বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১০ অপরাহ্ন

আল-কুরআন তেলাওয়াতের ফযীলত

-আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম*



আল-কুরআন সবচেয়ে বড় মর্যাদা হল এটা আল্লাহ তা‘আলা কথা। এ কারণে এর প্রতিটি অক্ষর, শব্দ, আয়াত এবং সূরা রহমত ও বরকত দিয়ে পরিপূর্ণণ। যা তেলাওয়াত করলে মুমিনের ঈমান বৃদ্ধি পায়, তার চোখ অশ্রুসিক্ত হয় এবং অন্তর প্রকম্পিত হয়। গায়ের চামড়া রোমাঞ্চিত হয় এবং দেহমন বিনম্র হয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, 

اِنَّمَا الۡمُؤۡمِنُوۡنَ الَّذِیۡنَ اِذَا ذُکِرَ اللّٰہُ وَجِلَتۡ قُلُوۡبُہُمۡ وَ اِذَا تُلِیَتۡ عَلَیۡہِمۡ اٰیٰتُہٗ زَادَتۡہُمۡ  اِیۡمَانًا وَّ عَلٰی رَبِّہِمۡ یَتَوَکَّلُوۡنَ.

‘মুমিন তো তারাই যাদের হৃদয় আল্লাহকে স্মরণ করা হলে প্রকম্পিত হয় এবং তাঁর আয়াতসমূহ তাদের নিকট পাঠ করা হলে তা তাদের ঈমান বৃদ্ধি করে। আর তারা তাদের রব-এর উপরই নির্ভর করে’ (সূরা আল-আনফাল, আয়াত : ২)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَ اِذَا مَاۤ  اُنۡزِلَتۡ سُوۡرَۃٌ  فَمِنۡہُمۡ مَّنۡ یَّقُوۡلُ اَیُّکُمۡ زَادَتۡہُ ہٰذِہٖۤ  اِیۡمَانًا ۚ فَاَمَّا الَّذِیۡنَ  اٰمَنُوۡا  فَزَادَتۡہُمۡ   اِیۡمَانًا وَّ ہُمۡ  یَسۡتَبۡشِرُوۡنَ.

‘আর যখনই কোন সূরা নাযিল হয় তখন তাদের কেউ কেউ বলে, এটা তোমাদের মধ্যে র্কা ঈমান বৃদ্ধি করল? অতঃপর যারা মুমিন এটা তাদেরই ঈমান বৃদ্ধি করে এবং তারাই আনন্দিত হয়’ (সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত : ১২৪)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

الَّذِیۡنَ اِذَا ذُکِرَ  اللّٰہُ وَجِلَتۡ قُلُوۡبُہُمۡ وَ الصّٰبِرِیۡنَ عَلٰی مَاۤ  اَصَابَہُمۡ وَ الۡمُقِیۡمِی الصَّلٰوۃِ ۙ وَ  مِمَّا  رَزَقۡنٰہُمۡ  یُنۡفِقُوۡنَ.

‘যাদের হৃদয় ভয়ে প্রকম্পিত হয় আল্লাহর নাম স্মরণ করা হলে, যারা তাদের বিপদে-আপদে ধৈর্যধারণ করে এবং ছালাত কায়েম করে এবং আমরা তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে’ (সূরা আল-হজ্জ, আয়াত : ৩৫)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

اَللّٰہُ  نَزَّلَ  اَحۡسَنَ الۡحَدِیۡثِ کِتٰبًا مُّتَشَابِہًا  مَّثَانِیَ تَقۡشَعِرُّ مِنۡہُ جُلُوۡدُ الَّذِیۡنَ یَخۡشَوۡنَ  رَبَّہُمۡ ثُمَّ  تَلِیۡنُ جُلُوۡدُہُمۡ وَ قُلُوۡبُہُمۡ  اِلٰی ذِکۡرِ اللّٰہِ  ذٰلِکَ ہُدَی اللّٰہِ یَہۡدِیۡ بِہٖ مَنۡ یَّشَآءُ  وَ مَنۡ یُّضۡلِلِ اللّٰہُ  فَمَا لَہٗ مِنۡ ہَادٍ.

‘আল্লাহ অবতীর্ণ করেছেন উত্তম বাণী সম্বলিত কিতাব যা সুসামঞ্জস্য এবং যা পুনঃপুনঃ আবৃত্তি করা হয়। এতে যারা তাদের প্রতিপালককে ভয় করে, তাদের গায়ের চামড়া রোমাঞ্চিত হয়, অতঃপর তাদের দেহমন বিনম্র হয়ে আল্লাহর স্মরণে ঝুঁকে পড়ে। এটাই আল্লাহর পথনির্দেশ, তিনি এটা দ্বারা যাকে ইচ্ছা তাকে পথ প্রদর্শন করেন। আল্লাহ যাকে বিভ্রান্ত করেন তার কোন পথপ্রদর্শক নেই’ (সূরা আয-যুমার, আয়াত : ২৩)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَ رَتِّلِ الۡقُرۡاٰنَ  تَرۡتِیۡلًا.

‘আর কুরআন পাঠ করুন ধীরে ধীরে (সুন্দরভাবে)’ (সূরা আল-মুযযাম্মিল, আয়াত : ৪)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

قُلۡ اٰمِنُوۡا بِہٖۤ  اَوۡ لَا تُؤۡمِنُوۡا ؕ اِنَّ الَّذِیۡنَ  اُوۡتُوا الۡعِلۡمَ مِنۡ قَبۡلِہٖۤ  اِذَا یُتۡلٰی عَلَیۡہِمۡ یَخِرُّوۡنَ لِلۡاَذۡقَانِ سُجَّدًا  - وَّ یَقُوۡلُوۡنَ سُبۡحٰنَ رَبِّنَاۤ  اِنۡ کَانَ وَعۡدُ رَبِّنَا  لَمَفۡعُوۡلًا  . وَ یَخِرُّوۡنَ لِلۡاَذۡقَانِ یَبۡکُوۡنَ وَ یَزِیۡدُہُمۡ خُشُوۡعًا.

