উত্তর : অশ্লীলতা বিস্তারকারীদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,
اِنَّ الَّذِیۡنَ یُحِبُّوۡنَ اَنۡ تَشِیۡعَ الۡفَاحِشَۃُ فِی الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَہُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ۙ فِی الدُّنۡیَا وَ الۡاٰخِرَۃِ
‘নিশ্চয় যারা মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার কামনা করে, তাদের জন্য রয়েছে দুনিয়া ও আখিরাতে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। আর আল্লাহ্ জানেন, তোমরা জানো না’ (সূরা আন-নূর: ১৯)। অন্যত্র তিনি বলেন, ‘(হে নবী!) আপনি বলুন, আমার প্রতিপালক নিষিদ্ধ করেছেন প্রকাশ্য ও গোপন অশ্লীলতাকে, পাপাচারকে ও অসংগত বিদ্রোহকে...’ (সূরা আল-আ‘রাফ: ৩৩)। গান-বাজনা ইসলামে চিরতরে হারাম। রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘আমার উম্মাতের কতক লোক মদের ভিন্নতর নামকরণ করে তা পান করবে। আর তাদের সামনে বাদ্যবাজনা চলবে এবং নর্তকীরা গান পরিবেশন করবে। আল্লাহ তা‘আলা এদেরকে মাটির নিচে ধ্বসিয়ে দিবেন এবং তাদের কতককে বানর ও শূকরে রূপান্তরিত করবেন’ (ইবনু মাজাহ, হা/ ৪০২০; আবূ দাঊদ, হা/৩৬৮৮, সনদ ছহীহ)।
তবে মিউজিক বিহীন গান যার শব্দগুলো রুচিসম্মত এবং তা ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিকও নয়, এমন নাশীদ বা গীত শ্রবণ করা দোষনীয় নয়। শায়খ উছাইমীন বলেন, ‘মিউজিক এবং অতিরঞ্জিত নিষিদ্ধ কথাবার্তা থেকে মুক্ত গজল, কবিতা, দেশাত্মবোধক গান অথবা গীত শ্রবণ করা দোষনীয় নয়। দাফ্ ব্যতীত অন্য কোন বাজনা বা বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করা হারাম। অনুরূপভাবে পুরুষদের জন্য নারীদের কন্ঠ শ্রবণ করাও হারাম। তবে এর চাইতে উত্তম হল, নিজের অতিরিক্ত সময় কুরআন তিলাওয়াত, যিকির-আযকার, নির্ভরযোগ্য বক্তার বক্তব্য শ্রবণ অথবা কোন শায়খের দারস্ শ্রবণ করা। যা তার উভয় জগতের জন্যই কল্যাণকর হবে’ (লিক্বাউল বাব আল-মাফতূহ, ১৪/১১১ পৃ.; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-৩৮০৯৩৩)।
শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ, ইমাম ইবনুল ক্বাইয়িম ও ইমাম শাত্বিবী বলেন, ‘ سَدُّ الذَّرَائِع অর্থাৎ পাপের দরজা বন্ধ করার লক্ষ্যে বাজনা বিহীন হলেও গান শ্রবণ না করাই উচিত। এমন প্রত্যেক বৈধ কাজ যা মানুষকে অবৈধ কাজের দিকে ধাবিত করার সম্ভাবনা রয়েছে এবং তার মধ্যে যদি কোন শারঈ কল্যাণ না থাকে, তবে সেটি অবৈধ হিসাবেই বিবেচিত হবে’ (ফাতাওয়া আল-কুবরা, ৪/৪৬৫; ইগাছাতুল লাহফান, ১/৪২৬-৪২৭; আল-মুওয়াফিক্বাত, ৫/১৭৯-১৮২ পৃ.)।
প্রশ্নকারী : দ্বীন মুহাম্মাদ, গোপালগঞ্জ।