মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ১০:১৩ অপরাহ্ন
উত্তর : আল্লাহর দিকে দাওয়াত বলতে বুঝায় আল্লাহর প্রতি ও তাঁর রাসূলগণ যা নিয়ে এসেছেন তার প্রতি বিশ্বাস  স্থাপন, তাঁরা যেসব বিষয়ে সংবাদ দিয়েছেন সেসব সত্য বলে স্বীকার এবং যেসব তাঁরা আদেশ দিয়েছেন সেসব বিষয়ে তাদের আনুগত্য করার দিকে আহ্বান জানানো’ (মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়্যাহ, ১৫/১৫৭ পৃ.)। শায়খ উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘এটা হল উত্তম চরিত্র, সুন্দর আমল, সত্যের সংরক্ষণ এবং প্রাপকের যথাযথ অধিকার ও যথোপযুক্ত মর্যাদা দানের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ইনছাফ বা ন্যায়-নীতি প্রতিষ্ঠার দিকে আহ্বান জানানো। যাতে পূর্ণাঙ্গ আক্বীদা ও শরী‘আতের বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠিত হয় এবং বাতিল আক্বীদা, জাহিলী নিয়ম-কানূন ও নিকৃষ্ট বিধান সমূহ দূরীভূত হয়’ (ইসলাম ওয়েব, তাং-১৯-০৩-২০০২, ‘মা‘নাদ দাওয়াহ ইলাল্লাহি তা‘আলা’)।

মানুষের জ্ঞান, দক্ষতা, ক্ষমতা ও সামর্থ্য অনুযায়ী প্রত্যেক ব্যক্তির উপর দাওয়াতের কাজ করা ফরয। দাওয়াতের নির্দেশ দিয়ে মহান আল্লাহ বলেন, وَ ادۡعُ  اِلٰی رَبِّکَ وَ لَا تَکُوۡنَنَّ  مِنَ  الۡمُشۡرِکِیۡنَ ‘তুমি তোমার প্রতিপালকের দিকে আহ্বান কর এবং কিছুতেই মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না’ (সূরা আল-ক্বাছাছ: ৮৭)। তিনি আরো বলেন,

قُلۡ ہٰذِہٖ سَبِیۡلِیۡۤ  اَدۡعُوۡۤا  اِلَی اللّٰہِ ۟ؔ عَلٰی بَصِیۡرَۃٍ  اَنَا  وَ مَنِ اتَّبَعَنِیۡ ؕ وَ سُبۡحٰنَ اللّٰہِ  وَ مَاۤ   اَنَا مِنَ  الۡمُشۡرِکِیۡنَ

‘(হে নবী!) আপনি বলুন! ‘এটিই আমার পথ। আমি জেনে-বুঝে (সুস্পষ্ট দলীল সহকারে) আল্লাহর দিকে দাওয়াত দিই এবং যারা আমার অনুসরণ করেছে তারাও। আর আল্লাহ্ পবিত্র মহান এবং আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই’ (সূরা ইউসুফ: ১০৮)। অন্যত্র আল্লাহ বলেন, ‘হে নবী! আমরা আপনাকে সাক্ষী, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে প্রেরণ করেছি এবং আল্লাহর আদেশক্রমে তাঁর পথে দাওয়াত দানকারী হিসাবে ও উজ্জ্বল প্রদীপরূপে’ (সূরা আল-আহযাব: ৪৪-৪৫)। রাসূল (ﷺ) বলেন, بَلِّغُوْا عَنِّىْ وَلَوْ آيَةً ‘আমার পক্ষ থেকে একটি আয়াত জানা থাকলেও তোমরা তা পৌঁছিয়ে দাও’ (ছহীহ বুখারী, হা/৩৪৬১; তিরমিযী, হা/২৬৬৯)।

সুতরাং দাওয়াতের জন্য কোন নির্দিষ্ট স্থান বা সময় নেই। যখন যেখানে যেভাবে প্রয়োজন দাওয়াতের কাজ করতে হবে। তৃতীয়তঃ আল্লাহর পথে দাওয়াতের গুরুত্ব অপরিসীম। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ঐ ব্যক্তির কথার চেয়ে কার কথা উত্তম হতে পারে, যে আল্লাহর পথে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, নিশ্চয় আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত। সৎকর্ম ও অসৎকর্ম কখনো সমান নয়। প্রত্যুত্তর নম্রভাবে দাও, দেখবে তোমার শত্রুও অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে পরিণত হয়েছে’ (সূরা হা-মীম সাজদা: ৩৩-৩৪)। উপরিউক্ত আয়াতে দাওয়াতের গুরুত্ব ফুটে উঠেছে। এর ফলে পারস্পরিক শত্রুতা দূরীভূত হয় এবং বন্ধুত্ব ফিরে আসে। একে অপরের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও ভালবাসা সৃষ্টি হয়। রাসূল (ﷺ) আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে সম্বোধন করে বলছিলেন,

فَوَاللَّهِ لَانْ يَهْدِيَ اللهُ بِكَ رَجُلًا وَاحِدًا خَيْرٌ لَكَ مِنْ أَنْ يَكُوْنَ لَكَ حُمْرُ النَّعَمِ

