উত্তর : রুক্বইয়াহ শারইয়্যাহ নিয়ে যারা কাজ করেন তারা কিছু আলামতের কথা উল্লেখ করে থাকেন। তবে এ আলামতগুলো অনুমাননির্ভর। জিনের আছরের আলামতগুলো হল, (১) আযান ও কুরআন তিলাওয়াত শুনা থেকে চরমভাবে মুখ ফিরিয়ে নেয়া। (২) তার উপরে তিলাওয়াত করা হলে বেহুঁশ হয়ে পড়া, খিঁচুনি দেয়া কিংবা ধরাশায়ী হওয়া। (৩) বেশি বেশি ভয়ানক স্বপ্ন দেখা। (৪) একাকী ও নির্জনে থাকা এবং অদ্ভূত সব আচরণ করা। (৫) তার উপরে তিলাওয়াত করা হলে কখনো কখনো যে শয়তান তাকে আছর করেছে সে কথা বলে উঠা। (৬) উন্মাদের মত আচরণ করা। যেমনটি আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, ‘যারা সূদ খায় তারা তার ন্যায় দাঁড়াবে যাকে শয়তান স্পর্শ দ্বারা পাগল করে’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২৭৫)।
এছাড়াও মাথা ব্যথা যা মাথার এক অংশ থেকে অপর অংশে স্থানান্তরিত হয়। চেহারা হলুদ হয়ে যাওয়া। বেশি বেশি ঘাম হওয়া ও পেশাব হওয়া। রুচি কমে যাওয়া। রাতে ঘুম না হওয়া। নির্জনে ও একাকী থাকতে পসন্দ করা। বিষন্নতা ও অলসতা (আর-রুক্বইয়াহ আশ-শারইয়্যাহ, পৃ. ১০; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-২৪০, ১২৫৫৪৩)।
পরিত্রাণের উপায় : (১) আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল (নির্ভর করা) এবং তাঁর কাছেই ধর্ণা দেয়া। (২) শরী‘আতসম্মত রুক্বইয়াহ করা ও ঝাড়ফুঁক করা। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঝাড়ফুঁক হল- সূরা আল-ফালাক্ব ও সূরা আন-নাস দিয়ে। নবী (ﷺ)-কে এগুলো দিয়ে চিকিৎসা করা হয়েছিল। এ দু’টোর সাথে সূরা আল- ইখলাছও যোগ করা যায়। আর সূরা ফাতিহা দিয়ে রুক্বইয়াহ্ করা সফল রুক্বইয়াহ্ যেমনটি হাদীছ থেকে সাব্যস্ত। জাদু থেকে নিরাময়ের ক্ষেত্রে আরেকটি উপায় হল- বরই গাছের সাতটি সবুজ পাতা নিয়ে সেগুলোকে গুঁড়া করবে। এরপর সেগুলোকে একটি বালতিতে রাখবে এবং ঐ গুড়াগুলোর উপর গোসল করার জন্য প্রয়োজনমত পানি ঢালবে। এরপর পাত্রটিতে আয়াতুল কুরসি, সূরা আল-কাফিরুন, সূরা আল-ইখলাছ, সূরা আল-ফালাক্ব ও সূরা আন-নাস এবং জাদুর আয়াতগুলো তথা সূরা আল-বাক্বারাহ : ১০২; সূরা আল-আ‘রাফ : ১১৭-১১৯; সূরা ই্উনুস : ৭৯-৮২ এবং সূরা ত্বোহার ৬৫-৬৯ নং আয়াত পড়বে। এরপর কিছু পানি পান করবে। আর অবশিষ্ট পানি দিয়ে গোসল করবে। কোন কোন সালাফ এভাবে করে উপকার পেয়েছেন। (৩) জাদু কর্মটি খুঁজে বের করে সেটি নষ্ট করে ফেলা, যেভাবে নবী (ﷺ) করেছিলেন, যখন লাবিদ ইবনু আ’সাম আল-ইহুদী তাঁকে যাদু করেছিল। (৪) বৈধ ঔষধগুলো ব্যবহার করা। যেমন খালি পেটে ৭টি আলিয়া বারনি খেজুর (মদীনার এক জাতের খেজুর) খাওয়া। যদি এ খেজুর না-পাওয়া যায় তাহলে যে কোন খেজুর আল্লাহ্র ইচ্ছায় উপকারী হবে। (৫) হিজামা বা শিঙ্গা লাগানো। (৬) নিরন্তর দু‘আ করা (ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-২৪০)।
প্রশ্নকারী : আব্দুর রশীদ, যশোর।