শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:২৩ পূর্বাহ্ন
উত্তর : নবী (ﷺ) সূদখোর, সূদদাতা, তার সাক্ষীদাতা এবং তার লেখককে অভিসাম্পত করেছেন এবং বলেছেন, ওরা সবাই সমান (ছহীহ মুসলিম, হা/১৫৯৭-১৫৯৮)। তাই আপনার উচিত দ্রুত তওবাহ করা এবং বেশি বেশি ক্ষমাপ্রার্থনা, আমলে ছালিহ, ছালাত আদায় ও ছাদাক্বাহ ইত্যাদি করা। কেননা আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, ‘তবে যারা তওবা করে, বিশ্বাস আনয়ন করে ও সৎকাজ করে আল্লাহ তাদের পাপকর্মগুলোকে পুণ্য দ্বারা পরিবর্তন করে দেবেন। আর আল্লাহ চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’ (সূরা আল-ফুরক্বান : ৬৮-৭০)। অন্যত্র তিনি বলেন, ‘আর অবশ্যই আমি তার প্রতি ক্ষমাশীল, যে তাওবাহ করে, ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে অতঃপর সৎ পথে চলতে থাকে’ (সূরা ত্বোহা : ৮২)। আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন, ‘গুনাহ থেকে তওবাহকারী নিষ্পাপ ব্যক্তিতুল্য’ (ইবনু মাজাহ, হা/৪২৫০, সনদ হাসান)।

শায়খ ছালিহ আল-মুনাজ্জিদ (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন, ‘সূদী ঋণগ্রহীতার উপর অপরিহার্য আল্লাহ তা‘আলার নিকট কঠোরভাবে তাওবাহ করা। নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হওয়া। এই ধ্বংসাত্মক ও মহাপাপে পুনরায় লিপ্ত না হওয়ার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করা। অতঃপর সৃদী ঋণের মূলধন পরিশোধ করা আপনার উপর অপরিহার্য। পক্ষান্তরে হারাম সূদ পরিশোধ করা অপরিহার্য নয় এবং আপনার কাছ থেকে সূদ গ্রহণ করা ঋণদাতার জন্য হারাম হবে। কিন্তু যদি অশান্তি, বিশৃঙ্খলা ও ক্ষতির আশঙ্কা করেন, তবে তাওবাহ ও ঘৃণার সাথে সূদসহই ঋণ পরিশোধ করবেন (ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-৬০১৮৫)। ‘ইসলাম ওয়েব’-এর আলেমগণ বলেন, ‘সূদী কারবারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তির উপর অপরিহার্য যে, সে সঙ্গে সঙ্গে নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহ তা‘আলার নিকট কঠোরভাবে তাওবাহ করবে। যদি সম্ভব হয়, তাহলে সে ব্যাংককে সূদ ব্যতীত শুধু মূলধন পরিশোধ করবে। আর যদি ব্যাংক চুক্তিবদ্ধ সূদ ছাড়তে রাজি না হয় তাহলে সূদসহ ঋণ পরিশোধ করবে। আর সূদী ঋণ দ্বারা যা কিছু ক্রয় করেছে তা বিক্রয় করা অপরিহার্য নয় এবং সে চুক্তি অনুযায়ী কিস্তির মাধ্যমে ধীরস্থিরতার সাথে ঋণ পরিশোধ করবে (ইসলাম ওয়েব, ফৎওয়া নং-৬৫২৬১, ৯৫০০২)।

