উত্তর : দু‘আ ইউনুস খতম করা হাদীছসম্মত নয়। বরং জাল বর্ণনা। ‘নেয়ামুল কুরআন’ গ্রন্থে এ ব্যাপারে একটি বানোয়াট ফযীলত বর্ণিত হয়েছে। ঘটনাটি নি¤œরূপ: ‘কঠিন বিপদ মামলা-মোকাদ্দমা ও সঙ্কটের সময় এই দু‘আ সোয়া লক্ষ বার পড়িবে। প্রত্যেক একশতবার পড়া হইলে শরীর বা মুখে পানি দিবে। পাক অবস্থায় পাক বিছানায় বসিয়া কেবলামুখী হইয়া পড়িবে। ৩, ৭ কিংবা ৪০ দিনে শেষ করিবে। মাছের পেটের ভিতর অন্ধকারের এই দোয়া জন্মলাভ করিয়াছে বলিয়া অন্ধকারে বসিয়া পড়িলে আরও সত্ত্বর ফল লাভ হয়। খতম শেষ হইলে সূরা আম্বিয়ার ৮৮ নং আয়াত একবার আয়াত পড়িবে। এই তাদবীরকে খতমে ইউনুস বলা হয়। ইহা প্রত্যেক ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকরী ও অব্যর্থ ফলপদ বলিয়া প্রমাণিত হইয়াছে’ (নেয়ামুল কুরআন, মৌলবী শামছুল হুদা, রহমানিয়া লাইব্রেরী, একাদশ সংস্করণ, পৃ. ১২০)।
দ্বিতীয়তঃ দু‘আ ইউনুস অত্যন্ত ফযীলতপূর্ণ একটি দু‘আ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আর (স্মরণ কর) যুন-নূন (ইউনুস)-এর কথা, যখন তিনি ক্রোধভারে বের হয়ে গিয়েছিলেন এবং বিশ্বাসী ছিলেন যে, আমরা তার উপর কোনরূপ কষ্টদানের সিদ্ধান্ত নেব না; অতঃপর তিনি অন্ধকার হতে সত্য আহ্বান করেছিলেন, আপনি ছাড়া কোন (সত্য) মা‘বূদ নেই; আপনি পবিত্র মহান; আমি তো অত্যাচারীদের একজন। তখন আমি তাঁর ডাকে সাড়া দিয়েছিলাম এবং তাঁকে উদ্ধার করেছিলাম দুশ্চিন্তা হতে এবং এভাবেই আমি মুমিনদেরকে উদ্ধার করে থাকি’ (সূরা আল-আম্বিয়া: ৮৭-৮৮)। সা‘দ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন,
دَعْوَةُ ذِي النُّوْنِ إِذَا دَعَا رَبَّهُ وَهُوَ فِيْ بَطْنِ الْحُوْتِ (لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّيْ كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِيْنَ) لَمْ يَدْعُ بِهَا رَجُلٌ مُسْلِمٌ فِيْ شَيْئٍ إِلَّا اسْتَجَابَ لَهُ.
‘মাছওয়ালা নবী ইউনুস (আলাইহিস সালাম)-এর দু‘আ হল এই যে, যখন তিনি মাছের পেট থেকে তাঁর প্রভুর নিকট দু‘আ করেছিলেন, ‘লা ইলাহা ইল্লা আংতা সুব্হানাকা ইন্নী কুংতু মিনাযযালিমীন’। অর্থ: আপনি ব্যতীত কোন সত্য মা‘বূদ নেই, আপনি পবিত্র আর আমি অত্যাচারী অপরাধী। যখন কোন মুসলিমই কোন ব্যাপারে এই দু‘আ করবে, তখন নিশ্চয় তার দু‘আ কবুল হবে (আহমাদ, হা/১৪৬২; তিরমিযী, হা/৩৫০৫; মিশকাত, হা/২২৯২, সনদ ছহীহ)।
প্রশ্নকারী : সুমন, দড়িখরবোনা, রাজশাহী।