উত্তর : এক্ষেত্রে মা ও স্ত্রীর নির্ধারিত অংশ দেয়ার পর অবশিষ্ট অংশে ‘আছাবাহ’ সূত্রে ছেলে ও মেয়েরা অংশীদার হবে। মায়ের অংশ : সন্তানের উপস্থিতিতে মা পরিত্যক্ত সম্পত্তির এক-ষষ্ঠমাংশ (১/৬) পাবে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَ لِاَبَوَیۡہِ لِکُلِّ وَاحِدٍ مِّنۡہُمَا السُّدُسُ مِمَّا تَرَکَ اِنۡ کَانَ لَہٗ وَلَدٌ ۚ فَاِنۡ لَّمۡ یَکُنۡ لَّہٗ وَلَدٌ وَّ وَرِثَہٗۤ اَبَوٰہُ فَلِاُمِّہِ الثُّلُثُ
‘তার (মৃতের) সন্তান থাকলে, তার পিতা-মাতা প্রত্যেকের জন্য পরিত্যক্ত সম্পত্তির এক-ষষ্ঠাংশ। আর সে নিঃসন্তান হলে এবং কেবল পিতামাতাই উত্তরাধিকারী হলে, তার মাতার জন্য এক-তৃতীয়াংশ’ (সূরা আন-নিসা : ১১)। অর্থাৎ মৃত ব্যক্তির যদি সন্তানাদি থাকে, তাহলে তার (মৃত ব্যক্তির) পিতা ও মাতা উভয়েই মালের এক ষষ্ঠাংশ (ছয় ভাগের এক ভাগ) করে পাবে। অবশিষ্ট মাল সন্তানদের মধ্যে বণ্টন হবে। অতএব মা ছয় ভাগের এক ভাগ হিসাবে ৭,৪৭,০০০ টাকা হতে ১,২৪,৫০০ টাকা পাবে।
স্ত্রীর অংশ : সন্তানের উপস্থিতিতে স্ত্রী পরিত্যাক্ত সম্পত্তির এক-অষ্টমাংশ (১/৮) পাবে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَلَهُنَّ الرُّبُعُ مِمَّا تَرَکۡتُمۡ اِنۡ لَّمۡ یَکُنۡ لَّکُمۡ وَلَدٌ ۚ فَإِنْ كَانَ لَكُمْ وَلَدٌ فَلَهُنَّ الثُّمُنُ مِمَّا تَرَكْتُمْ مِنْ بَعْدِ وَصِيَّةٍ تُوصُونَ بِهَا أَوْ دَيْنٍ
‘তোমাদের সন্তান না থাকলে তাদের (স্ত্রীদের) জন্য তোমাদের পরিত্যক্ত সম্পত্তির এক-চতুর্থাংশ, আর তোমাদের সন্তান থাকলে তাদের (স্ত্রীদের) জন্য তোমাদের পরিত্যক্ত সম্পত্তির এক-অষ্টমাংশ। তোমরা যা ওয়াছিয়াত কর তা কার্যকর ও ঋণ পরিশোধ করার পর’ (সূরা আন-নিসা : ১২)। অর্থাৎ যদি স্বামী মারা যায় এবং তার কোন সন্তান না থাকে, তবে ঋণ পরিশোধ ও ওয়াছিয়াত কার্যকর করার পর স্ত্রী মোট সম্পত্তির এক-চতুর্থাংশ পাবে। আর যদি মৃত স্বামীর সন্তান থাকে, এ স্ত্রীর গর্ভজাত হোক কিংবা অন্য স্ত্রীর, তবে ঋণ পরিশোধ ও ওয়াছিয়াত কার্যকর করার পর স্ত্রী এক-অষ্টমাংশ পাবে। স্ত্রী একাধিক হলেও উক্ত বিবরণ অনুযায়ী এক অংশ সকল স্ত্রীর মধ্যে সমহারে বণ্টন করা হবে। অর্থাৎ প্রত্যেক স্ত্রীই যে এক-চতুর্থাংশ কিংবা এক-অষ্টমাংশ পাবে তা নয়, বরং সবাই মিলে এক-চতুর্থাংশ কিংবা এক-অষ্টমাংশে অংশীদার হবে। স্ত্রীর অংশ দেয়ার পর যা অবশিষ্ট থাকবে, তা তাদের অন্যান্য ওয়ারিশদের মধ্যে বণ্টন করা হবে। অতএব স্ত্রী আট ভাগের এক ভাগ হিসাবে ৭,৪৭,০০০ টাকা হতে ৯৩,৩৭৫ টাকা পাবে।
ছেলে ও মেয়েদের অংশ : এখন মা ও স্ত্রীকে তাদের নির্ধারিত অংশ দেয়ার পর অবশিষ্ট সম্পত্তি ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে বণ্টন করা হবে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, یُوۡصِیۡکُمُ اللّٰہُ فِیۡۤ اَوۡلَادِکُمۡ ٭ لِلذَّکَرِ مِثۡلُ حَظِّ الۡاُنۡثَیَیۡنِ ‘আল্লাহ তোমাদের সন্তান-সন্ততি সম্বন্ধে নির্দেশ দিচ্ছেন এক পুত্রের অংশ দুই কন্যার অংশের সমান’ (সূরা আন-নিসা : ১১)। এখন ৭,৪৭,০০০ টাকা থেকে মাকে ছয় ভাগের এক ভাগ এবং স্ত্রীকে আট ভাগের এক ভাগ দেয়ার পর অবশিষ্ট থাকছে ৫,২৯,১২৫ টাকা। যদি দুই মেয়ের ভাগ এক ছেলের সমান হয়, তাহলে ৬ মেয়ের ভাগ ৩ ছেলের সমান। সুতরাং আমরা মনে করতে পারি যে, ৭ ছেলে আর ৬ মেয়ের ভাগ সমান ১০ ছেলের ভাগ। তাহলে এখন অবশিষ্ট ৫,২৯,১২৫ টাকাকে ১০ দিয়ে ভাগ করলে প্রত্যেক ছেলে ৫২,৯১২.৫০ টাকা করে পাবে। আর অবশিষ্ট তিন ভাগ ছয় মেয়ের মধ্যে সমান ভাগে ভাগ করলে প্রত্যেক মেয়ে ২৬৪৫.২৫ টাকা করে পাবে।
প্রশ্নকারী : আব্দুল আওয়াল চৌধুরী, সঊদী আরব।