সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ০৭:৪২ অপরাহ্ন

 ইসলামী জামা‘আতের মূল স্তম্ভ

-ড. মুহাম্মাদ মুছলেহুদ্দীন*


(৪র্থ কিস্তি)

৫). সহজাত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও সক্ষমতা  


সহজাত মেধা, বিনয় ও সাহসিকতা মানুষকে বড় হতে ও বৃহত্তর দায়িত্ব পালনের যোগ্যতা লাভে সহযোগিতা করে। অর্জিত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা তাকে আরো সমৃদ্ধ করে তোলে। বিখ্যাত ইংরেজ কবি ও নাট্যকার উইলিয়াম সেকেস্পিয়ারের (William Shakespeare) একটি বক্তব্য প্রবাদ-বাক্যে রূপান্তরিত হয়েছে, তাহলো,

Some are born great, some achieve greatness and some have greatness thrust upon them”. 

“কেউ কেউ বড়ত্ব নিয়েই জন্মে, কেউ কেউ বড়ত্ব অর্জন করে, আর কারো কারো উপর বড়ত্ব চাপিয়ে দেয়া হয়।” তবে এ সব কিছুর যথাযথ ও ইতিবাচক সমন্বয় ঘটলে সেটা খুবই উত্তম।

জনগণকে কল্যাণকর নেতৃত্ব দেয়া এবং তাদেরকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করার পারঙ্গমতা, প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনে ও ফায়ছালা করার ভার বহনে দক্ষতা, জনগণের মানসিকতা ও পরিস্থিতি বুঝার ক্ষমতা, সমস্যা সমাধানের জন্য বিচক্ষণতাপূর্ণ প্রজ্ঞা, দ্বীন-ধর্ম ও নাগরিকদের স্বার্থ রক্ষার কর্তব্যপালনে নিষ্ঠা ও তৎপরতা, যথাস্থানে প্রয়োজনীয় সৎসাহস ও দৃঢ়তা প্রদর্শন- ইত্যাদি যথাযথ যোগ্যতার অন্তর্গত। রাষ্ট্রীয় আমীরের জন্য বিভিন্ন ধরনের অপরাধের দ- কার্যকর করা, সার্বিক পরিস্থিতি ইতিবাচক ও শান্তিপূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা, দেশরক্ষা ও যুদ্ধ পরিচালনার জন্য দ্বিধাহীন নিঃশঙ্ক সাহসিকতা ও দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করা আবশ্যক।[১] রাষ্ট্রীয় শাসকের সক্ষমতার ব্যাখ্যায় আল্লামাহ্ ইবনু খালদূন বলেন,

"وأمَّا الكِفايةُ، فهُو أنْ يَكونَ جَرِيئًا عَلى إقامَة الحُدودِ واقتِحامِ الحُروب، بَصيرًا بِها كَفيلًا، يَحمِلُ الناسَ عَليها، عارِفًا بالعَصَبِيَّة وأحوالِ الدّهاءِ، قَوِيًا على مُعاناةِ السِياسة؛ لِيَصِحَّ لَه بِذلك مَا جُعِل إليه مِن حِمايَةِ الدِّين وجِهاد العَدو وإقامةِ الأحكامِ وتَدبِيرِ المَصالِحِ".

‘সক্ষমতা হলো যে, তিনি আল্লাহ’র দণ্ডবিধি কায়েম করতে ও যুদ্ধাভিযানে সাহসী হবেন। এ বিষয়ে বিজ্ঞ ও দায়িত্বশীল হবেন এবং জনগণকে এদিকে উদ্বুদ্ধ করবেন। জোঠবদ্ধতা এবং বলয়ীকরণ ও ধূর্ত-ধান্ধাবাজদের বিষয়ে অভিজ্ঞ হবেন, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ঝক্কি-ঝামেলা শামলাতে সমর্থ হবেন; যাতে করে তাঁর উপর দ্বীন রক্ষা, দুশমনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা এবং হুকুম আহকাম বাস্তবায়ন করা ও জনকল্যাণকর কার্যক্রম পরিচালনার যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, তা তিনি সঠিকভাবে পালন করতে পারেন’।[২]

