উত্তর : বদ নযর সত্য। মানুষের উপর এর প্রভাব রয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَ اِنۡ یَّکَادُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا لَیُزۡلِقُوۡنَکَ بِاَبۡصَارِہِمۡ ‘কাফেররা তাদের দৃষ্টির মাধ্যমে আপনাকে আছাড় দিয়ে ফেলে দিতে চায়’ (সূরা আল-ক্বলম : ৫১)। নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, বদ নযরের প্রভাব সত্য। কোন জিনিস যদি তাক্বদীরকে অতিক্রম করতে পারত, তাহলে বদ নযর তাকে অতিক্রম করত। তোমাদেরকে গোসল করতে বলা হলে তোমরা গোসল করবে এবং গোসলে ব্যবহৃত পানি দিয়ে রোগীর চিকিৎসা করবে (ছহীহ মুসলিম, হা/২১৮৮; মিশকাত, হা/৪৫৩১; ইবনু মাজাহ, হা/৩৫০৯; ছহীহুল জামে‘, হা/৫৫৬, সনদ ছহীহ)।
বদ নযরে আক্রান্ত হলে ইসলামী শরী‘আতে তার চিকিৎসা রয়েছে। যেমন-
(১) হাদীছে বর্ণিত দু‘আগুলো পাঠ করে আক্রান্ত রোগীর উপর ঝাড়-ফুঁক করতে হবে। নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ‘বদ নযর এবং বিচ্ছুর বিষ নামানোর ঝাড়-ফুঁক ব্যতীত কোন ঝাড়-ফুঁক নেই (ছহীহ বুখারী, হা/৫৭০৫; ছহীহ মুসলিম, হা/২২০)। একদা জিবরীল (আলাইহিস সালাম) নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আগমন করে বললেন, হে মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনি অসুস্থবোধ করছেন? নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হ্যাঁ। তখন জিবরীল (আলাইহিস সালাম) বললেন, بِسْمِ اللهِ أَرْقِيْكَ مِنْ كُلِّ شَىْءٍ يُؤْذِيْكَ مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ اللهُ يَشْفِيْكَ بِسْمِ اللهِ أَرْقِيْكَ ‘আমি আপনাকে আল্লাহর নামে ঝাড়-ফুঁক করছি প্রতিটি এমন জিনিস হতে, যা আপনাকে কষ্ট দেয় এবং প্রত্যেক জীবের অমঙ্গল হতে ও হিংসুকের বদ নযর হতে। আল্লাহ আপনাকে আরোগ্য দান করুন। আমি আপনাকে আল্লাহর নামে ঝাড়-ফুঁক করছি’ (ছহীহ মুসলিম, হা/২১৮৬; তিরমিযী, হা/৯৭২)।
(২) যার বদ নযর লাগছে বলে সন্দেহ করা হয়, তাকে গোসল করিয়ে গোসলের পানি রোগীর শরীরে ঢালতে হবে। যেমনভাবে নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমের বিন রবী‘আকে গোসল করতে বলেছিলেন (ইবনু মাজাহ, হা/৩৫০৯; ছহীহুল জামে‘, হা/৫৫৬, সনদ ছহীহ)। তবে সন্দেহ যুক্ত ব্যক্তির পেশাব-পায়খানা বা অন্য কোন কিছু দিয়ে চিকিৎসা করার কোন দলীল নেই। অনুরূপভাবে তার উচ্ছিষ্ট বা ওযূর পানি ইত্যাদি ব্যবহার করাও ভিত্তিহীন (ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম প্রশ্ন নং-৬৬, পৃঃ ১৩২-১৩৩)।
-মাহিদ, ঢাকা।