‘আল্লাহর কসম, তোমার দ্বারা যদি একটি মানুষও হিদায়াত লাভ করে, তা হবে তোমার জন্য লাল রংয়ের উট পাওয়ার চেয়েও উত্তম’ (ছহীহ বুখারী, হা/৩৭০১, ৪২১০; ছহীহ মুসলিম, হা/২৪০৬)। রাসূল (ﷺ) অন্যত্র বলেন, ‘যে ব্যক্তি হিদায়াতের দিকে আহ্বান করবে তার জন্য তার অনুসারী ব্যক্তিদের সমপরিমাণ নেকী রয়েছে। কিন্তু তাদের নেকী থেকে বিন্দু পরিমাণও হ্রাস করা হবে না। অপরদিকে যে ব্যক্তি ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান করবে তার জন্য তার অনুসারী ব্যক্তিদের সমপরিমাণ পাপ রয়েছে। কিন্তু তাদের পাপ থেকে বিন্দু পরিমাণও হ্রাস করা হবে না’ (ছহীহ মুসলিম, হা/২৬৭৪; আবূ দাঊদ, হা/৪৬০৯; তিরমিযী, হা/২৬৭৪)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, রাসূল (ﷺ) বলেন, مَنْ دَلَّ عَلَى خَيْرٍ فَلَهُ مِثْلُ أَجْرِ فَاعِلِهِ ‘যে ব্যক্তি কল্যাণের দিকে পথ দেখায় তার জন্য কল্যাণকর কাজ সম্পাদনকারীর সমপরিমাণ পুরস্কার রয়েছে’ (ছহীহ মুসলিম, হা/১৮৯৩; আবূ দাঊদ, হা/৫১২৯; তিরমিযী, হা/২৬৭১)। হুযাইফা ইবনুল ইয়ামান (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন, ‘সেই সত্তার শপথ, যার হাতে আমার প্রাণ! নিশ্চয় তোমরা সৎকাজের জন্য আদেশ করবে এবং অন্যায় কাজের প্রতিরোধ করবে। তা না হলে আল্লাহ তা‘আলা শীঘ্রই তোমাদের উপর তার পক্ষ থেকে শাস্তি অবতীর্ণ করবেন। তোমরা তখন তার নিকট দু‘আ করলেও তিনি তোমাদের সেই দু‘আ গ্রহণ করবেন না’ (তিরমিযী, হা/২১৬৯; সিলসিলা ছহীহাহ, হা/২৮৬৮)।

প্রশ্নকারী : সুমন মাহাদী, নাটোর।
 




প্রশ্ন (৩৬) : পাঁচটি রাত জেগে ইবাদত করলে তার জন্য জান্নাত যরূরী হয়ে যাবে। (১) তারবিয়ার রাত বা যিলহজ্জের ৮ তারিখের রাত, (২) আরাফার রাত, (৩) কুরবানীর রাত ,(৪) ঈদুল ফিতরের রাত ও (৫) ১৫ শা‘বানের রাত। উক্ত হাদীছটি কি ছহীহ? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৪) : মহিলারা মাহরামদের সামনে কেমন পর্দা করবে? মহিলাদের পোশাক কেমন হওয়া দরকার? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৮) : জীবনে অনেক পাপ করেছে এমন ব্যক্তি কোন মরণব্যাধিতে আক্রান্ত হয়েছে। এখন তওবা করলে পাপ ক্ষমা হবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১) : যারা নিজেকে ‘আহলে কুরআন’ দাবী করে বলে, আমরা কেবল কুরআন মানব, হাদীছ মানব না। এমন ব্যক্তিদেরকে কাফির বলা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৭) : নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোথায় কোথায় সম্মিলিত মুনাজাত করেছেন? বিস্তারিত জানতে চাই। - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৪) : আরাফার মাঠে অবস্থানের জন্য কি পবিত্রতা অর্জন করা শর্ত? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৪৩) : খারেজী, শী‘আ ও কাদিয়ানীরা কি কালেমা পড়া মুসলিম? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৪) : কাফের-মুশরিকদের নাবালক বাচ্চারা মারা গেলে তারা জান্নাতী হবে, না-কি জাহান্নামী হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৭) : পেশাব করার পর ঢিলা কুলুখ নেয়া যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৫) : ইমাম যদি রুকূ‘, সিজদা, কিরাআত, তাসবীহ খুব দ্রুত করে তাহলে করণীয় কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৪) : শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রদের নিকট থেকে পরীক্ষার ফী বাবদ যে অর্থ গ্রহণ করা হয়ে থাকে, সেই অর্থ কি শিক্ষকদের মধ্যে বণ্টন করা যাবে? উল্লেখ্য, শিক্ষকগণ নির্ধারিত হারে বেতন পেয়ে থাকেন। - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৪) : নৌকা, লঞ্চ, পানি জাহাজে উঠার সময়  بِسْمِ اللَّهِ مَجْراهَا وَمُرْسَاهَا ۚ إِنَّ رَبِّي لَغَفُورٌ رَّحِيمٌ   আয়াতটি পড়ার প্রচলন রয়েছে। এর পক্ষে কোন ছহীহ দলীল আছে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ

ফেসবুক পেজ