প্রখ্যাত আহলেহাদীছ নেতা আল্লামাহ্ আব্দুল্লাহেল কাফী সাহেব বলেছেন, “অভিজ্ঞতা একটি আপেক্ষিক বস্তু, যুগ ও প্রয়োজনের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অভিজ্ঞতাও বিভিন্ন রূপী হইয়া পড়ে। বর্তমান কালে এমন অনেক বিষয়ে বিদ্যা ও অভিজ্ঞতার প্রয়োজন দেখা দিয়াছে যে, অতীতকালে হয়তো সেগুলির আদৌ প্রয়োজন ছিল না। সুতরাং বর্তমান যুগে ইসলামী রাষ্ট্রের অধিনায়ক এবং তাঁহার পার্লাম্যান্টকে (Parliament) শুধু ব্যবহারিক (ফিক্হী) মছ্আলাসমূহে বিশেষজ্ঞ হইলে চলিবে না, তাঁহাদের পক্ষে আন্তর্জাতিক বিধান ও চুক্তিসমূহেও অভিজ্ঞ হওয়া আবশ্যক- বিভিন্ন জাতির সামাজিক, রাষ্ট্রীয় এবং অর্থনৈতিক অবস্থাও তাঁহাদের সম্মকরূপে অবগত হওয়া আবশ্যক। ইসলামী রাষ্ট্রসমূহের সহিত শত্রুভাবাপন্ন রাজ্যগুলির কূটনৈতিক চালবাজী এবং তাহাদের এবং অন্যান্য রাজ্যসমূহের রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক এবং আন্তর্জাতিক যোগাযোগ সম্বন্ধে প্রসারিত ও সুগভীর দৃষ্টিশক্তি লাভ করা প্রয়োজন। গতানুগতিকতা ও অন্ধ অনুসরণবৃত্তি কেবল ব্যবহারিক শাস্ত্রেই দোষাবহ নয়, রাজনৈতিক জীবনে উহা জাতির পক্ষে মৃত্যুবাণ।”[৩]

সাংগঠনিক আমীরের জন্য উপর্যুক্ত যোগ্যতা ও গুণাবলীর যা কিছু প্রযোজ্য তা অবশ্যই তাঁর মধ্যে থাকতে হবে অথবা অর্জন করতে হবে। তবে তাঁর নিজস্ব সীমা প্রসঙ্গে তাঁকে অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে যা লঙ্ঘন করা অসঙ্গত। তিনি তার সংগঠনের সৃঙ্খলা রক্ষায় পারঙ্গম, ন্যায়সঙ্গত প্রয়োজনীয় সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণে দ্বিধাহীন, অভ্যন্তরীণ সমস্যা সমাধানে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ও ন্যায়ানুগ ফয়ছালাহ্ করতে অকুতোভয়।  উপরন্তু সার্বিক পরিস্থিতির ইতিবাচক ও নেতিবাচক ক্রিয়া- প্রতিক্রিয়া অনুধাবনে সক্ষম এবং উদ্ভূত সমস্যাবলী  মোকাবেলায় সাহসী, বিচক্ষণ ও সিদ্ধহস্ত।

উল্লেখ্য যে, ইমাম আল-মাওয়ার্দী শাসকের কয়েকটি মৌলিক দায়িত্ব ও কর্তব্যের কথা উল্লেখ করেছেন।[৪] আর শাসক যদি তার উপর আরোপিত আল্লাহ’র ও উম্মাতের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্যগুলো পালন করেন তাহলে উম্মাতের জন্য ওয়াজিব কর্তব্য হলো তাঁর প্রাপ্য হক্ বুঝিয়ে দেয়া অর্থাৎ আনুগত্য করা ও সহযোগিতা করা।[৫] আর নেতৃত্ব ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রের সাথে সম্পর্কিত এ জাতীয় সহজাত ও স্বাভাবিক যোগ্যতার অভাবের দরুনই নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অতি মর্যাদাবান প্রখ্যাত ছাহাবী আবূ যার গিফারী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে যে কোন ধরনের নেতৃত্ব, প্রশাসনিক দায়িত্ব, সালিশ-দরবার ও বিচারকার্যের দায়িত্ব এমনকি ইয়াতীমের সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণের ভার গ্রহণ করতে নিষেধ করেছেন।[৬]

