উত্তর : তিনি উত্তম কাজ করেছেন। তাছাড়া সূদ বন্ধ করার অপশন থাকলে সবারই এমনটি করা উচিত। ‘আসলে চাকুরিজীবীরা শতকরা হারে যে অর্থ ফান্ডে জমা করেন তা মূলত ঋণ স্বরূপ কোন কোম্পানীকে দিয়ে থাকে। আর ঋণ দিয়ে বেশি নেয়া স্পষ্টত সূদ। এই অর্থকে চক্রবৃদ্ধিকারে কাজে লাগিয়ে অবসর গ্রহণকালে কর্মচারীকে বিশাল অঙ্কের টাকা প্রদান করা হয় (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ১৩/৫২০ পৃ.)। সুতরাং যদি জমা করার বিষয়টি স্বেচ্ছাধীন হয়, তবে জমা করা যাবে না। আর যদি বাধ্যতামূলক হয়, সেক্ষেত্রে জমাকৃত অর্থের পূর্ণাঙ্গ হিসাব রাখতে হবে এবং এককালীন টাকাটা পাওয়ার পর মূলধন থেকে সূদটা বিয়োগ করে স্বীয় দায়িত্বে সহায়হীন, দূরবস্থাপন্ন, নিঃসম্বল ও প্রতিবন্ধী মানুষদের মাঝে ছওয়াবের নিয়ত না রেখে বিতরণ করে দিতে হবে’ (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যা, ২/৪০৬-৪০৭ পৃ.)। কেননা ইসলাম সকল প্রকারের সূদকে হারাম করেছে (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২৭৫-২৭৯)। অনেকে বলেন যে, এটা তো কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে একটি অবসর উপহার, যা উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পাথেয় স্বরূপ দেয়া হয়ে থাকে। যদি তাই হয়, তাহলে যে সমস্ত কর্মচারীরা প্রভিডেন্ট ফান্ডে অর্থ জমা করেন না, তাদের কেন দেয়া হয় না, তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রতিষ্ঠান কেন ভাবে না। মোটকথা এগুলো হারামকে হালাল করার একটা ঘৃণিত অপচেষ্টা মাত্র। অন্যত্র সঊদী স্থায়ী ফাতাওয়া কমিটি বলেন, ‘যেহেতু এটা শুধু তাদেরই দেয়া হয়, যারা প্রভিডেন্ট ফান্ডে অর্থ জমা করে, তাই একে উপহার বলা যাবে না (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ১৩/৫১০-৫১৫ পৃ.)।
দ্বিতীয়তঃ প্রত্যেক বিষয়ে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ﷺ)-এর আনুগত্য করা মুসলিমদের উপর অপরিহার্য। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘কাজেই যারা তাঁর আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে তারা সতর্ক হোক যে, বিপর্যয় তাদের উপর আপতিত হবে অথবা আপতিত হবে তাদের উপর যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি’ (সূরা আন-নূর : ৬৩)। সুতরাং শরী‘আত বিরোধী কোন নির্দেশ মানা যাবে না। যেমন নবী (ﷺ) বলেন, لَا طَاعَةَ فِيْ مَعْصِيَةٍ، إِنَّمَا الطَّاعَةُ فِي الْمَعْرُوْفِ ‘আল্লাহ তা‘আলার অবাধ্যতায় কোনরূপ আনুগত্য নেই। আনুগত্য করতে হয় কেবল ন্যায়সঙ্গত কাজে’ (ছহীহ বুখারী, হা/৭২৫৭; ছহীহ মুসলিম, হা/১৮৪০)। সুতরাং পিতা-মাতার শরী‘আত বিরোধী নির্দেশ মানা যাবে না।
প্রশ্নকারী : রাফিয়া খানম, রহমতগঞ্জ।