‘(হে নবী!) আপনি বলুন, তোমরা কুরআনে বিশ্বাস কর অথবা বিশ্বাস না কর, যাদেরকে এর পূর্বে জ্ঞান দেয়া হয়েছে তাদের নিকট যখন ওটা পাঠ করা হয়, তখনই তারা সিজদায় লুটিয়ে পড়ে। আর তারা বলে, আমাদের প্রতিপালক পবিত্র, মহান! আমাদের প্রতিপালকের প্রতিশ্রুতি কার্যকরী হয়েই থাকে। আর তারা কাঁদতে কাঁদতে ভূমিতে লুটিয়ে পড়ে এবং তাদের বিনয় বৃদ্ধি করে’ (সূরা বানী ইসরাঈল, আয়াত : ১০৭-১০৯)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

اِنَّ نَاشِئَۃَ الَّیۡلِ  ہِیَ اَشَدُّ وَطۡاً  وَّ  اَقۡوَمُ قِیۡلًا.  اِنَّ  لَکَ فِی النَّہَارِ سَبۡحًا طَوِیۡلًا.

‘নিশ্চয় রাত্রির জাগরণ (কুরআন) হৃদয়ঙ্গমের জন্য অধিক সহায়ক এবং সঠিক তেলাওয়াতের পক্ষে অধিক অনুকূল। অবশ্যই দিবাভাগে রয়েছে আপনার দীর্ঘ কর্মব্যস্ততা’ (সূরা আল-মুয্যাম্মিল, আয়াত : ৬-৭)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

اِنَّ  رَبَّکَ یَعۡلَمُ  اَنَّکَ  تَقُوۡمُ  اَدۡنٰی مِنۡ ثُلُثَیِ الَّیۡلِ وَ نِصۡفَہٗ  وَ ثُلُثَہٗ  وَ طَآئِفَۃٌ  مِّنَ  الَّذِیۡنَ مَعَکَ ؕ وَ  اللّٰہُ  یُقَدِّرُ الَّیۡلَ وَ النَّہَارَ ؕ عَلِمَ  اَنۡ  لَّنۡ تُحۡصُوۡہُ فَتَابَ عَلَیۡکُمۡ  فَاقۡرَءُوۡا مَا تَیَسَّرَ مِنَ الۡقُرۡاٰنِ.

‘নিশ্চয় আপনার রব জানেন যে, আপনি ছালাতে দাঁড়ান কখনও রাতের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ, কখনও অর্ধাংশ এবং কখনও এক-তৃতীয়াংশ এবং দাঁড়ায় আপনার সাথে যারা আছে তাদের একটি দলও। আর আল্লাহই নির্ধারণ করেন দিন ও রাতের পরিমাণ। তিনি জানেন যে, তোমরা এটা পুরোপুরি পালন করতে পারবে না, তাই আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করলেন। কাজেই কুরআন থেকে যতটুকু সহজ ততটুকু পড়’ (সূরা আল-মুয্যাম্মিল, আয়াত : ২০)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَ  قُرۡاٰنَ  الۡفَجۡرِ ؕ اِنَّ  قُرۡاٰنَ الۡفَجۡرِ  کَانَ  مَشۡہُوۡدًا.

‘ফজরের কুরআন। নিশ্চয় ফজরের কুরআন (ফেরেশতা) উপস্থিত থাকে’ (সূরা বানী ইসরাঈল, আয়াত : ৭৮)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَ اِذَا قَرَاۡتَ الۡقُرۡاٰنَ جَعَلۡنَا بَیۡنَکَ وَ بَیۡنَ  الَّذِیۡنَ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ بِالۡاٰخِرَۃِ حِجَابًا مَّسۡتُوۡرًا  .

‘আর আপনি যখন কুরআন পড়েন তখন আপনার ও যারা আখিরাতে ঈমান আনে না তাদের মধ্যে আমরা এক অদৃশ্য পর্দা দিয়ে দেই’ (সূরা বানী ইসরাঈল, আয়াত : ৪৫)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

اِنَّ الَّذِیۡنَ یَتۡلُوۡنَ  کِتٰبَ اللّٰہِ  وَ اَقَامُوا الصَّلٰوۃَ  وَ اَنۡفَقُوۡا مِمَّا رَزَقۡنٰہُمۡ سِرًّا وَّ عَلَانِیَۃً  یَّرۡجُوۡنَ  تِجَارَۃً  لَّنۡ تَبُوۡرَ.

‘নিশ্চয় যারা আল্লাহর কিতাব তেলাওয়াত করে, ছালাত কায়েম করে এবং আল্লাহ যে রিযিক দিয়েছেন তা হতে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসার আশা করতে পারে যা কখনো ধ্বংস হবে না’ (সূরা আল-ফাত্বির, আয়াত : ২৯)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَ مَا تَکُوۡنُ فِیۡ شَاۡنٍ وَّ مَا تَتۡلُوۡا مِنۡہُ مِنۡ قُرۡاٰنٍ وَّ لَا تَعۡمَلُوۡنَ مِنۡ عَمَلٍ اِلَّا کُنَّا عَلَیۡکُمۡ شُہُوۡدًا  اِذۡ تُفِیۡضُوۡنَ فِیۡہِ ؕ وَ مَا یَعۡزُبُ عَنۡ رَّبِّکَ مِنۡ مِّثۡقَالِ  ذَرَّۃٍ فِی الۡاَرۡضِ وَ لَا فِی السَّمَآءِ وَ لَاۤ اَصۡغَرَ مِنۡ ذٰلِکَ وَ لَاۤ اَکۡبَرَ   اِلَّا  فِیۡ  کِتٰبٍ  مُّبِیۡنٍ.

‘আর আপনি যে অবস্থাতেই থাকেন না কেন, আর যা কিছু তেলাওয়াত করেন না কেন আল্লাহর পক্ষ হতে কুরআন থেকে এবং তোমরা যে আমলই কর না কেন, আমি তোমাদের উপর সাক্ষী থাকি, যখন তোমরা তাতে নিমগ্ন হও। তোমার রব থেকে গোপন থাকে না যমীনের বা আসমানের অণু পরিমাণ কোন কিছুই এবং তা থেকে ছোট বা বড়। তবে (এর সব কিছুই) রয়েছে সুস্পষ্ট কিতাবে’ (সূরা ইউনুস, আয়াত : ৬১)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

لَیۡسُوۡا سَوَآءً ؕ مِنۡ اَہۡلِ الۡکِتٰبِ اُمَّۃٌ قَآئِمَۃٌ یَّتۡلُوۡنَ اٰیٰتِ اللّٰہِ اٰنَآءَ الَّیۡلِ  وَ ہُمۡ  یَسۡجُدُوۡنَ.