দুনিয়া-বিখ্যাত কলম-সৈনিক ইমাম ইবনু হাযম এক্ষেত্রে বলেছেন,

إنَّالسَّفِيهَ والضعِيفَ ومَن لا يَقدِر عَلى شَيئ فلا بُدّ له مِن وليّ، و مَن لا بدّ له مِن وليّ؛ فلا يَجُوز أنْ يَكونَ وَليًّا لِلمُسلمين. ... يُستَحب أن يَكون عالمًا بِما يخصُّه مِن أمورِ الدِينِ مِن العِبادات والسِّياسة و الأحكام، مُؤدِّيا لِلفَرائض كُلّها لا يَخل بِشيئ مِنها مُجتَنبا لِجَميع الكَبائر سِراً و جَهراً مُستتراً بالصَّغائر إنْ كانَت مِنه. فهَذه أربعُ صفات يُكره أن يلي الأمّة مَن لَم يَنتَظمْها. فإنْ وَلِي فوِلايتُه صَحيحَة و نَكرَهها؛ وطاعَته فِيما أطاعَ اللهَ فِيه واجِبة و مَنْعه مِمَّا لَم يُطع اللهَ فِيه واجِب".

“বোধ-শক্তিতে দুর্বল, শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে কমজোর এবং যে নিজে কিছু করতে পারে না বরং তার জন্য অন্য দায়িত্বশীলের প্রয়োজন; আর যার নিজের ক্ষেত্রেই অন্য তত্ত্বাবধায়কের প্রয়োজন তার জন্য মুসলিমদের দায়িত্বভার গ্রহণ করা বৈধ নয়। ... তাঁর (নেতৃত্বের) জন্য উত্তম হলো, তিনি তাঁর সাথে সংশ্লিষ্ট দ্বীনি বিষয়াদি: ইবাদত-বন্দেগি, রাজনীতি-প্রশাসন ও হুকুম-আহকাম তথা আইন-কানুন, বিচার-ফয়ছালাহ্ ইত্যাদির জ্ঞান রাখবেন। তিনি সকল ধরনের ফরয পালনকারী হবেন, এর কোনটাতেই ত্রুটি করবেন না এবং সকল প্রকাশ্য ও গোপনীয় কাবীরাহ্ গুনাহ বর্জন করে চলবেন এবং ছাগীরাহ্ গুনাহ যদি তার দ্বারা হয়েই যায়, তা যেন গোপনে হয় প্রকাশ্যে নয়। আর এই চারটি গুণ যে রপ্ত করতে না পারবে তার জন্য উম্মতের দায়িত্ব গ্রহণ করা মাকরূহ (অসঙ্গত)। যদি এমন কেউ দায়িত্ব গ্রহণ করেই ফেলেন; তাহলে তার সে দায়িত্বপালন বৈধ; তবে আমরা তা মাকরূহ মনে করি। তিনি যতটুকু আল্লাহ’র ইতা‘আত করবেন ততটুকুতে তাঁর আনুগত্য করা ওয়াজিব আর তিনি যতটুকুতে আল্লাহ’র ইতা‘আত করবেন না ততটুকুতে তাকে বাধা দেয়া ওয়াজিব।”[৭]

ইমাম ইবনু হাযম আরো বলেছেন :

فإن استَوَيا في الفَضلِ قدِّم الأسوَس، نعم، وإن كان أقلَّ فضلًا، إذا كان مؤدِّياً للفَرائض والسُّنَن مُجتَنبًا لِلكَبائر مُستَتِرًا بِالصَّغائر؛ لأنّ الغَرضَ مِن الإمامَة حُسن السيِّاسَةِ والقُوّة عَلى القِيام بِالأمُور".

“এক্ষেত্রে দু’জন লোকের যোগ্যতা যদি সমান হয়, তাহলে তাদের মধ্যে যে রাজনীতি ও প্রশাসনিক দিক থেকে অধিক যোগ্য তাকে প্রাধান্য দিতে হবে যদিওবা তার ফযীলত (আমলদারি) তুলনামূলকভাবে কম থাকে, যদি সে ফরয ও সুন্নাত আদায়কারী হয়, কাবীরাহ্ গুনাহ্গুলো বর্জনকারী হয় এবং ছাগীরাহ্ গুনাহ’র ক্ষেত্রে গোপনীয়তা অবলম্বনকারী হয়; কেননা ইমামত তথা নেতৃত্বের উদ্দেশ্যই হলো সুদক্ষ রাজনীতি ও প্রশাসন এবং (জনগণের) দায়িত্বসমূহ পালন ও কার্যকর করার শক্তি-সামর্থ্য।”[৮]

