উত্তর : উপমহাদেশে চুল রাখার একটি ধরণ বা পদ্ধতিকে বুঝানোর জন্য বাবরী চুল বলা হয়ে থাকে। কিন্তু এই পরিভাষাটি সরাসরি হাদীছ থেকে সংগৃহীত নয়। অভিধানে বলা হয়েছে, ‘বাবরী’ শব্দটি এসেছে ফার্সি শব্দ ‘বাবর’ বা ‘বাব্বার’ থেকে, যার অর্থ সিংহ। ‘বাবরী’ মানে সিংহ সদৃশ বা সিংহের কেশরের মত কাঁধ ছাড়ানো চুল। কাঁধ পর্যন্ত প্রলম্বিত কুঞ্চিত কেশদাম, বড় কোঁকড়া চুল। হাফিয ইবনু হাজার আসক্বালানী (রাহিমাহুল্লাহ) ও শায়খ মুহাম্মাদ ইবনু ছালিহ আল-উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, রাসূল (ﷺ) অধিকাংশ সময় চুল লম্বা রাখতেন (ফাৎহুল বারী, ১০/৩৬০ পৃ.; ফাতাওয়া নূরুন আলাদ্ দারব, ২২/২ পৃ.)। এমনকি কোন কোন সময় তাঁর চুলে চারটি বেণী করা যেত (আবূ দাঊদ, হা/৪১৯১; তিরমিযী, হা/১৭৮১)।
হাদীছের পরিভাষায় রাসূল (ﷺ)-এর লম্বা বা বাবরী চুল রাখার পদ্ধতিকে তিনটি শব্দে ব্যক্ত করা হয়েছে। যথা: (১) ‘ওয়াফরাহ’ তথা কানের লতি পর্যন্ত লম্বা চুল। আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূল (ﷺ)-এর চুল তাঁর দুই কানের লতি পর্যন্ত লম্বা ছিল’ (আবূ দাঊদ, হা/৪১৮৫; ইবনু মাজাহ, হা/৩৬৩৫)। (২) ‘লিম্মাহ’ তথা গর্দান ও কানের লতির মাঝামাঝি বরাবর লম্বা চুল। বার’আহ ইবনু আযীব (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, আমি কোন ব্যক্তিকে ‘লিম্মা’ অর্থাৎ কান পর্যন্ত বাবরীধারী চুলে ও লাল ইয়ামানী চাদরের আবরণে রাসূল (ﷺ) থেকে অধিক সুন্দর দেখিনি। রাবী মুহাম্মদ (রাহিমাহুল্লাহ) অতিরিক্ত বর্ণনা করে বলেন, তাঁর চুল ঘাড় পর্যন্ত লম্বা ছিল (মুসলিম, হা/২৩৩৭; আবূ দাঊদ, হা/৪১৮৩)। (৩) ‘জুম্মাহ’ তথা ঘাড়ের নিচ পর্যন্ত বা ঘাড় পর্যন্ত প্রলম্বিত চুল (নাসাঈ, হা/৫০৬৬)।
প্রশ্নকারী : রুহুল আমীন, চট্টগ্রাম।