‘তারা সমান নয়। আহলে কিতাবের মধ্যে একদল ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত রয়েছে। তারা রাতের বেলায় আল্লাহর আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করে এবং তারা সিজদা করে’ (সূরা আলে ‘ইমরান, আয়াত : ১১৩)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَ سِیۡقَ الَّذِیۡنَ  کَفَرُوۡۤا اِلٰی جَہَنَّمَ  زُمَرًا ؕ حَتّٰۤی  اِذَا جَآءُوۡہَا فُتِحَتۡ  اَبۡوَابُہَا وَ قَالَ لَہُمۡ خَزَنَتُہَاۤ  اَلَمۡ یَاۡتِکُمۡ رُسُلٌ مِّنۡکُمۡ یَتۡلُوۡنَ عَلَیۡکُمۡ اٰیٰتِ رَبِّکُمۡ وَ یُنۡذِرُوۡنَکُمۡ لِقَآءَ یَوۡمِکُمۡ ہٰذَا ؕ قَالُوۡا بَلٰی وَ لٰکِنۡ حَقَّتۡ کَلِمَۃُ الۡعَذَابِ عَلَی الۡکٰفِرِیۡنَ.

‘আর কাফিরদেরকে জাহান্নামের দিকে দলে দলে হাঁকিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। অবশেষে যখন তারা জাহান্নামের কাছে আসবে তখন এর দরজাগুলো খুলে দেয়া হবে এবং জাহান্নামের রক্ষীরা তাদেরকে বলবে, তোমাদের কাছে কি তোমাদের মধ্য থেকে রাসূল আসেনি যারা তোমাদের কাছে তোমাদের রবের আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করত এবং এ দিনের সাক্ষাৎ সম্বন্ধে তোমাদেরকে সতর্ক করত? তারা বলবে, অবশ্যই হ্যাঁ। কিন্তু শাস্তির বাণী কাফিরদের উপর বাস্তবায়িত হয়েছে’ (সূরা আয-যুমার, আয়াত : ৭১)।

আল-কুরআনের অবস্থান এবং ফযীলত

আল-কুরআনের সবচেয়ে বড় মু‘জিযা হল এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ এবং তাঁরই কথা। পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবসমূহের সত্যায়নকারী এবং সংরক্ষক। এ কারণে কুরআনের অবস্থান সকল কিছুর উপরে। তাছাড়া এটা তার পাঠক ও আমলকারীর জন্য ক্বিয়ামতের মাঠে সুপারিশ করবে এবং তাদেরকে জান্নাতে নিয়ে যাবে। হাদীছে এসেছে,

عَنْ جَابِرٍرَضِىَ اللهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ الْقُرْآنُ شَافِعٌ مُشَفَّعٌ وَمَاحِلٌ مُصَدَّقٌ مَنْ جَعَلَهُ أَمَامَهُ قَادَهُ إِلَى الْجَنَّةِ وَمَنْ جَعَلَهُ خَلَفَهُ سَاقَهُ إِلَى النَّارِ.

জাবির (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, ‘কুরআন সুপারিশকারী, সুপারিশ গ্রহণকারী এবং সন্দেহ পোষণকারীর বিপক্ষে সত্যায়ণকারী। যে ব্যক্তি তাকে নিয়ে সামনে অগ্রসর হবে সে তাকে জান্নাতে নিয়ে যাবে। আর যে ব্যক্তি তাকে পেছনে রেখে দিবে সে তাকে জাহান্নামে হাঁকিয়ে নিয়ে যাবে’।[১]

عَنْ وَاثِلَةَ بْنِ الأَسْقَعِ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ أُعْطِيْتُ مَكَانَ التَّوْرَاةِ السَّبْعِ الطِّوَالِ وَمَكَانَ الزَّبُوْرِ الْمِئَيْنَ وَمَكَانَ الْإِنْجِيْلِ الْمَثَانِيْ وَفُضِّلْتُ بِالْمُفَصَّلِ.

ওয়াছিলাহ ইবনুল আসক্বা‘ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, আমাকে তাওরাতের স্থানে দেয়া হয়েছে সাব‘আ ত্বিওয়াল তথা সূরা বাক্বারা থেকে সূরা আ‘রাফ পর্যন্ত। যাবূরের পরিবর্তে দেয়া হয়েছে ঐসকল সূরা যেগুলোর আয়াত দুই শতাধিক। ইঞ্জিলের পরিবর্তে দেয়া হয়েছে বারবার পঠিতব্য কিছু আয়াত তথা সূরা ফাতিহা এবং আরও বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে মুফাছ্ছাল প্রদানের মাধ্যমে।[২]

عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا كَانَ يُحَدِّثُ أَنَّ رَجُلًا أَتَى رَسُوْلَ اللهِ ﷺ فَقَالَ إِنِّيْ رَأَيْتُ اللَّيْلَةَ فِيْ المَنَامِ ظُلَّةً تَنْطُفُ السَّمْنَ وَالعَسَلَ فَأَرَى النَّاسَ يَتَكَفَّفُوْنَ مِنْهَا فَالْمُسْتَكْثِرُ وَالمُسْتَقِلُّ وَإِذَا سَبَبٌ وَاصِلٌ مِنَ الْأَرْضِ إِلَى السَّمَاءِ فَأَرَاكَ أَخَذْتَ بِهِ فَعَلَوْتَ ثُمَّ أَخَذَ بِهِ رَجُلٌ آخَرُ فَعَلَا بِهِ ثُمَّ أَخَذَ بِهِ رَجُلٌ آخَرُ فَعَلَا بِهِ ثُمَّ أَخَذَ بِهِ رَجُلٌ آخَرُ فَانْقَطَعَ ثُمَّ وُصِلَ فَقَالَ أَبُوْ بَكْرٍ يَا رَسُوْلَ اللهِ بِأَبِيْ أَنْتَ وَاللهِ لَتَدَعَنِّيْ فَأَعْبُرَهَا فَقَالَ النَّبِيُّ ﷺ  اعْبُرْهَا. قَالَ أَمَّا الظُّلَّةُ فَالإِسْلَامُ وَأَمَّا الَّذِيْ يَنْطُفُ مِنَ العَسَلِ وَالسَّمْنِ فَالقُرْآنُ حَلَاوَتُهُ تَنْطُفُ فَالْمُسْتَكْثِرُ مِنَ القُرْآنِ وَالمُسْتَقِلُّ وَأَمَّا السَّبَبُ الوَاصِلُ مِنَ السَّمَاءِ إِلَى الْأَرْضِ فَالحَقُّ الَّذِيْ أَنْتَ عَلَيْهِ تَأْخُذُ بِهِ فَيُعْلِيْكَ اللهُ ثُمَّ يَأْخُذُ بِهِ رَجُلٌ مِنْ بَعْدِكَ فَيَعْلُوْ بِهِ ثُمَّ يَأْخُذُ بِهِ رَجُلٌ آخَرُ فَيَعْلُوْ بِهِ ثُمَّ يَأْخُذُهُ رَجُلٌ آخَرُ فَيَنْقَطِعُ بِهِ ثُمَّ يُوَصَّلُ لَهُ فَيَعْلُو بِهِ فَأَخْبِرْنِيْ يَا رَسُوْلَ اللهِ ﷺ بِأَبِيْ أَنْتَ أَصَبْتُ أَمْ أَخْطَأْتُ؟ قَالَ النَّبِيُّ ﷺ أَصَبْتَ بَعْضًا وَأَخْطَأْتَ بَعْضًا قَالَ فَوَاللّٰهِ يَا رَسُوْلَ اللهِ ﷺ لَتُحَدِّثَنِّيْ بِالَّذِيْ أَخْطَأْتُ قَالَ لَا تُقْسِمْ.

ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক লোক রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর কাছে এসে বলল, আমি গত রাতে স্বপ্নে একখণ্ড মেঘ দেখলাম, যা থেকে ঘি ও মধু ঝরছে। আমি লোকদেরকে দেখলাম তারা তা থেকে তুলে নিচ্ছে। কেউ অধিক পরিমাণ আবার কেউ কম পরিমাণ। আর দেখলাম, একটা রশি যমীন থেকে আসমান পর্যন্ত মিলে রয়েছে। আমি দেখলাম আপনি তা ধরে উপরে উঠছেন। তারপর অন্য একজন তা ধরল ও এর সাহায্যে উপরে উঠে গেল। এরপর আরেকজন তা ধরে এর দ্বারা উপরে উঠে গেল। এরপর আরেকজন তা ধরল। কিন্তু তা ছিড়ে গেল। পুনরায় তা জোড়া লেগে গেল। তখন আবূ বকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! আপনার প্রতি আমার পিতা কুরবান হোক! আল্লাহর কসম! আপনি অবশ্যই আমাকে এ স্বপ্নের ব্যাখ্যা দেয়ার সুযোগ দিবেন। নবী (ﷺ) বললেন, তুমি এর ব্যাখ্যা দাও। আবূ বকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বললেন, মেঘের ব্যাখ্যা হল ইসলাম। আর তার থেকে যে ঘি ও মধু ঝরছে তা হল কুরআন যার মিষ্টতা ঝরছে। কুরআন থেকে কেউ বেশি সংগ্রহ করছে, আর কেউ কম। আসমান থেকে যমীন পর্যন্ত ঝুলন্ত দড়িটি হচ্ছে ঐ হক্ব (মহাসত্য) যার উপর আপনি প্রতিষ্ঠিত রয়েছেন। আপনি তা ধরবেন, আর আল্লাহ আপনাকে উচ্চে উঠাবেন। আপনার পরে আরেকজন তা ধরবে। ফলে এর দ্বারা সে উচ্চে উঠবে। অতঃপর আরেকজন তা ধরে এর মাধ্যমে সে উচ্চে উঠবে। এরপর আরেকজন তা ধরবে কিন্তু তা ছিড়ে যাবে। পুনরায় তা জোড়া লেগে যাবে, ফলে সে এর দ্বারা উচ্চে উঠবে। হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! আমার পিতা আপনার উপর কুরবান হোক। আমাকে বলুন, আমি ঠিক বলেছি, না ভুল? নবী (ﷺ) বললেন, কিছু ঠিক বলেছ। আর কিছু ভুল বলেছ। তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! আল্লাহর কসম! আপনি অবশ্যই আমাকে বলে দিবেন যা আমি ভুল করেছি। নবী (ﷺ) বললেন, কসম করো না।[৩]

কুরআন নিয়ে গবেষণা করার ফযীলত

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

اَفَلَا یَتَدَبَّرُوۡنَ الۡقُرۡاٰنَ وَ لَوۡ  کَانَ مِنۡ عِنۡدِ غَیۡرِ اللّٰہِ لَوَجَدُوۡا فِیۡہِ اخۡتِلَافًا کَثِیۡرًا.

‘তারা কি কুরআন নিয়ে গবেষণা করে না? আর যদি তা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো পক্ষ থেকে হত, তবে অবশ্যই তারা এতে অনেক বৈপরীত্য দেখতে পেত’ (সূরা আন-নিসা, আয়াত : ৮২)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

اَفَلَا یَتَدَبَّرُوۡنَ الۡقُرۡاٰنَ  اَمۡ عَلٰی قُلُوۡبٍ اَقۡفَالُہَا.

‘তারা তবে কি কুরআন নিয়ে গভীর চিন্তাÑভাবনা করে না? নাকি তাদের অন্তরসমূহে তালা রয়েছে? (সূরা মুহাম্মাদ, আয়াত : ২৪)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

اَلَمۡ یَاۡنِ  لِلَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا  اَنۡ  تَخۡشَعَ قُلُوۡبُہُمۡ  لِذِکۡرِ اللّٰہِ  وَ مَا  نَزَلَ مِنَ الۡحَقِّ  وَ لَا یَکُوۡنُوۡا کَالَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡکِتٰبَ مِنۡ قَبۡلُ فَطَالَ عَلَیۡہِمُ  الۡاَمَدُ فَقَسَتۡ قُلُوۡبُہُمۡ وَ کَثِیۡرٌ  مِّنۡہُمۡ فٰسِقُوۡنَ.

