রবিবার, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৫:০০ অপরাহ্ন
উত্তর : এ রকম কোন তথ্য পাওয়া যায় না। তবে ছহীহ হাদীছের আলোকে প্রমাণিত হয় যে, নবী (ﷺ) ক্বিয়ামতের দিন বিভিন্ন স্থানে উপস্থিত থাকবেন। যেমন আনাস ইবনু মালিক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, আমি রাসূল (ﷺ)-এর নিকট নিবেদন করলাম যে, তিনি যেন ক্বিয়ামতে দিন আমার জন্য সুপারিশ করেন। তিনি বললেন, ঠিক আছে আমি সুপারিশ করব। আমি তাঁকে প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! আমি আপনাকে কোথায় খোঁজ করব? তিনি বললেন, সর্বপ্রথম তুমি আমাকে পুলছিরাতের নিকটে খোঁজ করবে। আমি বললাম, পুলছিরাতে যদি আপনাকে না পাই? তিনি বললেন, তাহলে মীযানের নিকটে খুঁজবে। আমি আবার বললাম, মীযানের নিকটেও যদি আপনাকে না পাই? তিনি বললেন, তাহলে হাওযে কাওছারের সামনে খুঁজবে। আমি এ তিনটি জায়গার যে কোন একটিতে অবশ্যই উপস্থিত থাকব (তিরমিযী, হা/২৪৩৩; মিশকাত, হা/৫৫৯৫; সনদ হাসান, তা’লীকুর রাগীব, ৪/২১১ পৃ.)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘অতঃপর মানুষ ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশের জন্য বিভিন্ন নবীর কাছে যাবে। যার কাছেই যাবে তিনিই অস্বীকার করবেন। রাসূল (ﷺ) বলেন, অতঃপর তারা আমার নিকটে আসবে। আমি তখন যাবো এবং ফাহছ‘ -এর উপর সাজদায় পড়ে যাব।

আবূ হুরাইরা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) জিজ্ঞেস করেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! ফাহছ কী জিনিস?’ তিনি উত্তরে বলেন, ওটা হচ্ছে আরশের সামনের অংশ। তখন আল্লাহ তা‘আলা একজন ফেরেশতা পাঠাবেন। তিনি আমাকে আমার বাহু ধরে উঠাবেন। মহামহিমান্বিত আল্লাহ আমাকে সম্বোধন করে বলবেন, ‘আপনি কী বলতে চান?’ আমি আরয করব- হে আমার রব! আপনি আমাকে সুপারিশ করার অধিকার প্রদানের ওয়াদা করেছেন। অতএব সেই অধিকার আমাকে প্রদান করুন এবং লোকদের মধ্যে ফায়সালা করুন। আল্লাহ তা‘আলা তখন বলবেন, ‘আচ্ছা ঠিক আছে। তুমি সুপারিশ করতে পার এবং আমি লোকদের মধ্যে ফায়সালা করবো’। রাসূল (ﷺ) বলেন, আমি তখন ফিরে এসে লোকদের সাথে দাঁড়িয়ে যাবো। আমরা সব দাঁড়িয়েই থাকবো এমন...।

শেষাংশে রাসূল (ﷺ) বলেন, ‘সর্বপ্রথম আমি জান্নাতের দিকে যাবো এবং জান্নাতের দরজায় করাঘাত করবো। জান্নাতের দরজা খুলে যাবে এবং আমাকে অভ্যর্থনা জানানো হবে। জান্নাতে প্রবেশ করে আমি আল্লাহ তা‘আলার দিকে দৃষ্টিপাত করব এবং সাজদায় পড়ে যাবো। আল্লাহ তা‘আলা আমাকে এমন তাহমীদ ও তামজীদের অধিকার প্রদান করবেন, যা তিনি অন্য কাউকেও শিখিয়ে দেননি। অতঃপর তিনি বলবেন, ‘হে মুহাম্মাদ (ﷺ)! মাথা উঠান এবং  সুপারিশ করুন। আপনার সুপারিশ কবুল করা হবে এবং আপনার আবেদন মঞ্জুর করা হবে’। আমি তখন আমার মাথা উঠাব। আল্লাহ তা‘আলা জিজ্ঞেস করবেন, ‘কী বলতে চান?’’ আমি বলব, হে আমার প্রভু! আপনি আমাকে সুপারিশ করার অধিকার দিয়েছেন। জান্নাতীদের ব্যাপারে আমার শাফা‘আত কবুল করুন! তারা যেন জান্নাতে প্রবেশ করতে পারে। তখন তিনি বলবেন, ‘ঠিক আছে, আমি অনুমতি দিলাম। এই লোকগুলো জান্নাতে প্রবেশ করতে পারে...’ (ত্বাবারাণী, আল-মু‘জামুল কাবীর, ২৫/২২৬, ২৪/৩০, ২/৩৩০-৩৩১, ৩০/১৮৬-১৮৮, ১৭/১১০-১১১ পৃ.)।

