنْ شِفِّ مَا لَمْ يُضْمَنْ ‘লোকসানের ঝুঁকি বহন না করা পর্যন্ত মুনাফ গ্রহণ করবে না’।[১৩] অন্য বর্ণনায় আছে- حَرَامٌ شِفُّ مَا لَمْ يُضْمَنْ ‘লোকসানের ঝুঁকি না নেয়া পর্যন্ত মুনাফ গ্রহণ করা হারাম’।[১৪]

এখানে দু’টি বিষয় ফুটে উঠেছে- প্রথমতঃ পণ্য স্বীয় অধিকার পরিপূর্ণরূপে আসার পূর্বে বিক্রয় করা হারাম। দ্বিতীয়তঃ লোকসানের ঝুঁকি না নেয়া পর্যন্ত ব্যবসায়িক মুনাফা বৈধ নয়। সে কোন ব্যবসা এককী বা শিয়ারে করবে, অথচ লোকসানের ঝুঁকি কাঁধে বয়বে না, এরূপ ব্যবসা শরী‘আতসম্মত নয়। প্রত্যেক ব্যবসাই লাভ-লোকসানের ঝুঁকি থাকবে। ঠিক সূদ কারবারীরা লোকসানের কোন ঝুঁকি নিতে চায় না। স্রেফ শ্রম বিহীন মুনাফা কোষতে চাই। এ কারণেও সূদপ্রথা ইসলামে হারাম। শেয়ারের ব্যবসায় উভয় পক্ষকেই লোকসানের ঝুঁকি শেয়ার অনুপাতে বহন করতে হবে।

(চ) ধোঁকা-প্রতারণামূলক ব্যবসা করা

ব্যবসায় ধোঁকাবাজি বা প্রতারণার আশ্রয় নেয়াও ইসলামে নিষিদ্ধ। ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে কোন প্রকার ছলচাতুরী করা যাবে না। পরিপূর্ণ স্বচ্ছতার সাথে ব্যবসা পরিচালনা করা একজন প্রকৃত মুমিনের পরিচয়।

عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ مَرَّ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِرَجُلٍ يَبِيْعُ طَعَامًا فَأَدْخَلَ يَدَهُ فِيْهِ فَإِذَا هُوَ مَغْشُوْشٌ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْسَ مِنَّا مَنْ غَشَّ

আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ব্যক্তির পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন, তখন সে খাদ্য শস্য বিক্রয় করছিল। তিনি খাদ্যশস্যের স্তূপের মধ্যে তাঁর হাত ঢুকালেন এবং ভিজা অনুভব করলেন। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, যে ব্যক্তি ধোঁকা দেয় সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।[১৫] আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন,

نَهَى رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ بَيْعِ الْحَصَاةِ وَعَنْ بَيْعِ الْغَرَرِ

‘রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কেনা বেচার ক্ষেত্রে পাথর নিক্ষেপ প্রথা আর প্রতারণামূলক যাবতীয় ব্যবসা নিষেধ করেছেন’।[১৬]

সুধী পাঠক! রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ব্যবসায়িক নীতি সূক্ষ্মতা ও বাস্তবতার নিরিখে নির্ণয় করেছেন। এক ব্যক্তি তার স্তূপকৃত মালে, উপরে শুকনো আর ভিতরে কিছুটা ভিজাগুলো রেখেছিল। নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্তূপের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে ভেজা পরীক্ষাকরতঃ নিষেধ করে দিলেন এবং বললেন, এটা ব্যবসার ক্ষেত্রে ধোঁকা বা প্রতারণার শামিল। আর এরূপ ধোঁকাবাজ ব্যবসায়ীকে তিনি স্বীয় উম্মাত হিসাবে গণ্য করেননি। বর্তমানে প্রায় প্রতিটা ব্যবসায়ীই ভালোগুলো উপরে, আর অপেক্ষাকৃত মন্দগুলো ভিতরে দিয়ে পসরা সাজায়। ইসলামের দৃষ্টিতে এই নীতি কতটা জঘন্য তা উক্ত হাদীছদ্বয় থেকে সহজেয় অনুমেয়। আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,

مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا وَالْمَكْرُ وَالْخِدَاعُ فِي النَّارِ

‘যে ব্যক্তি আমাদেরকে ধোঁকা দেয় সে আমাদের দলভুক্ত নয়। ধোঁকাবাজ ও চালবাজ জাহান্নামে যাবে’।[১৭] তাই ব্যবসার ক্ষেত্রে ধোঁকা-প্রতারণা বর্জন করা আবশ্যক।