‘যারা ঈমান এনেছে তাদের হৃদয় কি আল্লাহর স্মরণে এবং যে সত্য নাযিল হয়েছে তার কারণে বিগলিত হওয়ার সময় হয়নি? আর তারা যেন তাদের মত না হয়, যাদেরকে ইতোপূর্বে কিতাব দেয়া হয়েছিল, তারপর তাদের উপর দিয়ে দীর্ঘকাল অতিক্রান্ত হল, অতঃপর তাদের অন্তরসমূহ কঠিন হয়ে গেল। আর তাদের অধিকাংশই ফাসিক’ (সূরা আল-হাদীদ, আয়াত : ১৬)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَ نُنَزِّلُ مِنَ الۡقُرۡاٰنِ مَا ہُوَ شِفَآءٌ وَّ رَحۡمَۃٌ  لِّلۡمُؤۡمِنِیۡنَ وَ لَا یَزِیۡدُ الظّٰلِمِیۡنَ   اِلَّا  خَسَارًا.

‘আর আমরা কুরআন নাযিল করি যা মুমিনদের জন্য শিফা ও রহমত, কিন্তু তা যালিমদের ক্ষতিই বাড়িয়ে দেয়’ (সূরা বানী ইসরাঈল, আয়াত : ৮২)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

قُلۡ بِفَضۡلِ اللّٰہِ وَ بِرَحۡمَتِہٖ فَبِذٰلِکَ فَلۡیَفۡرَحُوۡا ہُوَ  خَیۡرٌ  مِّمَّا  یَجۡمَعُوۡنَ.

‘বল, আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমতে। সুতরাং এ নিয়েই যেন তারা খুশি হয়। এটি উত্তম তা থেকে যা তারা জমা করে’ (সূরা ইউনুস, আয়াত : ৫৮)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

اَللّٰہُ  نَزَّلَ  اَحۡسَنَ الۡحَدِیۡثِ کِتٰبًا مُّتَشَابِہًا  مَّثَانِیَ تَقۡشَعِرُّ مِنۡہُ جُلُوۡدُ الَّذِیۡنَ یَخۡشَوۡنَ  رَبَّہُمۡ ثُمَّ  تَلِیۡنُ جُلُوۡدُہُمۡ وَ قُلُوۡبُہُمۡ  اِلٰی ذِکۡرِ اللّٰہِ ذٰلِکَ ہُدَی اللّٰہِ یَہۡدِیۡ بِہٖ مَنۡ یَّشَآءُ وَ مَنۡ یُّضۡلِلِ اللّٰہُ  فَمَا لَہٗ مِنۡ ہَادٍ.

‘আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম বাণী, সাদৃশ্যপূর্ণ একটি কিতাব (আল-কুরআন), যাতে পুনরাবৃত্তি রয়েছে। যারা তাদের রবকে ভয় করে, তাদের গা এতে শিহরিত হয়, তারপর তাদের গাত্র ও মন আল্লাহর স্মরণে বিনম্র হয়ে যায়। এটা আল্লাহর হেদায়াত, তিনি যাকে চান তাকে এর দ্বারা হেদায়াত দেন। আর আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তার জন্য কোন হেদায়াতকারী নেই’ (সূরা আয-যুমার, আয়াত : ২৩)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَ مِنۡہُمۡ اُمِّیُّوۡنَ لَا یَعۡلَمُوۡنَ الۡکِتٰبَ اِلَّاۤ اَمَانِیَّ وَ اِنۡ ہُمۡ  اِلَّا یَظُنُّوۡنَ.

‘তাদের কিছু লোক নিরক্ষর। তারা মিথ্যা আকাক্সক্ষা ছাড়া আল্লাহর গ্রন্থের কিছুই জানে না। তাদের কাছে কল্পনা ছাড়া কিছুই নেই’ (সূরা আল-বাক্বারাহ, আয়াত : ৭৮)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

کِتٰبٌ  اَنۡزَلۡنٰہُ  اِلَیۡکَ مُبٰرَکٌ  لِّیَدَّبَّرُوۡۤا اٰیٰتِہٖ وَ  لِیَتَذَکَّرَ  اُولُوا الۡاَلۡبَابِ.

‘এ এক কল্যাণময় কিতাব, এটা আমরা আপনার উপর অবতীর্ণ করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতসমূহ অনুধাবন করে এবং বোধশক্তি সম্পন্ন ব্যক্তিরা উপদেশ গ্রহণ করে’ (সূরা ছোয়াদ, আয়াত : ২৯)।

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَالَ لِي النَّبِيُّ ﷺ إِقْرَأْ عَلَيَّ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ ﷺ آقْرَأُ عَلَيْكَ وَعَلَيْكَ أُنْزِلَ؟ قَالَ نَعَمْ فَقَرَأْتُ سُوْرَةَ النِّسَاءِ حَتَّى أَتَيْتُ إِلَى هَذِهِ الْآيَةِ " فَکَیۡفَ اِذَا جِئۡنَا مِنۡ کُلِّ اُمَّۃٍۭ بِشَہِیۡدٍ وَّ جِئۡنَا بِکَ عَلٰی ہٰۤؤُلَآءِ شَہِیۡدًا " قَالَ حَسْبُكَ الْآنَ فَالْتَفَتُّ إِلَيْهِ فَإِذَا عَيْنَاهُ تَذْرِفَانِ.

আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাকে বললেন, তুমি আমার সামনে কুরআন পড়। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! আপনার সামনে আমি কুরআন পড়ব! অথচ এটা আপনার উপরই নাযিল হয়েছে? রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, হ্যাঁ। সুতরাং আমি সূরা ‘আন-নিসা’ পড়তে আরম্ভ করলাম। যখন আমি এই আয়াত পর্যন্ত পৌঁছলাম, فَکَیۡفَ اِذَا جِئۡنَا مِنۡ کُلِّ اُمَّۃٍۭ بِشَہِیۡدٍ وَّ جِئۡنَا بِکَ عَلٰی ہٰۤؤُلَآءِ شَہِیۡدًا ‘তবে কেমন হবে, যখন আমি প্রত্যেক উম্মতের বিরুদ্ধে একজন সাক্ষী উপস্থিত করব এবং আপনাকে এদের বিরুদ্ধে সাক্ষীরূপে উপস্থিত করব’ (সূরা আন-নিসা, আয়াত : ৪১), তখন তিনি বললেন, এবার বন্ধ কর। এ সময় আমি তাঁর দিকে তাকালাম; দেখি তাঁর দুই চক্ষু হতে অশ্রু প্রবাহিত হচ্ছে।[৪]

عَنْ أَبِيْ ذَرٍّ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ وَهُوَ يُصَلِّي ذَاتَ لَيْلَةٍ وَهُوَ يُرَدِّدُ آيَةً حَتَّى أَصْبَحَ بِهَا يَرْكَعُ وَبِهَا يَسْجُدُ "اِنۡ تُعَذِّبۡہُمۡ فَاِنَّہُمۡ عِبَادُکَ" [المائدة: ১১৮] فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ ﷺ مَا زِلْتَ تُرَدِّدُ هَذِهِ الْآيَةَ حَتَّى أَصْبَحْتَ؟ قَالَ إِنِّيْ سَأَلْتُ رَبِّيَ الشَّفَاعَةَ لِأُمَّتِيْ وَهِيَ نَائِلَةٌ لِمَنْ لَا يُشْرَكُ بِاللهِ شَيْئًا.

আবূ যার (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, একবার কোন এক রাতের ছালাতে আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে সকাল পর্যন্ত একটি আয়াতই বার বার তেলাওয়াত করতে শুনেছি এবং এই একটি আয়াত দিয়েই তিনি রূকু ও সিজদাহ করেছেন। ‘যদি আপনি তাদেরকে শাস্তি প্রদান করেন তবে তারা আপনারই বান্দা (সূরা আল-মায়েদাহ, আয়াত : ১১৮)।’ রাবী বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি এই একটি আয়াত বার বার তেলাওয়াত করতে করতে সকাল করে ফেললেন (এর বিশেষত্ব কী?) রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, আমি আমার উম্মতের শাফ‘আতের জন্য (বিশেষ একটি দু‘আ) প্রার্থনা করেছিলাম, তিনি আমাকে এই আয়াতটি দান করেছেন। যারা আল্লাহর সাথে কিছু শরীক না করা অবস্থায় মারা যাবে, তারাই এই শাফা‘আত পাবে।[৫]

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ ضَمَّنِيْ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ وَقَالَ اللهم عَلِّمْهُ الْكِتَابَ.

ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) একবার আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন, হে আল্লাহ! আপনি তাকে কিতাব (কুরআন) শিক্ষা দিন।[৬]

১৯. وَعَنْ أَبِيْ ذَرٍّ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ إِنَّ بَعْدِيْ مِنْ أُمَّتِيْ أَوْ سَيَكُوْنُ بَعْدِيْ مِنْ أُمَّتِيْ قَوْمٌ يَقْرَءُوْنَ الْقُرْآنَ لَا يُجَاوِزُ حَلَاقِيْمَهُمْ يَخْرُجُوْنَ مِنَ الدِّيْنِ كَمَا يَخْرُجُ السَّهْمُ مِنَ الرَّمِيَّةِ ثُمَّ لَا يَعُوْدُوْنَ فِيْهِ هُمْ شَرُّ الْخَلْقِ وَالْخَلِيْقَةِ.

আবূ যার (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, আমার পর আমার উম্মতের থেকে অথবা অচিরেই আমার পর আমার উম্মাত থেকে এমন ক্বওম আবির্ভূত হবে যারা কুরআন পাঠ করবে কিন্তু কুরআন তাদের কন্ঠনালী অতিক্রম করবে না। তারা দ্বীন থেকে বেরিয়ে যাবে যেমন বেরিয়ে যায় তীর তার লক্ষ্যস্থল ভেদ করে। এরপর তারা আর দ্বীনের দিকে আসবে না। তারা সৃষ্টি জগতের সর্ব নিকৃষ্ট লোক হবে এবং তাদের স্বভাবও হবে নীচু ধরনের।[৭]

আল-কুরআন সংরক্ষণকারীদের ফযীলত

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

فَتَعٰلَی اللّٰہُ  الۡمَلِکُ الۡحَقُّ وَ لَا تَعۡجَلۡ بِالۡقُرۡاٰنِ مِنۡ قَبۡلِ اَنۡ یُّقۡضٰۤی اِلَیۡکَ وَحۡیُہٗ وَ  قُلۡ  رَّبِّ  زِدۡنِیۡ  عِلۡمًا.

‘সুতরাং আল্লাহ মহান যিনি সত্যিকার অধিপতি; আপনার প্রতি অহী সম্পূর্ণ হওয়ার পূর্বে আপনি কুরআন পাঠে তাড়াহুড়া করবেন না এবং আপনি বলুন, ‘হে আমার রব! আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করে দিন’ (সূরা ত্বোহা, আয়াত : ১১৪)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَ قُرۡاٰنًا فَرَقۡنٰہُ لِتَقۡرَاَہٗ  عَلَی النَّاسِ عَلٰی  مُکۡثٍ  وَّ  نَزَّلۡنٰہُ  تَنۡزِیۡلًا.

‘আর কুরআন নাযিল করেছি কিছু কিছু করে, যেন আপনি তা মানুষের কাছে পাঠ করতে পারেন ধীরে ধীরে এবং আমরা তা নাযিল করেছি পর্যায়ক্রমে’ (সূরা বানী ইসরাঈল, আয়াত : ১০৬)।

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ إِنَّ لِلهِ أَهْلِيْنَ مِنَ النَّاسِ قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ ﷺ! مَنْ هُمْ؟ قَالَ هُمْ أَهْلُ الْقُرْآنِ أَهْلُ اللهِ وَخَاصَّتُهُ.

