রবিবার, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৭:৫৫ পূর্বাহ্ন
উত্তর : উক্ত দাবী সঠিক নয়। মূলত তারা উক্ত দাবীর পক্ষে নিম্নোক্ত বর্ণনা পেশ করে থাকেন।

أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنِ الزُّبَيْرِ رَاىَ رَجُلًا يَرْفَعُ يَدَيْهِ فِى الصَّلَاةِ عِنْدَ الرُّكُوْعِ وَعِنْدَ رَفْعِ رَأْسِهِ مِنَ الرُّكُوْعِ فَقَالَ لَا تَفْعَلْ فَإنَّ هَذَا شَيْىٌ فَعَلَهُ رَسُوْلُ اللهِ ثُمَّ تَرَكَهُ

‘একদা আব্দুল্লাহ ইবনু যুবাইর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) এক ব্যক্তিকে দেখলেন, ছালাতে রুকূতে যাওয়ার সময় ও রুকূ হতে উঠার সময় রাফ‘উল ইয়াদায়েন করছে। তিনি তখন বললেন, তুমি এটা কর না। কারণ এগুলো সবই রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) করেছেন, তবে পরবর্তীতে বাদ দিয়েছেন’ (ছহীহ বুখারী, ১/১০২ পৃ, টীকা দ্র.)।
অথচ উক্ত বর্ণনা মিথ্যা ও বাতিল। রাফ‘উল ইয়াদায়েনের প্রসিদ্ধ আমলকে প্রতিরোধ করার জন্য উক্ত মিথ্যা বর্ণনা রচনা করা হয়েছে। কারণ উক্ত বর্ণনা কোন হাদীছ গ্রন্থে পাওয়া যায় না। যেমন মুওয়াত্ত্বা মুহাম্মাদের ভাষ্যকার বলেন,

لَكِنَّ هَذَا الْأَثَرَ لَمْ يَجِدْهُ الْمُخَرِّجُوْنَ الْمُحَدِّثُوْنَ مُسْنَدًا فِىْ كُتُبِ الْحَدِيْثِ مَعَ أَنَّهُ أَخْرَجَ الْبُخَارِىٌّ فِىْ رِسَالَةِ رَفْعِ الْيَدَيْنِ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ الزُّبَيْرِ أَنَّهُ كاَنَ يَرْفَعُ يَدَيْهِ عِنْدَ الْخَفْضِ وَالرَّفْعِ

‘কিন্তু এই আছারের সন্ধান কোন মুহাদ্দিছ কোন হাদীছ গ্রন্থে পাননি। বরং ইমাম বুখারী তার ‘রাফ‘উল ইয়াদায়েন’ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন যে, আব্দুল্লাহ ইবনু যুবাইর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) রুকূতে যাওয়া ও রুকূ থেকে উঠার সময় রাফ‘উল ইয়াদায়েন করতেন’ (মুওয়াত্ত্বা মুহাম্মাদ, তাহক্বীক্ব : ড. তাক্বিউদ্দীন নাদভী হা/১০৪-এর ব্যাখ্যা দ্র.)। অথচ ‘হেদায়া’ কিতাবে বলা হয়েছে, وَاَلَّذِىْ يُرْوَى مِنْ الرَّفْعِ مَحْمُوْلٌ عَلَى الِابْتِدَاءِ كَذَا نُقِلَ عَنِ ابْنِ الزُّبَيْرِ ‘রাফ‘উল ইয়াদায়েন সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে, তা মূলত ইসলামের প্রথম যুগের বিষয়। যেমন ইবনু যুবাইর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত হয়েছে’ (হেদায়া ১/১১১ পৃ.)। সেই সাথে হেদায়ার টীকাকার হাশিয়ার মধ্যে ইবনু যুবাইরের বর্ণনা উল্লেখ করেছেন (হেদায়াহ ১/১১১ পৃ., টীকা নং-৬; আল-ইনায়াহ শারহুল হেদায়াহ ২/৪ পৃ.)। তাছাড়া বাংলায় অনুবাদ করতে গিয়ে অনুবাদকমণ্ডলী টীকায় উক্ত বর্ণনা উল্লেখ করেছেন (আল-হিদায়াহ ১ম খণ্ড, পৃ. ৮৬)। অথচ তার যে কোন ভিত্তি নেই সে বিষয়টি লক্ষ্য করেননি। এই মিথ্যাচার সম্পর্কে অনুবাদকমণ্ডলীকে আল্লাহ জিজ্ঞেস করলে তারা কী জবাব দিবেন?
আরো আফসোসের বিষয় হল, ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) ছহীহ বুখারীতে রাফ‘উল ইয়াদায়েনের পাঁচটি হাদীছ পেশ করেছেন। সেই হাদীছগুলোকে রদ করার জন্য তার টীকায় ভাষ্যকার আহমাদ আলী সাহারাণপুরী উক্ত মিথ্যা বর্ণনা উল্লেখ করেছেন (বুখারী (ভারতীয় ছাপা) ১/১০২ পৃ., টীকা দ্র.)। অনুরূপভাবে আধুনিক প্রকাশনী কর্তৃক প্রকাশিত সহীহ আল-বুখারীতে রাফঊল ইয়াদায়েনের হাদীছগুলোকে যবাই করার জন্য উক্ত বানোয়াট বর্ণনা পেশ করা হয়েছে এবং এই অত্যধিক গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাতকে বাতিল আখ্যা দেয়া হয়েছে (সহীহ আল-বুখারী ১ম খণ্ড, পৃ. ৩২১-৩২২)। অনুবাদকমণ্ডলী এবং প্রকাশক বিচারের মাঠে আল্লাহর সামনে কী জবাব দিবেন?
সুধী পাঠক! এটাই হল ফেক্বহী গ্রন্থের আসল চেহারা। মাযহাবকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য হাদীছের উপর এভাবেই আক্রমণ করা হয়েছে। অন্যদিকে আব্দুল্লাহ বিন যুবাইর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর উপর মিথ্যাচার করা হয়েছে। কারণ তিনি যে নিজেই রাফ‘উল ইয়াদায়েন করতেন তার প্রমাণে ইমাম বুখারী ছহীহ হাদীছ বর্ণনা করেছেন।