(ছ) নগদে একদাম আর বাকীতে আরেক দামে বিক্রি করা

কোন জিনিসের নগদে এক দাম আর বাকীতে আরেক দাম প্রক্রিয়াকে ইসলাম সমর্থন করে না। যদিও আলেমদের মধ্যে এ বিষয়ে মতভেদ রয়েছে। এরূপ ব্যবসার মধ্যে সূক্ষ্মভাবে সূদের অনুপ্রবেশ ঘটে থাকে। বাহ্যিকভাবে এমন ব্যবসা ভালো মনে হতে পারে। শরী‘আতের দলীলগুলো বিশ্লেষণ করলে বুঝা যায় এরূপ ব্যবসা পরিহার করাই কল্যাণকর।

عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ نَهَى رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ بَيْعَتَيْنِ فِىْ بَيْعَةٍ

আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) কর্তৃক বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একই বিক্রয়ের মধ্যে দু’টি বিক্রয় সাব্যস্ত করাকে নিষেধ করেছেন’।[১৮]

عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ بَاعَ بَيْعَتَيْنِ فِىْ بَيْعَةٍ فَلَهُ أَوْكَسُهُمَا أَوِ الرِّبَا

আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) কর্তৃক বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি একই দ্রব্য বিক্রয়ে দু’রকম নিয়ম রাখে তাকে দু’মূল্যের মধ্যে অপেক্ষাকৃত কম মূল্যই গ্রহণ করতে হবে, নতুবা তা সূদ বলে গণ্য’।[১৯]

عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يَحِلُّ سَلَفٌ وَبَيْعٌ وَلَا شَرْطَانِ فِىْ بَيْعٍ وَلَا رِبْحُ مَا لَمْ تَضْمَنْ وَلَا بَيْعُ مَا لَيْسَ عِنْدَكَ

আমর বিন শু‘আইব (রাযিয়াল্লাহু আনহু) সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘সালাফ[২০] (বিক্রয়ের সাথে ঋণের শর্ত যোগ করা) ও বিক্রয় করা, একই লেনদেনে দু’রকম শর্ত নির্ধারণ করা, যিম্মাদারী ব্যতীত কোন বস্তু থেকে মুনাফা গ্রহণ করা এবং যা তোমার দখলে নেই তা বিক্রি করা জায়েয নয়’।[২১]

ইসলামের দৃষ্টিতে একই দ্রব্যে দু’রকম বিক্রি প্রযোজ্য নয়। একই লেনদেনে দু’রকম শর্তারোপ করা শরী‘আতসম্মত নয়। যদি এ রকম কেউ করে তাহলে অপেক্ষাকৃত কমমূল্য ধরে তা পরিশোধ করতে হবে। এরূপ বিক্রি বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে চালু আছে। নগদে পণ্য কিনলে এক রকম দাম, আর বাকীতে ঐ পণ্য কিনলে আরেক দাম। যেমন কেউ একটি ফ্রিজ নগদে কিনলে ৩০ হাজার টাকা আর বাকীতে নিলে ৩৩ হাজার টাকা। চাই সেটি কিস্তিতে হোক অথবা একবারে হোক। উভয় পক্রিয়াই ইসলাম বর্হিভূত। কেননা এরূপ লেনদেনের মধ্যে সূদের চোরাই পথ বিদ্যমান। ভোক্তা কিস্তিতে সুবিধামত ঋণ পরিশোধ করতে পারছে এরূপ খোঁড়া যুক্তি দেখিয়ে তা বৈধ করা উচিত নয়। বরং সরাসরি নছ তথা কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহর পরিপন্থী লেনদেন। তা পরিহার করাই শরী‘আতের অনূকূলে। এরূপ ব্যবসার নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি অধিক সুস্পষ্ট। প্রথম পর্যায়ের সালাফগণ এরূপ ব্যবসাকে বৈধ বলেননি। স্বয়ং রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরূপ ব্যবসা নিষেধ করেছেন। তাঁর হাতে গড়া প্রশিক্ষিত ছাহাবীগণও এমন ব্যবসার বিরোধিতা করেছেন। উদাহরণত-

عَنْ اِبْن عَبَّاس رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا  أَنَّهُ قَالَ إِذَا اسْتَقَمْت بِنَقْدٍ فَبِعْت بِنَقْدٍ فَلَا بَأْسَ وَإِذَا اِسْتَقَمْتَ بِنَقْدٍ فَبِعْت بِنَسِيئَةٍ فَلَا إنَّمَا ذَلِكَ وَوَرِق بِوَرِقٍ

আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, ‘যখন তুমি নগদে একদাম নির্ধারণ করবে এবং নগদে এক দামে বিক্রি করবে, তাতে কোন দোষ নেই। আর যখন তুমি নগদে এক দাম ও বাকীতে আরেক দাম নির্ধারণ করবে, সেটা হবে না। (অপর বর্ণনায় রয়েছে- فَلَا خَيْر فِيْهِ ‘তার মধ্যে কোন কল্যাণ নেই’) কেননা ওটা রৌপ্যের বিনিময়ে রৌপ্য বিক্রয় মাত্র’।[২২]

عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا  قَالَ صَفْقَتَانِ فِيْ صَفْقَةٍ رِبًا إِلَّا أَنْ يَقُوْلَ الرَّجُلُ إِنْ كَانَ بِنَقْدٍ فَبِكَذَا وَإِنْ كَانَ بِنَسِيْئَةٍ فَبِكَذَا

আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, ‘এক ব্যবসায়ের মধ্যে দুই বিক্রি হল সূদ। আর তা হল, বিক্রেতা বলবে, নগদে এত টাকা এবং বাকীতে এত টাকা।[২৩]

عَنْ أَبِى الْمِنْهَالِ أَنَّ زَيْدَ بْنَ أَرْقَمَ وَالْبَرَاءَ بْنَ عَازِبٍ كَانَا شَرِيْكَيْنِ فَاشْتَرَيَا فِضَّةً بِنَقْدٍ وَنَسِيئَةٍ فَبَلَغَ ذَلِكَ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَمَرَهُمَا أَنَّ مَا كَانَ بِنَقْدٍ فَأَجِيْزُوْهُ وَمَا كَانَ بِنَسِيْئَةٍ فَرُدُّوْهُ

আবুল মিনহাল (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘যায়েদ বিন আরক্বাম ও বারা বিন আযেব (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) দু’জন একটি ব্যবসায়ে শরীক ছিলেন। তাঁরা রূপা কিনলেন নগদে ও বাকীতে। এ খবর রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট পৌঁছলে তিনি তাদেরকে নির্দেশ দেন যে, যেটা নগদে, ওটা বহাল রাখ এবং যেটা বাকীতে ওটা বাতিল কর’।[২৪] এ প্রসঙ্গে ইমাম ইবনু তায়মিয়াহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

إذَا قَالَ هَذَا يُسَاوِي السَّاعَةَ كَذَا وَكَذَا وَأَنَا أَبِيْعُكَهُ بِكَذَا أَكْثَرُ مِنْهُ إلَى أَجَلٍ فَهَذَا رِبًا كَمَا قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا

‘যখন কেউ বলে, এই মালটি এখন এত দরে বিক্রি হবে। তবে আমি তোমার নিকট এ মাল বাকীতে বিক্রি করব অধিক দামে, তাহলে এটি হবে রিবা বা সূদ। যেমন ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেছেন’।[২৫]

পক্ষে-বিপক্ষে আলেমদের মত থাকলেও এরূপ ব্যবসা পরিহার করায় সুন্নাতের অনূকূলে। কেননা হাদীছের দৃষ্টিতে সূদ ও সূদের নিকটবর্তী হওয়ার সন্দেহ সৃষ্টি করে এরূপ নীতিও বর্জনীয়। আর নগদে ও বাকীতে লেনদেনে দু’ধরনের দাম হওয়ায় এটি সূদের অধিকতর নিকটতম একটি ব্যবসায়িক পদ্ধতি। বাকীতে বিক্রির ফলে টাকা পড়ে থাকে তাই ব্যবসায়ীর অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়। যার দরুন সে বেশি নিতে পারবে। এসব যুক্তি দেখিয়ে ইসলাম বহির্ভূত পন্থা মুসলিম সমাজে চালু করা অনুচিত। কারণ ইসলাম যুক্তি নির্ভর নয় বরং ইসলাম দলীলের উপর নির্ভরশীল।[২৬] তাই এ ধরনের সন্দেযুক্ত ব্যবসা পরিহার করায় ইসলামের দৃষ্টিতে শ্রেয়।

(চলবে ইনশাআল্লাহ)

