উত্তর : প্রথমতঃ যাকাত ও উশরের টাকা মাদরাসার নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা জায়েয নয়। এটি বণ্টন করার জন্য শরী‘আত সম্মত কিছু নির্দিষ্ট খাত রয়েছে, যা মেনে চলা আবশ্যক (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ৮/৩১৬-৩১৭, ৪০১-৪০৪, ৪১৫-৪১৭, ৯/২৮৫ ও ৪২৩ পৃ.; মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনে বায, ১৪/২৬০-২৬১ পৃ.; মাজমূঊ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল ইবনে উছাইমীন, ১৮/৪৮৪-৪৮৬ পৃ.; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-৫২৮১০)। তবে হ্যাঁ, মাদরাসার শিক্ষকগণ বা ছাত্ররা যদি প্রকৃতপক্ষে-ই অসহায় বা দরিদ্র হয়, সেক্ষেত্রে অবশ্যই তাঁদের দেয়া যাবে (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ১০/৪১-৪২ পৃ.)।
দ্বিতীয়তঃ ঈদের ছালাতের পূর্বেই ফক্বীর, মিসকীন ও দুঃস্থ-অসহায়দের কাছে হস্তান্তর করা অপরিহার্য। যদি কোন ফক্বীর-মিসকীন অনুপস্থিত থাকে তাহলে সে কাউকে দায়িত্বশীল বানিয়ে নিজের অধিকার গ্রহণ করতে পারে, অথবা যারা উপস্থিত আছে তাদের মধ্যেই ঈদের ছালাতের পূর্বে সমস্ত মাল বণ্টন করতে হবে (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ৮/৩১৮, ৯/৩৭৭-৩৮০, ৯/৩৭০-৩৭৩, ৮/২৫৮-২৬০, ও ৮/২৭১-২৭২ পৃ.; মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনে বায, ১৪/২১৬-২১৮; মাজমূঊ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল ইবনে উছাইমীন, ১৮/২৭০-২৭৩ ও ১৮/২৬৫-২৬৮ পৃ.; লিক্বাউল বাব আল-মাফতূহ, লিক্বা নং-১২৮; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-৪৯৭৯৩; আরশীফ মুলতাক্বা আহলিল হাদীছ, ৮৪/১৩২ পৃ.)। ইবনে ‘আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, রাসূল (ﷺ) যাকাতুল ফিতর ফরয করেছেন- অশ্লীল কথা ও বেহুদা কাজ হতে ছিয়ামকে পবিত্র করার লক্ষ্যে এবং ‘মিসকীনদের খাদ্য স্বরূপ’। যে ব্যক্তি ঈদের ছালাতের পূর্বে তা আদায় করবে সেটা ক্ববুল ছাদাক্বাহ হিসাবে গণ্য হবে। আর যে ব্যক্তি ছালাতের পরে আদায় করবে, তা সাধারণ দান হিসাবে গৃহীত হবে (আবূ দাঊদ, হা/১৬০৯; ইবনে মাজাহ, হা/১৮২৭; ছহীহুল জামি‘, হা/৩৫৭০, সনদ হাসান)। অতএব বুঝা যাচ্ছে যে, ফিতরা শুধু ফক্বীর-মিসকীন ও দুঃস্থ-অসহায়দের জন্য। সুতরাং তা অন্য কোন কাজে ব্যবহার করা জায়েয নয়।
তৃতীয়তঃ কুরবানীর পশুর চামড়ার ব্যাপারে প্রশস্ততা রয়েছে। কেননা এর জন্য কোন নির্দিষ্ট খাত নেয়। যেমন ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) অনুচ্ছেদ রচনা করেছেন ‘কুরবানীর পশুর চামড়া ছাদাক্বাহ করা’ সম্পর্কে (অধ্যায় নং-২৫, অনুচ্ছেদ নং-১২১)। আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তাঁকে নবী (ﷺ) তাঁর নিজের কুরবানীর পশুর পাশে দাঁড়াতে আর এগুলোর সমুদয় গোশত, চামড়া এবং পিঠের আবরণসমূহ বিতরণ করতে নির্দেশ দেন (ছহীহ বুখারী, হা/১৭১৭, ১৭১৮; ছহীহ মুসলিম, হা/১৩১৭)। ইমাম শাওকানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘কুরবানীর পশুর চামড়া বা তার মূল্য মাদরাসা অথবা কোন ধর্মীয় সংস্থাকে দেয়া জায়েয। অতঃপর তারা ঐ মূল্য যে কোন ধর্মীয় কল্যাণকর কাজে ব্যয় করতে পারে (নাইনুল আওত্বার, ৫/১৫৩ পৃ.)।
প্রশ্নকারী : জহরুল ইসলাম, রাজশাহী।