সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ১২:০৯ অপরাহ্ন
উত্তর : ইমাম আবূ হানীফা নু‘মান ইবনু ছাবিত আল-কূফী। নিঃসন্দেহে তিনি মুসলিমদের একজন বিখ্যাত ইমাম। উলামায়ে কেরাম তাঁর ইমামত ও মর্যাদা সম্পর্কে ঐকমত্য পোষণ করেছেন (ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-১৫৮৭৫৫)। তাঁর আক্বীদা সালাফে ছালিহীনের আক্বীদার অনুরূপ ছিল। তবে কোন মানুষই যেহেতু ভুলের ঊর্ধ্বে নয়, তাঁরও কিছু মাসআলাগত ত্রুটি ছিল। যেমন ঈমান বৃদ্ধি ও হ্রাস পাওয়া বিষয়ে অথবা ঈমানের সংজ্ঞায়। তিনি শুধু অন্তরের বিশ্বাস ও মুখের স্বীকারোক্তিকেই ঈমান বলেছেন। আমল করা বা কর্মের মাধ্যমে প্রকাশ করাকে ঈমানের অন্তর্ভুক্ত করেননি (আত-তামহীদ, ৯/২৪৭ পৃ.; শারহুল আক্বীদাতিত্ব ত্বাহাবিয়্যাহ, পৃ. ৩৯৫; ইতিক্বাদুল আযিম্মাতিল আরবাআ পৃ. ৩-৮)। তাই বর্তমানে যারা হানাফী মাযহাবের অনুসারী বলে দাবী করে তাদের মধ্যে আর ইমাম আবূ হানীফার আক্বীদা ও আমলের মধ্যে অনেক তফাৎ। সে জন্য হানাফী মাযহাবের অনুসারীদের উচিত ইমাম আবূ হানীফাকে গভীরভাবে অধ্যয়ন করা।

ইমাম আবু হানীফা (রাহিমাহুল্লাহ) সম্পর্কে ইয়াইইয়া ইবনু আবী ত্বালিব বলেন, আমি আলী বিন আছিম (রাহিমাহুল্লাহ)-কে বলতে শুনেছি যে,  لو وزن علم أبي حنيفة بعلم أهل زمانه ، لرجح عليهم ‘যদি আবূ হানীফার জ্ঞানকে তাঁর সমকালীন মানুষের জ্ঞানের সাথে তুলনা করা হত, তবে তিনি তাদের চেয়েও ওযনে এগিয়ে যেতেন’। হিব্বান ইবনু মূসা (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ইমাম ইবনুল মুবারক (রাহিমাহুল্লাহ)-কে জিজ্ঞেস করা হয় যে, أَمَالِكٌ أَفْقَهُ أَمْ أَبُو حَنِيْفَةَ؟ فَقَالَ أَبُوْ حَنِيْفَةَ ‘কে বড় ফক্বীহ ছিলেন, ইমাম মালিক না-কি ইমাম আবূ হানীফা? তিনি বলেন, আবূ হানীফা’। ইমাম শাফিঈ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, الناس في الفقه عيال على أبي حنيفة ‘ফিক্বাহ শাস্ত্রে লোকেরা আবূ হানীফার পরিবার-পরিজনের মত’। আল-খুরাইবিয়্যু (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘যারাই ইমাম আবূ হানীফার বিরুদ্ধাচরণ করে তারা হয় মূর্খ না হয় হিংসুটে’। ইয়াহইয়া ইবনু মাঈন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘আমি ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ আল-ক্বাত্ত্বান-কে বলতে শুনেছি, আমরা আল্লাহকে সাক্ষী রেখে মিথ্যা বলব না, আমরা আবূ হানীফার মতের চেয়ে উত্তম সিদ্ধান্ত আর শুনিনি এবং আমরা তার অধিকাংশ বক্তব্য গ্রহণ করেছি’। ত্বালক্ব ইবনু গান্নাম আন-নাখঈ বলেন, ‘আমি হাফছ ইবনু গিয়াছ (রাহিমাহুল্লাহ)-কে বলতে শুনেছি যে, ‘আবূ হানীফার কথা চুলের থেকেও সূক্ষ্ম, শুধু মূর্খরাই তাঁর কথার খুঁত ধরার চেষ্টা করে’। নু‘আঈম ইবনু হাম্মাদ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘আমি আবূ ইছামাহ-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি আবূ হানীফা-কে বলতে শুনেছি যে, مَا جَاءَ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ ﷺ فَعَلَى الرَّأْسِ ‘যা কিছু রাসূল (ﷺ) থেকে বর্ণিত হয়েছে তা সবার উপরে’ (মানাক্বিবুল ইমাম আবী হানীফা ওয়া ছহিবাইহি, পৃ. ৩২)।