আনাস ইবনু মালিক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহর নিকট মানুষদের থেকে একদল লোকের স্থান রয়েছে। ছাহাবীগণ জিজ্ঞেন করলেন, তারা কারা? নবী করীম (ﷺ) বললেন, তারা কুরআন সংরক্ষণকারীগণ আল্লাহর পরিজন এবং তাঁর বিশেষ বান্দা’।[৮]

عَنْ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ إِنَّ اللهَ يَرْفَعُ بِهَذَا الْكِتَابِ أَقْوَامًا وَيَضَعُ بِهِ آخَرِيْنَ.

ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, ‘নিশ্চয় মহান আল্লাহ এই কিতাবের দ্বারা অনেক জাতিকে উন্নিত করেন আর অন্যদের অবনত করেন।[৯] অর্থাৎ যারা এ কিতাবের অনুসারী হবে তারা দুনিয়াতে মর্যাদাবান এবং আখিরাতে জান্নাত লাভ করবে। আর যারা একে অস্বীকার করবে তারা দুনিয়ায় লাঞ্ছিত হবে এবং পরকালে জাহান্নামে পতিত হবে।

عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ إِنَّمَا مَثَلُ صَاحِبِ القُرْآنِ كَمَثَلِ صَاحِبِ الإِبِلِ المُعَقَّلَةِ إِنْ عَاهَدَ عَلَيْهَا أَمْسَكَهَا وَإِنْ أَطْلَقَهَا ذَهَبَتْ.

ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, যে ব্যক্তি অন্তরে কুরআন গেঁথে (মুখস্থ) রাখে তার উদাহরণ হচ্ছে ঐ মালিকের ন্যায়, যে উট বেঁধে রাখে। যদি সে উট বেঁধে রাখে, তবে সে উট তার নিয়ন্ত্রণে থাকে, কিন্তু যদি সে বন্ধন খুলে দেয়, তবে তা আয়ত্তের বাইরে চলে যায়।[১০] অন্য বর্ণনায় এসেছে,

وَإِذَا قَامَ صَاحِبُ الْقُرْآنِ فَقَرَأَهُ بِاللَّيْلِ وَالنَّهَارِ ذَكَرَهُ وَإِذَا لَمْ يَقُمْ بِهِ نَسِيَهُ.

‘যখন কুরআনওয়ালা ব্যক্তি (ইবাদতে) সচেষ্ট হয় এবং রাতে ও দিনে কুরআন তেলাওয়াত করতে থাকে তখন সে তা স্মরণ রাখতে পারে, আর তার জন্য যত্নবান না হলে তা ভুলে যায়’।[১১]

কুরআন তেলাওয়াত ও মুখস্থ করা নবী করীম (ﷺ)-এর সুন্নাত

নবী করীম (ﷺ)-এর অন্যতম সুন্নাত হল নিয়মিত কুরআন তেলাওয়াত করা। তাছাড়া তিনি রামাযানে প্রত্যেক রাতেই জিবরীল (আলাইহিস সালাম)-কে কুরআন মুখস্থ শুনাতেন। হাদীছে এসেছে,

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ أَجْوَدَ النَّاسِ بِالْخَيْرِ وَكَانَ أَجْوَدَ مَا يَكُوْنُ فِيْ رَمَضَانَ وَكَانَ جِبْرِيْلُ يَلْقَاهُ كُلَّ لَيْلَةٍ فِيْ رَمَضَانَ يَعْرِضُ عَلَيْهِ النَّبِيُّ ﷺ الْقُرْآنَ فَإِذَا لَقِيَهُ جِبْرِيْلُ كَانَ أَجْوَدَ بِالْخَيْرِ مِنَ الرِّيْحِ الْمُرْسَلَةِ.

আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, দানের ব্যপারে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ছিলেন মানুষের মধ্যে সবচেয়ে প্রশস্ত হৃদয়ের অধিকারী। আর তাঁর হৃদয়ের এ প্রশস্ততা রামাযান মাসে সবচেয়ে বেশী বেড়ে যেত। রামাযানে প্রত্যেক রাতেই জিবরীল (আলাইহিস সালাম) তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করতেন এবং তিনি তাঁকে কুরআন শুনাতেন। যখন তাঁর সাথে জিবরীল (আলাইহিস সালাম) সাক্ষাৎ করতেন, তাঁর দান প্রবাহিত বাতাসের বেগের চেয়েও বেড়ে যেত।[১২]

আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, (মৃত্যুর পূর্বে) রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ফাতিমা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-কে বলেছিলেন,إِنَّ جِبْرِيْلَ كَانَ يُعَارِضُهُ بِالْقُرْآنِ كُلَّ سَنَةٍ مَرَّةٍ وَإنَّهُ قَدْ عَارَضَنِيْ بِهِ الْعَامَ مَرَّتَيْنِ ‘জিবরীল প্রতিবছর আমার সামনে কুরআন একবার পেশ করেন। কিন্তু এবার তিনি দু’বার পেশ করেছেন’।[১৩]

আল-কুরআন তার পাঠকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ করবে

কুরআন তার পাঠকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ করবে এবং তার সুপারিশ কবুল করা হবে। হাদীছে এসেছে,

عَنْ أَبِيْ أُمَامَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ يَقُوْلُ إِقْرَءُوْا الْقُرْآنَ فَإِنَّهُ يَأْتِيْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ شَفِيْعًا لِأَصْحَابِهِ إِقْرَءُوْا الزَّهْرَاوَيْنِ الْبَقَرَةَ وَسُوْرَةَ آلِ عِمْرَانَ فَإِنَّهُمَا تَأْتِيَانِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ كَأَنَّهُمَا غَمَامَتَانِ أَوْ كَأَنَّهُمَا غَيَايَتَانِ أَوْ فِرْقَانِ مِنْ طَيْرٍ صَوَافَّ تُحَاجَّانِ عَنْ أَصْحَابِهِمَا إِقْرَءُوْا سُوْرَةَ الْبَقَرَةِ فَإِنَّ أَخْذَهَا بَرَكَةٌ وَتَرْكَهَا حَسْرَةٌ وَلَا تَسْتَطِيْعُهَا الْبَطَلَةُ .

