উত্তর : রুকূ থেকে উঠার পর উভয় হাত স্বাভাবিকভাবে ছেড়ে দেয়াই সুন্নাতসম্মত। কেননা রুকূর পরে পুনরায় বুকে হাত বাঁধার স্পষ্ট কোন দলীল পাওয়া যায় না। বিখ্যাত ছাহাবী আবূ হুমায়েদ সা‘দী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) যিনি ১০ জন ছাহাবীর সম্মুখে রাসূল (ﷺ)-এর ছালাতের নমুনা প্রদর্শন করে সত্যায়ন প্রাপ্ত হয়েছিলেন, সেখানে বলা হয়েছে-فَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ اسْتَوَى حَتَّى يَعُوْدَ كُلُّ فَقَارٍ مَكَانَهُ ‘তিনি রুকূ থেকে মাথা উঠিয়ে সোজা দাঁড়িয়ে গেলেন এমনভাবে যে, মেরুদণ্ডের জোড়সমূহ স্ব স্ব স্থানে ফিরে আসে’ (ছহীহ বুখারী, হা/৮২৮; মিশকাত, হা/৭৯২)। ওয়ায়েল ইবনু হুজর ও সাহল ইবন সা‘দ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, ‘ছালাতে বাম হাতের উপরে ডান হাত রাখার ‘আম’ হাদীছের (ছহীহ বুখারী, হা/৭৪০; ছহীহ মুসলিম, হা/৪০১; মিশকাত, হা/৭৯৭-৭৯৮)-এর উপরে ভিত্তি করে রুকূর আগে ও পরে ক্বওমা-র সময় বুকে হাত বাঁধার কথা বলা হয়। আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) এটাকে বিদ‘আত বলেছেন। তিনি বলেন,
ولست أشك فى أن وضع اليدين على الصدر فى هذا القيام بدعة ضلالة
‘আমি সন্দেহাতীতভাবে বলছি, এই ক্বিয়াম অবস্থায় বুকের ওপর হাত রাখা ভ্রষ্ট বিদ‘আত’ (ছিফাতু ছালাতিন নবী, পৃ. ১৩৯)। ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল (রাহিমাহুল্লাহ)-এর ছেলে ছালেহ তার পিতার পক্ষ থেকে বলেছেন, ‘মুছল্লী চাইলে রুকূ থেকে উঠার পরে তার দুই হাত ছেড়েও দিতে পারে বাঁধতেও পারে’ (মাসায়েলে ইমাম আহমাদ, পৃ. ৯০; ছিফাতু ছালাতিন নবী, পৃ. ১৩৯)। ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ) হাত বাঁধার পক্ষে ফাৎওয়া প্রদান করেছেন (মাজমূঊ ফাতাওয়া, ১১/১৩১ পৃ.)। অনুরূপ ইবনু উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ)ও এর পক্ষে ফাৎওয়া প্রদান করেছেন (ফাতওয়া আরকানুল ইসলাম লিইবনে উছাইমীন)।
সর্বোপরি কথা হল, রুকূর পরে হাত বাঁধা অথবা ছেড়ে দেয়ার পক্ষে স্পষ্ট কোন হাদীছ নেই। দু’টি ফাতাওয়াই ব্যাখ্যাসাপেক্ষ। অতএব কোনটাকে বিদ‘আত বলার সুযোগ নেই। তবে হাত ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি সালাফদের আমলের সাথে বেশি সামঞ্জস্যপূর্ণ।
প্রশ্নকারী : আলী হোসেন, ফাজিলপুর, দিনাজপুর।