এখানে প্রসঙ্গত ইতালির প্রখ্যাত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী মেকিয়েভেলি (Machiavell) (১৪৬৯-১৫২৭ খ্রি.) কর্তৃক উত্থাপিত নেতৃত্বের যোগ্যতার কথাও উঠতে পারে। তিনি বলেছেন : “নেতাকে অবশ্যই সিংহ ও শিয়ালের সম্মিলিত গুণাবলী অর্জন করতে হবে।” (A Prince should combine the qualities of a foxand a lion.) লক্ষ্য পর্যন্ত পৌঁছার জন্য যে কোন পন্থা অবলম্বন করা বৈধ (End justifies the means.) জোর যার রাজ্য তার, আর ক্ষমতাবানই সকল কিছু তার নিজের মত করে নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন করার অধিকারী : (Might is right.) এবং ক্ষমতা লাভ করা ও তাতে টিকে থাকার জন্য যত ধরনের দুর্নীতি, অসততা,  নীচুতা ও দ্বিমুখী চরিত্রের (Double standard of morality) প্রয়োজন তা গ্রহণ করা যেতে পারে ইত্যাদি ইত্যাদি। যেহেতু মেকিয়েভেলী তার যুগের পরিস্থিতি অনুযায়ী নেতার গুণাবলীর বর্ণনা দিয়েছেন এবং তার ধারণা অনুযায়ী মানুষ অকৃতজ্ঞ, চঞ্চল, প্রতারক, কাপুরুষ ও লোভাতুর।[৯]

সুতরাং তাদেরকে নেতৃত্ব দেয়া ও শাসন করার জন্য অতি মাত্রায় পাশবিক গুণাবলী, অনৈতিক মানসিকতা ও স্বৈরাচারী আচরণ ছাড়া সম্ভবপর নয়। আর মেকিয়েভিলি কোন মানব-হিতৈষী নেতা কিংবা সমাজ সংস্কারক অথবা মানুষের নৈতিক উন্নতির প্রবক্তাও ছিলেন না; বরং তিনি একজন বিশ্লেষক ও এ সকল বিষয়ে ইতিবাচক দিক নিয়ে একদম হতাশ ব্যক্তি। সুতরাং তাঁর জন্য এ ধরনের নেতিবাচক চিন্তা করা ও বক্তব্য দেয়া অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু ইসলাম মানুষকে মৌলিকভাবে পাশবিক, ধূর্ত ও হিংস্রতাপ্রবণ হিসাবে গ্রহণ করেনি, বরং মানুষ মৌলিকভাবে সৎ, সততাপ্রবণ এবং মানবিক; আর নীতি-নৈতিকতা ও সদাচরণ তাকে পশু থেকে বিশেষভাবে আলাদা করে- এটাই ইসলামের দিকদর্শন। তদুপরি ইসলাম ও এর নেতৃত্ব হতাশাভিত্তিক ও নেতিবাচক নয়; বরং আশাবাদী, ইতিবাচক ও উন্নয়নকামী। মানুষের উত্তম স্বভাব গড়ে তোলা, সুকুমারবৃত্তিগুলোর উৎকর্ষ সাধন করা, উৎকৃষ্ট আদব-আখলাক চর্চা করা, সর্বত্র মানবিক নৈতিকতা প্রতিষ্ঠা এবং সুশৃঙ্খল কল্যাণকর সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করা- এর বিশেষ লক্ষ্য ও কর্তব্য। সুতরাং মেকিয়েভেলি কর্তৃক মানবিক আবাসস্থলকে অপরিবর্তনীয় অনাবাসযোগ্য জঙ্গল ধরে নেয়া এবং মানুষের সংশোধনযোগ্য ত্রুটিগুলোকে স্থায়ী হিসাবে মেনে নিয়ে শাসককে সিংহের মত হিংস্রতাপূর্ণ সাহসী ও শিয়ালের মত ধূর্ততাপূর্ণ চতুর ও প্রতারক হওয়ার পরামর্শ দেয়া-ইসলামে আদৌ গ্রহণযোগ্য নয়।‎

৬). ইন্দ্রিয়সমূহ ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সুস্থতা 


আল্লাহ তা‘আলা বাদশাহ ত্বালূত প্রসঙ্গে বলেছেন,

وَ زَادَہٗ بَسۡطَۃً فِی الۡعِلۡمِ وَ الۡجِسۡمِ.

