ঐতিহাসিক চক্রান্তের শিকার বিখ্যাত সংস্কারক
শায়খ মুহাম্মাদ ইবনু আব্দুল ওয়াহ্হাব (রাহিমাহুল্লাহ)!!
-হাসিবুর রহমান বুখারী*
বিংশ শতাব্দীতে পুরো বিশ্ব জুড়ে ইসলামফোবিয়ার ব্যাপক উত্থান হয়েছে। ইসলাম ব্যতীত বর্তমান বিশ্বে আরো যত ধর্ম আছে, প্রত্যেকের ধর্মবিশ্বাস, ঐশ্বরিক ধারণা, ধর্মচর্চা, ধর্মসংগত কর্ম পদ্ধতি, আচার-আচরণ, রীতি-নীতি, বিধি-বিধান ও নিয়মাবলী ভিন্ন ভিন্ন। প্রত্যেক ধর্মে ইশ্বর নির্বাচন করার ক্ষেত্রে ও দেবদেবীর নামকরণে মতপার্থক্য আছে। কখনো কখনো তো একই ধর্মের মধ্যে একাধিক ঈশ্বর থাকার কারণে গৃহযুদ্ধও পরিলক্ষিত হয়। তাদের আপোসে এতো বৈপরীত্য থাকা সত্ত্বেও ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্ধেষ পোষণ করার ক্ষেত্রে কিন্তু বিশ্বের সকল বিধর্মী একত্রিত হয়ে যায়। সকল অমুসলিম ইসলাম ও মুসলিমদের বিরোধিতায় একজোট। অনুরূপভাবে ইসলাম ধর্মাবলম্বী বিভিন্ন দলের মধ্যেও কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য আছে। কুরআন ও সুন্নাহকে বুঝার ও মানার ক্ষেত্রে বেশকিছু বৈপরীত্য পরিলক্ষিত হয়। কিন্তু ‘আহলেহাদীছ’দের বিরোধিতা করার ক্ষেত্রে সকল দল একজোট হয়ে যায়। মোদ্দাকথা হল, বিশ্বের সকল বিধর্মী ইসলামের বিরুদ্ধে হিংসা-বিদ্বেষ ও শত্রুতা পোষণ করে। আর ইসলাম ধর্মের নামে তৈরিকৃত প্রায় সবকটি দলই আহলেহাদীছদের বিরুদ্ধে শত্রুতা পোষণ করে। আল্লাহ তা‘আলার কোটি কোটি শুকরিয়া যে, এত হিংসা-বিদ্বেষ ও শত্রুতার পরেও আমরা এখনো বাতিলের বিরুদ্ধে টিকে রয়েছি। ফালিল্লাহিল হামদ। অনেকেই আমাদের সহিষ্ণুতা, ধৈর্যশীলতা, সত্যতা ও অহিংসতার কথা স্বীকার করেছেন।
সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের প্রথম সারির দৈনিক পত্রিকা ‘দৈনিক ইনকিলাব’ এ তিনটি কিস্তিতে একটি প্রবন্ধ ছাপা হয়েছে। দিনটা ছিল ১২-১২-২০২১, ১৩-১২-২০২১ এবং ১৪-১২-২০২১। শিরোনাম ছিল ‘ওয়াহাবী: ইসলামের সহিংস রাজনৈতিক সংস্করণ’। তিনদিনে তিনটি পৃথক বিষয়বস্ত নিয়ে আলোচনা করা হয়। প্রথম দিনের আলোচ্য বিষয় ছিল ‘সালাফী পণ্ডিত ও ওয়াহাবী মতবাদের জনক আব্দুল ওয়াহাব’। দ্বিতীয় দিনের আলোচ্য বিষয় ছিল ‘কবর ও স্মৃতি ফলক ধ্বংস করে সউদরা’ এবং তৃতীয় দিনের আলোচ্য বিষয় ছিল ‘সুন্নি ও শিয়া আধিপত্যের বিরুদ্ধে স্থায়ী পশ্চিমা বিশ্ব’ নামে।*
উক্ত প্রবন্ধে তারা আহলেহাদীছ সম্পর্কে বেশ কিছু ন্যক্কারজনক, নিদারুণ আপত্তিকর, অতিশয্যপূর্ণ ও নিম্নমানের কুরুচিকর মন্তব্য করা হয়েছে। এছাড়া তৎকালীন সঊদী সরকারকে বর্বর, অত্যাচারী, পরপীড়ক, স্বৈরাচারী ও দৌরাত্ম্যকারী শাসক হিসাবে চিত্রায়িত করা হয়েছে। এমনকি মুহাম্মাদ ইবনু আব্দুল ওয়াহহাব (রাহিমাহুল্লাহ)-এর মত যুগশ্রেষ্ঠ সংস্কারককে ইয়াহুদী-খ্রিষ্টানদের দালাল বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। মা‘আযাল্লাহ! তারা ৯/১১-এর সহিংস সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ওয়াহাবীবাদের যোগসূত্র প্রমাণ করার অপ্রচেষ্টা চালিয়েছেন। তারা বলেছেন, প্রাচীনতম সূত্র অনুসারে, ওয়াহাবীবাদের জনক মুহাম্মাদ ইবনু আব্দুল ওয়াহ্হাব মনে করতেন যে, ‘কুরআনের মত পবিত্র গ্রন্থ ঐশ্বরিক নয়’। ডেনিশ পরিব্রাজক খাস্তেঁ নিবুহ তার ‘বেশাঁইবুং ফন আহাবিয়ন বা ‘আরবের বর্ণনা’ (১৭৭২) শীর্ষক গ্রন্থে ওয়াহাবীদেরকে ‘দেবতাবাদী’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন। নিবুহের মতে, ‘মুহাম্মাদ ইবনু আব্দুল ওয়াহহাব বিশ্বাস করতেন না যে, নবী মুহাম্মাদ একজন নবী ছিলেন, বরং তিনি তাঁকে একজন মহান প-িত বলে মনে করতেন’। ওয়াহাবীবাদ অনুসারে, ‘নবীদের আত্মার কাছ থেকে সুপারিশ চাওয়া, বুজুর্গদের ক্ববর জিয়ারত করা এবং তাদের ওছিলায় প্রার্থনা করা, কবরের ওপর মাজার নির্মাণ করা এবং নবী মুহাম্মদ (ﷺ) এবং পীর-পয়গম্বরদের রেখে যাওয়া স্মৃতিচিহ্নগুলোর প্রতি সম্মান জানানো হল শিরক’।
সুধী পাঠক! তারা এই ভ্রান্ত ও দলীলবিহীন তথ্যগুলো ‘ডেইলি সাবাহ’ নামক একটি তুর্কি দৈনিক পত্রিকা থেকে নকল করেছেন। নিম্নে তাদের উপস্থাপিত সূত্রানুযায়ী উইকিপিডিয়ার তথ্যানুসারে নিম্নে এই চক্রান্তের মূল ‘ডেইলি সাবাহ’ সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপস্থাপন করা হল : ‘ডেইলি সাবাহ’ (রোজ সকাল) তুর্কির একটি সরকারপন্থী নিউজ পেপার। ‘তুর্কুভাজ মিডিয়া গ্রুপ’-এর মালিকানাধীনে এটি আরবী ও ইংরেজি ভাষায় প্রত্যহ প্রকাশিত হয়। এটি ২০১৪ সালের ২৪ শে ফেব্রুয়ারী প্রথম প্রকাশিত হয়। এই পত্রিকার প্রধান সম্পাদক ইবরাহীম আলতাই। প্রধানতঃ ডেইলি সাবাহকে সে দেশের সরকারের ‘প্রোপাগন্ডা আউটলেট’ অর্থাৎ বিজ্ঞাপন বা প্রচারের নির্গমনপথ বলা হয়ে থাকে। কারণ এটির মালিক ঐ দেশের প্রধান রিসেপ তাইইপ এরদোগানের বন্ধু। এর সদর দপ্তর তুর্কির ইস্তাম্বুলে। রোজ এই পত্রিকার মোট ৮৫৮৮ টি কপি ছাপা হয়ে থাকে। ২০১৪ সালে যখন তুর্কির রাজনীতিতে বিরোধীপক্ষের আন্দোলন চরম আকার ধারণ করেছিল, তখন সরকারের সুবিধার্থে ও সাপোর্টে এই পত্রিকাকে চালু করা হয়েছিল।
২০১৩ সালের ডিসেম্বরে যখন ‘গুলেন আন্দোলন’ নামে তুর্কিতে একটি ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের আন্দোলন চলছিল, তখন ‘Today's Zaman’ ও ‘Hurriyet Daily’ নামক দু’টি পত্রিকা সরকার পার্টি AKP-এর তীব্র সমালোচনা করে। মূলত এই পত্রিকাগুলোকে পাল্টা আক্রমণ করার জন্যই ‘Daily Sabah’ নামক পত্রিকাটির উৎপত্তি। ‘Daily Sabah’ নিজেদের যেভাবে বিশ্লেষণ করে তা হল, ‘আমরা গণতন্ত্রের প্রতি, শাসন আইনের প্রতি, মানবধিকার ও স্বাধীনতার প্রতি দায়বদ্ধ’। নিজেদের ব্যাপারে তাদের প্রচার যাই হোক না কেন, Daily Sabah যে AKP পার্টির মুখপাত্র তা বলাই বাহুল্য। এদের প্রধান কাজই হল, সরকার বিরোধী ইস্যু ও প্রচারগুলোকে দমন করার জন্য মানবীয় ও ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত লাগার মত স্পর্শকাতর কৃত্রিম ইস্যু তৈরি করা।