আবূ উমামা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, ‘তোমরা কুরআন পড়বে। কেননা তা ক্বিয়ামতের দিন তার পাঠকদের জন্য সুপারিশকারীরূপে আসবে। তোমরা দুই উজ্জ্বল- সূরা আল-বাক্বারাহ ও আলে ‘ইমরান পড়বে। কেননা ক্বিয়ামতের দিন এ দু’টি মেঘখণ্ড অথবা দু’টি শামিয়ানা অথবা দু’টি পক্ষ প্রসারিত পাখির ঝাঁকরূপে আসবে এবং তাদের পাঠকদের জন্য আল্লাহর নিকট অনুযোগ করবে। বিশেষ করে তোমরা সূরা আল-বাক্বারাহ পড়বে। কেননা সেটাকে গ্রহণ করা বরকতপূর্ণ এবং বর্জন হচ্ছে আক্ষেপপূর্ণ আর যারা অলস তারা তা পড়তে পারবে না’।[১৪]

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ الصِّيَامُ وَالْقُرْآنُ يَشْفَعَانِ لِلْعَبْدِ يَقُوْلُ الصِّيَامُ أَيْ رَبِّ إِنِّيْ مَنَعْتُهُ الطَّعَامَ وَالشَّهْوَاتِ بِالنَّهَارِ فَشَفِّعْنِيْ فِيْهِ وَيَقُوْلُ الْقُرْآنُ مَنَعْتُهُ النَّوْمَ بِاللَّيْلِ فَشَفِّعْنِيْ فِيْهِ فَيُشْفَعَانِ.

আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, ‘ছিয়াম এবং কুরআন ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহর নিকট বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। ছিয়াম বলবে, হে প্রতিপালক! আমি তাকে দিনে তার খাদ্য ও প্রবৃত্তি হতে বাধা দিয়েছি। সুতরাং তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ কবুল করুন। কুরআন বলবে, আমি তাকে রাত্রে নিদ্রা হতে বাধা দিয়েছি। সুতরাং তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ কবুল করুন। অতঃপর উভয়ের সুপারিশ বকুল করা হবে।[১৫]

(ইনশাআল্লাহ চলবে)



* পি-এইচ. ডি গবেষক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

[১]. ত্বাবারাণী, আল-মু‘জামুল কাবীর, হা/৮৫৭৩; ১০২৯৮; ইবনু হিব্বান, হা/১২৪; ছহীহুল জামে‘, হা/৪৪৪৩, সনদ ছহীহ

[২]. বায়হাক্বী, দালাঈলুন নবুওত, ৫ম খণ্ড, পৃ. ৪৭৫; শু‘আবুল ঈমান, হা/২১৯২; মুসনাদুত ত্বায়ালিসী, হা/১০১২; ছহীহুল জামে‘, হা/১০৫৯; সিলসিলা ছহীহাহ, হা/১৪৮০, সনদ হাসান।

[৩]. ছহীহ বুখারী, হা/৭০৪৬, ছহীহ মুসলিম, হা/২২৬৯।

[৪]. ছহীহ বুখারী, হা/৪৫৮২; ছহীহ মুসলিম, হা/৮০০।

[৫]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, হা/১৮৮০; নাসাঈ, হা/১০১০; ইবনু মাজাহ, হা/১৩৫০, সনদ হাসান।

[৬]. ছহীহ বুখারী, হা/৭৫; ছহীহ মুসলিম, হা/২৪৭৭।

[৭]. ছহীহ বুখারী, হা/৫০৪৩; ছহীহ মুসলিম, হা/৮২২।

[৮]. ইবনু মাজাহ, হা/২১৫, সনদ ছহীহ।

[৯]. ছহীহ মুসলিম, হা/৮১৭, ‘কুরআনের মর্যাদাসমূহ ও এতদসংশ্লিষ্ট বিষয়, অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১৫; ইবনু মাজাহ, হা/২১৮; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৩২; দারেমী, হা/৩৩৬৫; মিশকাত, হা/২১১৫।

[১০]. ছহীহ বুখারী, হা/৫০৩১; ছহীহ মুসলিম, হা/৭৮৯।

[১১]. ছহীহ মুসলিম, হা/৭৮৯।

[১২]. ছহীহ বুখারী, হা/১৯০২, ৪৯৯৭; ছহীহ মুসলিম, হা/২৩০৮।

[১৩]. ছহীহ বুখারী, হা/৬২৮৬; ছহীহ মুসলিম, হা/২৪৫০।

[১৪]. ছহীহ মুসলিম, হা/৮০৪, ‘কুরআনের মর্যাদাসমূহ ও এতদসংশ্লিষ্ট বিষয়’ অধ্যায়, ‘কুরআন তেলাওয়াত এবং সূরা আল-বাক্বারাহ তেলাওয়াতের ফযীলত’ অনুচ্ছেদ; মিশকাত, হা/২১২০।

[১৫]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, হা/১৯৯৪; মিশকাত, হা/১৯৬৩, সনদ ছহীহ।




প্রসঙ্গসমূহ »: আমল কুরআনুল কারীম
মাতুরীদী মতবাদ ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ (৪র্থ কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
বিদ‘আত পরিচিতি (১৬তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
কুরআন মাজীদের উপর বিদ‘আতের আবরণ - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
মুসলিম উম্মাহর বিভ্রান্তির কারণ ও উত্তরণের উপায় (২য় কিস্তি) - হাসিবুর রহমান বুখারী
তওবার গুরুত্ব ও ফযীলত - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
ইসলামী তাবলীগ বনাম ইলিয়াসী তাবলীগ (৪র্থ কিস্তি) - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
সদাচরণের প্রতিদান ও দুশ্চরিত্রের পরিণাম - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
স্বাস্থ্য বিজ্ঞানের আলোকে ছিয়াম সাধনা - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
বিদ‘আত পরিচিতি (১৮তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
ইসলামী তাবলীগ বনাম ইলিয়াসী তাবলীগ (২য় কিস্তি) - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
আশূরায়ে মুহাররম : করণীয় ও বর্জনীয় - ইউনুস বিন আহসান
ক্বিয়ামতের ভয়াবহতা - সাজ্জাদ সালাদীন

ফেসবুক পেজ