عَنْ عَطَاءٍ قَالَ رَأَيْتُ أَبَا سَعِيْدٍ الْخُدْرِيَّ وَابْنَ عُمَرَ وَابْنَ عَبَّاسٍ وَابْنَ الزُّبَيْرِ يَرْفَعُوْنَ أَيْدِيَهُمْ

আত্বা (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, আমি আবু সাঈদ খুদরী, ইবনু ওমর, ইবনু আব্বাস ও ইবনু যুবাইর (রাযিয়াল্লাহু আনহুম)-কে দেখেছি, তারা সকলেই ছালাতে রাফ‘উল ইয়াদায়েন করতেন (মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ হা/২৪৪৫; মুছান্নাফ আব্দুর রাযযাক হা/২৫২৫; সনদ ছহীহ, সিলসিলা যঈফাহ হা/৬০৪৪-এর আলোচনা দ্র.; বুখারী, রাফ‘উল ইয়াদায়েন হা/১৬ ও ৫৭)। অতএব সকলকে ছহীহ দলীলের দিকে ফিরে আসতে হবে। বানোয়াট বর্ণনা ও প্রতারণা থেকে সাবধান থাকতে হবে।


প্রশ্নকারী : রিয়াযুল ইসলাম চৌধুরী, ঢাকা।




প্রশ্ন (৩) : রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি সামনে ও পিছনে উভয় দিকে দেখতে পেতেন? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৯) : ফুযাইল ইবনু ই‘যায (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, لَوْ أَنَّ لُوْطِيًّا اغْتَسَلَ بِكُلِّ قَطْرَةٍ مِّنَ السَّمَاءِ لَقِيَ اللهَ غَيْرَ طَاهِرٍ ‘সমকামী ব্যক্তি যদি আকাশের সমস্ত পানি দিয়ে গোসল করে তারপরও সে অপবিত্র অবস্থায় আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করবে’ (যাম্মুল লিওয়াত্ব, দুরী, পৃ. ১৪২; ইসলাম ওয়েব, ফৎওয়া নং-২৪৩৬৭৩)। প্রশ্ন হল- কোন সমকামী ব্যক্তি ভুল বোঝার পরে অনুতপ্ত হয়ে যদি ইখলাছের সাথে তওবাহ করে, তাহলে কি তার সমকামের পাপ ক্ষমা হবে এবং সে কি অপবিত্র অবস্থায় আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করতে পারবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৯) : নাভির নিচের পশম কোন্ জায়গা থেকে কাটতে হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২২) : ‘যে ব্যক্তি খুশি মনে, নেকীর আশায় কুরবানীর পশু যবেহ করবে, তার জন্য সে পশু জাহান্নামের ঢাল হবে’। উক্ত হাদীছের সনদ সম্পর্কে জানতে চাই। - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১০) : মসজিদের পশ্চিম দিকে কবর থাকলে ঐ মসজিদে ছালাত আদায় করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৮) : ট্রান্সজেন্ডার বা হিজড়াদের ব্যাপারে একজন মুমিনের কেমন ধারণা থাকা উচিত? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৬) : যে বিয়েতে ছবি তোলা, ভিডিও ও গান বাজনা করা হয় এবং নারী-পুরুষ একাকার হয়ে খানা খায় সেই বিয়েতে যাওয়া যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩১) : দুই সিজদার মাঝখানে যে দু‘আ পড়া হয় সেটি ওয়াজিব, না-কি সুন্নাত? এই দু‘আ পড়েছি নাকি পড়িনি এমন সন্দেহ হলে সাহু সিজদা দিতে হবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৪১) : কাউকে উৎসাহ দিতে হাততালি দেয়া যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৩) : জনৈক আলেম বলেন, ফজরের পর ঘুমানো যাবে না। কারণ এই সময় বরকত নাযিল হয়। উক্ত বক্তব্য কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৩) : গোসলের ফরয কয়টি ও কী কী? অনেকে মনে করেন কুলি ও নাকে পানি না দিলে গোসল হবে না। এই বক্তব্য কি ছহীহ? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৫) : কোন্ কোন্ রক্ত বের হলে ছিয়াম ভেঙ্গে যাবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ

ফেসবুক পেজ