শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:২২ পূর্বাহ্ন
উত্তর : আল্লাহ তা‘আলা বলেন, যাদের জন্য ছিয়াম রাখা কষ্টকর হবে, তাদের কর্তব্য হল এর পরিবর্তে ফিদিয়া স্বরূপ একজন মিসকীনকে খাদ্য দ্রব্য প্রদান করা’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১৮৪) উপরিউক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, যাদের জন্য ছিয়াম রাখা কষ্টকর হবে, তাদের কর্তব্য হল এর পরিবর্তে ফিদিয়া স্বরূপ একজন মিসকীনকে খাদ্য প্রদান করা (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১৮৩-১৮৪)। ‘এ আয়াতটি মানসূখ (রহিত) নয়, বরং আয়াতটি অতিশয় বৃদ্ধ নর ও নারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, যারা ছিয়াম পালনে অক্ষম। তারা প্রতিদিনের পরিবর্তে একজন মিসকীনকে খাওয়াবে’ (ছহীহ বুখারী, হা/৪৫০৫; নাসাঈ, হা/২৩১৭)। ইমাম ইবনু কুদামাহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘অতিশয় বৃদ্ধ নর ও নারীর জন্য ছিয়াম পালন যদি কঠিন ও কষ্টসাধ্য হয় তবে তাঁরা ছিয়াম পালন না করে প্রতিদিনের পরিবর্তে একজন মিসকীনকে খাদ্য খাওয়াবেন। আর তাঁরা যদি মিসকীন খাওয়াতেও অক্ষম হন, তাহলে তাঁদের উপর কোন কিছুই বর্তাবে না। কারণ আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, ‘আল্লাহ কারো উপর তার সাধ্যের অতিরিক্ত বোঝা চাপান না’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২৮৬)। আর যে রোগীর আরোগ্য লাভের আশা করা যায় না, সেও ছিয়াম ভঙ্গ করবে এবং প্রতিদিনের বদলে একজন মিসকীনকে খাওয়াবে। কারণ সে রোগীও বৃদ্ধ লোকের পর্যায়ভুক্ত’ (আল-মুগনী, ৪/৩৯৬ পৃ.)।

শায়খ ছালিহ আল-উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘আমাদের জানা উচিত যে, রোগী দুই প্রকার। যথা : (ক) এমন রোগী, যার রোগমুক্তির আশা করা যায়। যেমন, সাময়িক রোগ যা থেকে আরোগ্য লাভের আশা করা যায়। এ শ্রেণীর রোগীর হুকুম হল যেমনটি আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, ‘তবে তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হলে বা সফর অবস্থায় থাকলে অন্য দিনে এ সংখ্যা পূরণ করে নেবে’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১৮৪)। এ শ্রেণীর রোগী সুস্থতার জন্য অপেক্ষা করতে থাকবে। এরপর সুস্থ হয়ে ছিয়াম পালন করবে। আর যদি সুস্থ হওয়ার আগেই সে মারা যায়, তবে তার উপর কোন কিছু বর্তাবে না। অর্থাৎ তার পক্ষ থেকে ক্বাযা আদায় করতে হবে না। কারণ আল্লাহ তা‘আলা তার উপর অন্য দিনগুলোতে ছিয়ামের ক্বাযা আদায় করা ফরয করেছিলেন। কিন্তু সে সুযোগ পাওয়ার আগেই সে মারা গেছে। (খ) এমন রোগী যার রোগ স্থায়ী। যেমন ক্যান্সার, কিডনির সমস্যা, ডায়াবেটিকস বা এধরনের অন্যান্য স্থায়ী রোগ যা থেকে রোগীর আরোগ্য লাভের আশা করা যায় না। এ শ্রেণীর রোগী রামাযান মাসে ছিয়াম পালন বর্জন করতে পারবে এবং প্রতিদিনের ছিয়ামের বদলে একজন মিসকীন খাওয়ানো তার উপর আবশ্যক হবে। ঠিক যেমন অতিশয় বৃদ্ধ এবং বৃদ্ধা যারা ছিয়াম পালনে সক্ষম নয় তারা করে থাকেন- ছিয়াম না রেখে প্রতিদিনের বদলে একজন মিসকীন খাওয়ান। এর সপক্ষে কুরআনের দলীল হচ্ছে, আল্লাহ তা‘আলার বাণী, ‘আর যাদের জন্য ছিয়াম রাখা কষ্টকর হবে, তাদের কর্তব্য হল এর পরিবর্তে ফিদিয়া স্বরূপ একজন মিসকীনকে খাদ্য প্রদান করা’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১৮৪; ফাতাওয়াউছ ছিয়াম, পৃ. ১১১)।