“তিনি তাকে বিস্তÍর জ্ঞান ও প্রচুর দৈহিক শক্তি দিয়েছেন।” (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২৪৭)।

ইন্দ্রিয়সমূহের সুস্থতা বলতে- চোখ, কান, জিহ্বা ইত্যাদির সুস্থতা আর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সুস্থতা বলতে- মস্তিষ্ক, বোধ ও ধীশক্তি (‘আকল), হাত-পা সহ দেহের এমন ধরনের সুস্থতা যার ত্রুটি থাকলে চিন্তাভাবনা ও প্রয়োজনীয় চলাফেরা বিঘ্নিত হয়। (এ অধ্যায়ের সূচনাতেই এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।)

এমন ইন্দ্রিয় ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যা না থাকলে রাষ্ট্র পরিচালনায় সমস্যা হয় না বা যার বিকল্প সম্ভব, সেগুলো কোন মৌলিক সমস্যা হিসাবে গণ্য হবে না। যেমন কোন শাসকের পা নেই কিন্তু যানবাহন ও সহযোগীদের মাধ্যমে তার উদ্দেশ্য (চলাফেরা, যাতায়াত) বাস্তবায়ন সম্ভব- এক্ষেত্রে পা থাকা জরুরী নয়। কিন্তু যেগুলোর কোন বিকল্প নেই যেমন মেধা, প্রজ্ঞা, বিচারবুদ্ধি, মানসিক শক্তি ইত্যাদি যদি না থাকে; তাহলে তিনি এক্ষেত্রে মৌলিক যোগ্যতাই হারিয়েছেন বলে গণ্য হবেন।”[১০]

(ইনশাআল্লাহ চলবে)

তথ্যসূত্র : 
[১]. আল-আহকাম আস-সুলত্বানিয়্যাহ, আল-মাওয়ার্দী, পৃ. ৬; মুকাদ্দিমাহ্, ইবনু খালদূন, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৪২; আন্-নিযামুস্সিয়াসী ফিল ইসলাম, ড. আল-খাইয়াত, পৃ. ১৬১।
[২]. মুকাদ্দিমাহ, ইবনু খলদূন, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৪১।
[৩]. পাকিস্তানের ইসলামী শাসন সংবিধান, মাসিক তর্জুমানুল হাদীছ, ২য় বর্ষ, ৯ম সংখ্যা, রামাযান, ১৩৭০ হি., পৃ. ৩৯৬-৩৯৭।
[৪]. আল-আহকাম আস-সুলত্বানিয়্যাহ্, পৃ. ১৫-১৬। (এ অধ্যায়ের প্রথম দিকে উল্লেখ করা হয়েছে)।
[৫]. প্রাগুক্ত, ১৭।
[৬]. ছহীহ মুসলিম, আল-ইমারাহ, হা/৪৭১৯, ৪৭২০।
[৭]. আল-ফিছাল ফিল-মিলাল, ইবনু হাযম, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ১২৯।
[৮]. প্রাগুক্ত, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ১৩১।
[৯]. রাষ্ট্রবিজ্ঞানের কথা, প্র. ড. এমাজুদ্দিন, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৯৬।
[১০]. বিস্তারিত দেখুন : গিয়াছুল উমাম, আবুল মা‘আলী আল-জুয়াইনী, পৃ. ৭৭-৭৯, আল-আহকাম আস-সুলত্বানিয়্যাহ্. আল-মাওয়ার্দী, পৃ. ১৭-২০ মুকাদ্দিমাহ, ইবনু খালদূন, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৪২।




ইমাম মাহদী, দাজ্জাল ও ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এর আগমন সংশয় নিরসন (৫ম কিস্তি) - হাসিবুর রহমান বুখারী
আধুনিক যুগে দাওয়াতী কাজের পদ্ধতি (২য় কিস্তি) - মুকাররম বিন মুহসিন মাদানী
বিদ‘আত পরিচিতি (১২তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
বিদ‘আত পরিচিতি (২৬তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরা (২য় কিস্তি) - অনুবাদ : হাফীযুর রহমান বিন দিলজার হোসাইন
ছালাতে একাগ্রতা অর্জনের ৩৩ উপায় (৩য় কিস্তি) - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
ইসলামী তাবলীগ বনাম ইলিয়াসী তাবলীগ (শেষ কিস্তি) - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
ফাযায়েলে কুরআন (৬ষ্ঠ কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
ইসলামী পুনর্জাগরণের মূলনীতি (৩য় কিস্তি) - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
বিদ‘আত পরিচিতি (৩২তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
ইসলামী জামা‘আতের মূল স্তম্ভ (১২তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ মুছলেহুদ্দীন
মাতুরীদী মতবাদ ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ (১৫তম কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম

ফেসবুক পেজ