উল্লেখ্য যে, ইমাম আবূ হানীফাকে কলঙ্কিত করতে বিভিন্ন জালিয়াতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে। এমনকি তাঁর নামে ‘কিতাবুল হিয়াল’ নামে একটি জাল পুস্তকও রচনা করা হয়েছে। এ পুস্তকে দ্বীন বিরোধী অনেক মিথ্যা কথা ইমামের নামে লেখা হয়েছে। এ সম্পর্কে শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

إنَّ هَذِهِ الْحِيْلَةَ الَّتِيْ هِيَ مُحَرَّمَةٌ فِيْ نَفْسِهَا لَا يَجُوْزُ أَنْ يُنْسَبَ إلَى إمَامٍ أَنَّهُ أَمَرَ بِهَا فَإِنَّ ذَلِكَ قَدْحٌ فِيْ إمَامَتِهِ وَذَلِكَ قَدْحٌ فِي الْأُمَّةِ حَيْثُ ائْتَمُّوْا بِمَنْ لَا يَصْلُحُ لِلْإِمَامَةِ

‘এ সকল হারাম হীলা উম্মতের একজন ইমামের বক্তব্য হতে পারে না। তিনি কখনোই এরূপ হীলা-বাহানার নির্দেশ দিতে পারেন না। তাহলে তো তিনি ইমাম হওয়ার অযোগ্য বলে প্রমাণিত হবেন। আর সেক্ষেত্রে উম্মতে মুহাম্মাদী অযোগ্য উম্মাত বলে প্রমাণিত হবে। কারণ তারা অযোগ্য একজনকে ইমাম হিসাবে গ্রহণ করেছে’ (আল-ফাতাওয়া আল-কুবরা, ৬/৮৫ পৃ.; ইক্বামাতুদ দলীল, পৃ. ৯৬)।


প্রশ্নকারী : গোলাম রাব্বী, বরিশাল।





প্রশ্ন (৬) : আমি একজন হানাফী ও ছূফী। ভবিষ্যতে পীর হব। আক্বীদা বিশুদ্ধ রেখে আমি কি পীর হতে পারব? পীর-মুরিদী ও ছূফীবাদ সম্পর্কে আহলুল হাদীছের দৃষ্টিভঙ্গি কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১০) : ক্যামেরা বা মোবাইলে ছবি উঠালে এবং সেই ছবি মোবাইলে সেভ করে রাখলে কোন গুনাহ হবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৮) : যঈফ হাদীছ কি সর্বক্ষেত্রেই বর্জনীয়? কোন কোন ক্ষেত্রে যঈফ হাদীছের উপর আমল করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৭) : স্বামী তার স্ত্রীকে বলেছে, তার মায়ের প্রতিটি কথা মেনে চলতে হবে। কিন্তু শাশুড়ি চান যে, তার ছেলের বউ তার দেবর, চাচা, চাচাতো ভাই, খালাত ভাই সবার সাথেই সাধারণভাবেই চলুক। এক্ষেত্রে স্ত্রীর করণীয় কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১১) : সক্ষম বাবা-মায়ের উপর সাবালক ছেলের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের দায় আছে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৫) : আহলে কিতাবদের যব্হ করা পশু খাওয়া যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৯) : সমাজে শরী‘আতের নামে একটি কথা চালু আছে যে, মুহাররমের ১ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত ছিয়াম পালন করলে ৫০ বছরের নফল ছিয়ামের নেকী লেখা হয়। উক্ত বক্তব্য কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩) : আমি একটি দোকানে চাকরি করি। কিন্তু দোকানের মালিক সূদের সাথে জড়িত। আমাকের ব্যাংকের কিস্তি দিতে হয়, ব্যাংকের সাথে লেনদেন করতে হয়। এখানে চাকরি করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৪) : বার্ধক্যের কারণে মাঝে মধ্যে ফোঁটা ফোঁটা পেশাব পড়ে। এমতাবস্থায় ছালাত হবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৪) : একজন ছাত্রাবাসে থাকে। ছালাতের সময় তার রুমমেট মোবাইল ফোনে/ল্যাপটপে নাটক-সিনেমা দেখে। এতে ছালাতের ক্ষতি হবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১১) : পরিবার বা আত্মীয়-স্বজনের কান্নার কারণে মৃত ব্যক্তিকে কবরে শাস্তি দেয়া হয় কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৩) : পুরুষদের ফেয়ারনেস ক্রিম মাখা কি জায়েয? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ

ফেসবুক পেজ