আরেকটি বর্ণনায় এসেছে, আল্লাহ তা‘আলা জিবরীল (আলাইহিস সালাম)-কে বললেন, নবী (ﷺ)-কে অনুমতি দাও এবং তাঁকে জান্নাতের সুসংবাদ দিয়ে দাও। জিবরীল (আলাইহিস সালাম) তাঁকে এ সুসংবাদ দেয়া মাত্র তিনি সাজদাতে পড়ে গেলেন। মোটামুটি এক সপ্তাহ সাজদাহরত অবস্থায় থাকলেন। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা বললেন, হে!  মুহাম্মাদ (ﷺ) মাথা উত্তোলন করুন, আপনি যা বলবেন তা শুনা হবে এবং আপনি সুপারিশ করুন আপনার সুপারিশ গ্রহণ করা হবে। একথা শুনে নবী (ﷺ) মাথা উঠালেন এবং আল্লাহ তা‘আলার উজ্জ্বল, জ্যোতির্ময় চেহারার উপর দৃষ্টি পড়া মাত্রই তিনি পুনরায় এক সপ্তাহের জন্য সাজদাহতে পড়ে গেলেন। আল্লাহ তা‘আলা আবার বললেন, হে মুহাম্মাদ (ﷺ)! মাথা উত্তোলন করুন, আপনি যা বলবেন তা শুনা হবে এবং আপনি সুপারিশ করুন আপনার সুপারিশ কবুল করা হবে। নবী (ﷺ) সাজদাহরত অবস্থাতেই থাকতে চাচ্ছিলেন, কিন্তু জিবরীল (আলাইহিস সালাম) এসে তাঁর বাহুদ্বয় ধরে উঠালেন। আল্লাহ তা‘আলা নবী (ﷺ)-এর জন্য দু‘আর এমন কিছু দ্বার উন্মুক্ত করলেন, যা ইতিপূর্বে কারোর জন্যই করা হয়নি...’ (আহমাদ, হা/১৫, সনদ হাসান)।

আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, নবী (ﷺ) বলেন, ‘ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলার আরশের ডানদিকে কিছু মানুষ উপবিষ্ট থাকবেন। যদিও আল্লাহ তা‘আলার উভয় হস্তই ডান। তাঁরা কিন্তু আম্বিয়া, শহীদ কিংবা ছিদ্দীক্বীন নয়। বলা হল, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! তবে তাঁরা কারা? তিনি বললেন, তাঁরা হলেন, ঐ সমস্ত লোক যাঁরা আল্লাহর জন্য একে অপরকে ভালোবাসেন’ (ত্বাবারাণী, হা/১২৬৮৬; ছহীহুত তারগীব, হা/৩০২২)।


প্রশ্নকারী : রাহুল খান, নগরপুর, টাঙ্গাইল।





প্রশ্ন (১৮) : ভুল করে বুকের দুধ খেলে কি দুধমাতা সাব্যস্ত হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৭)  : জনৈক ব্যক্তি বলেছেন, যারা চার মাযহাব কিংবা চার তরীক্বা মানবে না তারা কাফের। উক্ত দাবী কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৩) : ইহরাম অবস্থায় নারীরা কিভাবে পর্দা করবে? নারীরা মুখে নিক্বাব পরতে পারবে না- এরকম কোন শর্ত আছে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৯) : রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজে তাঁর জীবনে কখনো দাড়িতে খিযাব করেছেন কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৬) : খতম তারাবীহ কি জায়েয? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩০) : যে দেশে একাধিক ইসলামী সংগঠন এবং ধর্মীয় নেতা আছেন, কিন্তু তাদের প্রশাসনিক কোন কর্তৃত্ব নেই, তারা কি উক্ত সংগঠনের কর্মীদের থেকে বাই‘আত নিতে পারবেন? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৯) : জনৈক বক্তা বলেছেন যে, রাসূলের নাম শুনলে ‘ছাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ পড়ি এটা কোন ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত নয়। উক্ত বক্তব্য কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১২) : ‘যে উত্তমরূপে ওযূ করে ছওয়াবের উদ্দেশ্যে তার কোন মুসলিম ভাইকে দেখতে যাবে, তাকে জাহান্নাম হতে ষাট বছরের পথ দূরে রাখা হবে’। হাদীছটি কি ছহীহ? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৯) : জনৈক আলেম রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নাম শুনে দরূদ পাঠ না করাকে কৃপণতা বলে আখ্যায়িত করেছেন। তার উক্ত বক্তব্য কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৫) : ওযূ করে ছালাত চলাকালীন সময় বা ছালাত আদায়ের পর যদি জানতে পারি যে আমার দাঁতে সামান্য কিছু খাবার অবশিষ্ট আছে। তাহলে ওযূ করে পুনরায় ছালাত আদায় করতে হবে কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১০) : চার রাক‘আত বিশিষ্ট ছালাতের প্রথম বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু পড়ার পর কেউ যদি ভুলে দুরূদে ইবরাহীম পড়ে, তাহলে তাকে কি সাহু সিজদাহ দিতে হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৭) : অনেকে দাবী করে, তারাবীহ ও তাহাজ্জুদ পৃথক ছালাত। তাহাজ্জুদ ৮ রাক‘আত, আর তারাবীহ ২০ রাক‘আত। উক্ত দাবী কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ

ফেসবুক পেজ