* শিক্ষক, আল-জামি‘আহ আস-সালাফিয়্যাহ, ডাঙ্গীপাড়া, রাজশাহী।

তথ্যসূত্র :
[১]. ছহীহ মুসলিম, হা/১৫৩৫; আবূ দাঊদ, হা/৩৩৬৮; তিরমিযী, হা/১২২৬; মিশকাত, হা/২৮৩৯।  
[২]. ছহীহ মুসলিম, হা/১৫৩৪; বায়হাক্বী, হা/১০৩৬৮।  
[৩]. ছহীহ বুখারী, হা/২২৫০; ছহীহ মুসলিম, হা/১৫৩৭।  
[৪]. ছহীহ বুখারী, হা/২১৯৪; আবূ দাঊদ, হা/৩৩৬৭।  
[৫]. ছহীহ বুখারী, হা/২১৯৮; মিশকাত, হা/২৮৪০।  
[৬]. আবূ দাঊদ, হা/৩৩৭৪; নাসাঈ, হা/৪৬২৭; ইবনু মাজাহ, হা/২২১৮; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৪৩৫৯, সনদ ছহীহ ।  
[৭]. ছহীহ মুসলিম, হা/১৫৩৬; আবূ দাঊদ, হা/৩৩৭৫।  
[৮]. ছহীহ বুখারী, হা/২১৯৮; মিশকাত, হা/২৮৪০।  
[৯]. ছহীহ বুখারী, হা/২২৪০; ছহীহ মুসলিম, হা/১৬০৪; মিশকাত, হা/২৮৮৩।  
[১০]. আবূ দাঊদ, হা/৩৪৭০; নাসাঈ, হা/৪৫২৮; ইবনু মাজাহ, হা/২২১৯, সনদ ছহীহ ।  
[১১]. ছহীহ বুখারী, হা/২১৩৫; মিশকাত, হা/২৮৪৬।  
[১২]. ইবনু মাজাহ, হা/২১৮৮; আবূ দাঊদ, হা/৩৫০৪; তিরমিযী, হা/১২৩৪; নাসাঈ, হা/৪৬১১; মিশকাত, হা/২৮৭০, সনদ হাসান ছহীহ।  
[১৩]. ইবনু মাজাহ, হা/২১৮৯, সনদ ছহীহ।  
[১৪]. বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা, হা/১১১৯৭; ছহীহুল জামে‘, হা/৩১৩২, সনদ হাসান।  
[১৫]. ছহীহ মুসলিম, হা/১০২।  
[১৬]. ছহীহ মুসলিম, হা/১৫১৩; আবূ দাঊদ, হা/৩৩৭৬; তিরমিযী, হা/১২৩০; মিশকাত, হা/২৮৫৪।  
[১৭]. ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৫৬৭, ৫৫৫৯; সিলসিলা ছহীহাহ, হা/১০৫৮; সনদ ছহীহ   
[১৮]. তিরমিযী, হা/১২৩১; নাসাঈ, হা/৪৬৩২; মুয়াত্তা মালেক, হা/২৪৪৪; মিশকাত, হা/২৮৬৮, সনদ ছহীহ।  
[১৯]. আবূ দাঊদ, হা/৩৪৬১; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/২২৯২; ছহীহুল জামে‘, হা/৬১১৬; মিশকাত, হা/৩৭৪৬, সনদ ছহীহ।  
[২০]. সালাফ ও বিক্রয় অর্থ : ক্রেতা বিক্রেতাকে ঋণ হিসাবে অর্থ দিবে এই শর্তে যে, তার নিকটে বিক্রেতা পণ্যের মূল্য কম নিবে।  
[২১]. আবূ দাঊদ, হা/৩৫০৪; তিরমিযী, হা/১২৩৪; মিশকাত, হা/২৮৭০, সনদ হাসান।  
[২২]. মুছান্নাফ আব্দুর রাযযাক, হা/১৫০২৮; তাহযীবুস সুনানী আবী দাঊদ, ২য় খণ্ড, পৃ. ১৫৩।  
[২৩]. মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ, হা/২০৮২৭; সিলসিলা ছহীহাহ, হা/২৩২৬, সনদ ছহীহ।  
[২৪]. মুসনাদে আহমাদ, হা/১৯৩২৬, সনদ ছহীহ; ছহীহ বুখারী হা/৩৯৩৯।  
[২৫]. ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূঊল ফাতাওয়া, ২৯তম খণ্ড. পৃ. ৩০৬-৩০৭।  
[২৬]. ছহীহ বুখারী, হা/১৫৯৭; ছহীহ মুসলিম, হা/১২১৭; মিশকাত, হা/২৫৮৯।  




বিদ‘আত পরিচিতি (১০ম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
তাওহীদ প্রতিষ্ঠার উপায় (৫ম কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
বিদ‘আত পরিচিতি - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
মীলাদুন্নবী ও আমাদের অবস্থান - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
তওবার গুরুত্ব ও ফযীলত - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
ইসলামী উত্তরাধিকার আইন: উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ ধারা - ড. মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ
ইয়ামানের কুখ্যাত জঙ্গীগোষ্ঠী হুতী শী‘আদের মুখোশ উন্মোচন - শায়খ আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানী
ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) ১১ রাক‘আতের নির্দেশ দিয়েছিলেন (শেষ কিস্তি) - ব্রাদার রাহুল হোসেন (রুহুল আমিন)
ইসলামী পুনর্জাগরণের প্রতিবন্ধকতা ও তার সমাধান (৪র্থ কিস্তি) - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
বিদ‘আত পরিচিতি (৩০তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
বিদ‘আত পরিচিতি (৩২তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
ইসলামী পুনর্জাগরণের মূলনীতি (শেষ কিস্তি) - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন

ফেসবুক পেজ