জার্মানির নিউজ পেপার ‘Spiegel Online’ এই পত্রিকাটির সমালোচনা করতে গিয়ে বলেছে, ‘এই পত্রিকাটি তুর্কি স্টাইলে চালানো একটি প্রোপাগন্ডা আউটলেট, যার কাজই হল AKP সরকারকে প্রাধান্য দেয়া’। ২০১৭ সালে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে নেদারল্যান্ডের একজন বিখ্যাত ব্যক্তি যিনি ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের একজন M.P। তিনি এই পত্রিকাটির নাম দিয়েছেন ‘Hate Press’ তথা ‘বিদ্বেষ পত্রিকা’। অতঃপর এই পত্রিকার উপর নিষেধাজ্ঞা (Ban) জারি করার জন্য তিনি ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে দাবি তোলেন।[১]
দ্বিতীয়তঃ আমরা অত্যন্ত ভদ্রতা ও বিনম্রতার সাথে দৈনিক পত্রিকা, ম্যাগাজিন, সংবাদ মাধ্যম (press media) ও গণমাধ্যম (mass media)-এর ভাইদের বলব, হে ভ্রাতৃমণ্ডলী! আপনারা আল্লাহকে ভয় করুন। এক্ষেত্রে নিন্মোক্ত বিষয়গুলো গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করুন।
১. ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী শুনা কথা প্রচার করার পূর্বে যাচাই-বাছাই করা অপরিহার্য। বর্তমান বিশ্বে বিশৃঙ্খলা, অশান্তি ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার মূলই হল- মিডিয়াগুলোর বেপরোয়া সম্প্রচার, সত্য-মিথ্যা যাচাই না করা, সত্যকে গোপন করে মিথ্যার আশ্রয় নেয়া ইত্যাদি। হাফছ ইবনু আসীম (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, كَفَى بِالْمَرْءِ كَذِبًا أَنْ يُحَدِّثَ بِكُلِّ مَا سَمِعَ ‘কোন ব্যক্তির মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে কোন কথা শোনামাত্রই (যাচাই না করে) প্রচার করে বেড়ায়’।[২]
২. ধারণার বশবর্তী হয়ে কোন কথা বলা জায়েয নয়। কোন বিষয়ে যথেষ্ট জ্ঞানার্জন ও গবেষণা করার পূর্বে মন্তব্য করা মূর্খামি ব্যতীত আর কিছুই নয়। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, وَ لَا تَقۡفُ مَا لَیۡسَ لَکَ بِہٖ عِلۡمٌ ؕ اِنَّ السَّمۡعَ وَ الۡبَصَرَ وَ الۡفُؤَادَ کُلُّ اُولٰٓئِکَ کَانَ عَنۡہُ مَسۡـُٔوۡلًا ‘যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই সেই বিষয়ে অনুমান দ্বারা পরিচালিত হয়ো না। নিশ্চয় কর্ণ, চক্ষু ও হৃদয় ওদের প্রত্যেকের নিকট কৈফিয়ত তলব করা হবে’ (সূরা বানী ইসরাঈল : ৩৬)।
৩. প্রকৃতপক্ষে মিডিয়া হল কোটি কোটি মানুষের অন্তরের আওয়াজ। সেক্ষেত্রে মিডিয়াকে আরো বেশি বিশ্বস্ত ও আস্থাভাজন হওয়া উচিত। অধিকাংশ মানুষের অনুসরণ না করে নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে সত্য-মিথ্যা, ন্যায়-অন্যায় যাচাই করে সংবাদ পরিবেশন করা কর্তব্য। কেননা আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, وَ اِنۡ تُطِعۡ اَکۡثَرَ مَنۡ فِی الۡاَرۡضِ یُضِلُّوۡکَ عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ ؕ اِنۡ یَّتَّبِعُوۡنَ اِلَّا الظَّنَّ وَ اِنۡ ہُمۡ اِلَّا یَخۡرُصُوۡنَ ‘আর যদি আপনি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের কথামত চলেন, তাহলে তারা আপনাকে আল্লাহর পথ হতে বিচ্যুত করে দেবে। তারা তো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে এবং তারা কেবল অনুমানভিত্তিক কথাবার্তাই বলে থাকে’ (সূরা আল-আন‘আম : ১১৬)।
৪. ইসলাম একটি বাস্তবধর্মী জীবন ব্যবস্থা। গুজব, অনুমান, জনশ্রুতি ও মিথ্যা রটনার সঙ্গে এ দ্বীনের কোন সম্পর্ক নেই। সুতরাং মুসলিম জাতিকে অবশ্যই বাস্তবানুগ হওয়া উচিত। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আজ সিংহভাগ মানুষ গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে চলছে। সত্য-মিথ্যা যাচাই করার প্রবণতা অত্যধিক ক্ষীণ। আক্বীদা-বিশ্বাস ও ধর্মীয় জ্ঞান এতটাই দুর্বল যে, যে কোন সংবাদ অনায়াসেই আমাদেরকে ভ্রষ্টতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। দলীলবিহীন আলোচনা, ভ্রান্ত মতবাদ ও বিভ্রান্তিকর ব্যাখ্যাকেও দ্বিধাহীনভাবে শরী‘আতের মানদণ্ড হিসাবে গ্রহণ করছি। ফলস্বরূপ আমাদের সজ্ঞানে অথবা অজ্ঞানে বড় বড় উলামাদের উপর মিথ্যা অপবাদ আরোপ করছি, অকথ্য ভাষায় গালাগালি করছি। যার শাস্তি সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, ‘তাদেরকে তোমরা আশিটি বেত্রাঘাত কর’ (সূরা আন-নূর : ৪)।
৫. পারলে নীতিগত সমালোচনা করুন, ব্যক্তির ভুলগুলো দলীলের আলোকে প্রমাণিত করুন। আবেগ দিয়ে মানুষের বিবেক নিয়ে খেলবেন না। অনুগ্রহ করে কাউকে ভুল প্রমাণিত করার জন্য মিথ্যার আশ্রয় নেবেন না। আর পাঠকদের উদ্দেশ্যে বলব, এই সমস্ত ভ্রান্ত খবরের খপ্পরে পড়ে বিভ্রান্ত হবেন না। মুহাম্মাদ ইবনু আব্দুল ওয়াহ্হাব (রাহিমাহুল্লাহ) ও অন্যান্য আলিমের জীবনী জানতে তাঁদের সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য গ্রন্থ পড়ুন।
তৃতীয়তঃ এই ধরনের মিথ্যাচার ও অপবাদ এই প্রথম নয়। ইতিপূর্বেও একাধিকবার করা হয়েছে। তাই পাঠকদের ধারণা স্বচ্ছ ও পরিষ্কার করার উদ্দেশ্যে আমরা ধারাবাহিকভাবে এই ঐতিহাসিক মিথ্যাচারের যথার্থ জবাব দেয়ার প্রাণপণ চেষ্টা করব। দৈনিক ইনকিলাব ও সাধারণ মুসলিম ভাইদের সংশয় নিরসন করার উদ্দেশ্যে ইসলামী ইতিহাসের আলোকে মুহাম্মাদ ইবনু আব্দুল ওয়াহ্হাব (রাহিমাহুল্লাহ)-এর জীবনী তুলে ধরব এবং কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহর আলোকে তাঁর কার্যাদি ও বাণীসমূহকে যাচাই-বাছাই করব। ইনশাআল্লাহ।
(ইনশাআল্লাহ চলবে)
* মুর্শিদাবাদ, ভারত।
তথ্যসূত্র :
[১]. https://en.wikipedia.org/wiki/Daily_Sabah.
[২]. ছহীহ মুসলিম, হা/৫ ‘মুক্বাদ্দামা’ দ্র.; আবূ দাঊদ, হা/৪৯৯২; ছহীহুল জামি’, হা/৪৪৮২।
প্রসঙ্গসমূহ »:
সাময়িক প্রসঙ্গ