উল্লেখ্য যে, খাদ্যদ্রব্যের পরিবর্তে অর্থ প্রদান করলে ফিদিয়া আদায় হবে না। মিসকীনকে স্থানীয় খাদ্য দ্রব্য খাদ্য খাওয়াতে বা প্রদান করতে হবে। প্রতিদিনের ছিয়ামের পরিবর্তে স্থানীয় এলাকায় প্রচলিত খাদ্য দ্রব্যের অর্ধ ছা‘ প্রদান করতে হবে। অর্ধ ছা‘ এর পরিমাণ প্রায় দেড় কেজি। অতএব স্থানীয় খাদ্যদ্রব্য দিয়েই ফিদিয়া দিতে হবে, অর্থ দিয়ে নয়। কেননা আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, ‘আর যাদের জন্য ছিয়াম রাখা কষ্টকর হবে, তাদের কর্তব্য হল এর পরিবর্তে ফিদিয়া স্বরূপ একজন মিসকীনকে খাদ্য দ্রব্য প্রদান করা’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১৮৪)। উক্ত আয়াতে স্পষ্টভাবে খাদ্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে (আল-মুনতাক্বা মিন ফাতাওয়া শায়খ ছালিহ আল-ফাওযান, ৩/১৪০ পৃ.; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-৬৬৮৮৬)।

প্রশ্নকারী : তাহমীদ, ঢাকা।





প্রশ্ন (২৪) : মুওয়াযিযন আযান দেয়ার সময় মসজিদে প্রবেশ করলে ‘তাহিয়্যাতুল মসজিদ’ পড়া শুরু করবে না দাঁড়িয়ে থেকে মুওয়াযিযনের জবাব দিবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৯) : মৃত ব্যক্তির নামে ইফতার মাহফিল করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২২) : জাহান্নামের স্তর কয়টি? কারা কোন্ স্তরে প্রবেশ করবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৪) : হজ্জ মানুষের পাপকে ধুয়ে দেয়, যেভাবে পানি ময়লাকে ধুয়ে দেয়। এই হাদীছটি কি ছহীহ? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২২) : তিনতলা বিশিষ্ট মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। সেখানে সিরামিক ইট ব্যবহার করে সুন্দর করা হচ্ছে। এটা দেখে এলাকার লোকেরা ঠাট্টা করে বলাবলি করছে এখান থেকেই ক্বিয়ামত শুরু হবে। এভাবে বলা কি জায়েয?   - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৫) : আমি একজন নার্স, মাঝে মধ্যে কোন কোন রোগী আমাকে খুশি হয়ে ১০০ বা ২০০ টাকা দেয়, আবার কখনো খাবার খেতে দেয়, এই টাকা ও খাবার গ্রহণ করা কি ঘুষ বা হারাম হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৮) : জনৈক বক্তা বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, ‘আমি প্রত্যেক তাক্বওয়াশীল ব্যক্তির দাদা’। উক্ত বক্তব্য কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২১) : জনৈক ব্যক্তি লিখেছেন, ‘ঈমানকে মাখলূক বললে কাফির হবে’। এ ব্যাপারে আমাদের আক্বীদা কেমন হবে? অন্তরের বিশ্বাস, মুখে স্বীকৃতি ও কর্মে বাস্তবায়ন এগুলো কী মাখলূক? এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর কী হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৭) : রামাযানের ছিয়াম অবস্থায় ইনজেকশন নিলে কি ছিয়াম নষ্ট হয়ে যাবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩২) : মাছ মরে পানির উপরে ভেসে উঠলে তা খাওয়া বৈধ হবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৬) : পরবর্তীতে মূল্য বৃদ্ধির আশায় আলু-পেঁয়াজ ইত্যাদি নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য স্টক রাখার ব্যাপারে শরী‘আতের বিধান কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৬) : বাবার অনুমতি ব্যতীত ছেলে ও মেয়ে প্রেম করে বিয়ে করে। বিবাহের অনুষ্ঠানে মেয়ের বড় বোন ও বাগিনা উপস্থিত ছিল। এমনকি বিবাহের পর তারা পালিয়েও যায়নি বরং নিজ নিজ বাড়ি চলে যায়। পরবর্তীতে উভয়ের পিতা-মাতার সম্মতি ও আত্মীয়-স্বজন নিয়ে মেয়ের বাড়ি থেকে মেয়েকে অনুষ্ঠান করে আনা হয় এবং পরের দিন ওয়ালীমা করা হয়। প্রশ্ন হল- তাদের এই বিবাহ কি বৈধ হয়েছে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ

ফেসবুক পেজ