ইমাম নববী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘যদি গোনাহের সম্পর্ক আল্লাহর (অবাধ্যতার) সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়, তাহলে এ ধরনের তাওবাহ কবুলের জন্য তিনটি শর্ত রয়েছে। যেমন (১) পাপকে সম্পূর্ণরূপে বর্জন করতে হবে। (২) কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত ও লজ্জিত হতে হবে। (৩) ঐ পাপ পুনরায় না করার দৃঢ় সঙ্কল্প করতে হবে। পক্ষান্তরে যদি সেই পাপ মানুষের অধিকারের সঙ্গে সম্পর্কিত হয়, তাহলে তা কবুলের জন্য চারটি শর্ত আছে। উপরিউক্ত তিনটি এবং চতুর্থ শর্ত হল অধিকারীর অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে’ (রিয়াযুছ ছালিহীন, পৃ. ১৪-২২, ‘তাওবাহ’ অনুচ্ছেদ)। উল্লেখ্য, তাওবাহ কবুলের প্রথম শর্তে আমরা জানতে পারলাম যে, ‘পাপকে সম্পূর্ণরূপে বর্জন করতে হবে।

কিন্তু কিস্তি হিসাবে ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে দু’টি সমস্যা হতে পারে। ১- প্রচেষ্টা করার পরও সঙ্গে সঙ্গে পরিশোধ করতে সামর্থ্যবান না হওয়া। ২- চাইলেও এক সঙ্গে সমস্ত ঋণ পরিশোধ করার ব্যবস্থা না থাকা। সুতরাং আপনি যেহেতু উপরিউক্ত সমস্যার কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ঋণ পরিশোধ করতে পারছেন না, সেক্ষেত্রে ইনশাআল্লাহ আল্লাহ আপনার তাওবাহ ক্ববুল করবেন। কেননা আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, ‘আল্লাহ কাউকেও তার সাধ্যের অতিরিক্ত দায়িত্ব অর্পণ করেন না’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২৮৬)। কিন্তু যদি সামর্থ্য ও সুযোগ-সুবিধা থাকার পরও ঋণ পরিশোধ করে নিজেকে সূদ থেকে মুক্ত না করেন, সেক্ষেত্রে কিন্তু তাওবাহ বিশুদ্ধ হবে না এবং স্বাভাবিক ভাবেই আপনি গুনাহগার হবেন।


প্রশ্নকারী : ইমরান শাহ, রংপুর।





প্রশ্ন (১) : জনৈক ব্যক্তি চাকুরীরত অবস্থায় মালিককে না জানিয়ে উত্ত প্রতিষ্ঠান থেকে কিছু পণ্য নিয়েছিল। লজ্জার কারণে মালিককে বলতেও পারছে না। কী পরিমাণ জিনিস নিয়েছে সেটাও জানা নেই। আনুমানিক যতটুকু ধারণা আছে তার উপর ভিত্তি করে কি টাকা দিলে হবে না-কি? এমতাবস্থায় করণীয় কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৮) : নাফসের শিরক বলতে কী বুঝায়? নাফসের আনুগত্য বলতে কী বুঝায়? যেমন, সিনেমা দেখা, নন-মাহরামের মন রক্ষার্থে কথা বলা অথবা ইচ্ছা করেই জোহরের সুন্নাত ছালাত ছেড়ে দেয়া প্রভৃতি কাজ কি নাফসের আনুগত্যের মাঝে পড়ে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১০) : সহশিক্ষা চালু আছে এমন কলেজে পড়া বা শিক্ষকতা করা কি শরী‘আত সম্মত? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৪) : জনৈকা দ্বীনদার মহিলা স্বপ্নে কুরআন তিলাওয়াত করেন এবং এটাকে ভাল স্বপ্ন মনে করেন। স্বপ্নে তিলাওয়াতকৃত আয়াতের অর্থ পড়ে তিনি বলেন, আয়াতে বর্ণিত কাজটি আল্লাহ তাকে পালন করতে আদেশ করেছেন। তার উক্ত দাবী কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১১) : ছিয়াম ভঙ্গের কারণগুলো কী কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৪) : যে মেয়ে ফেসবুক মেসেঞ্জারে অন্য ছেলেদের সম্পর্ক করে কথা বলে। তাকে বিয়ে করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৯) : ‘ছালাতুল ইশরাক্ব’, ‘ছালাতুয যুহা’ এবং ‘ছালাতুল আউওয়াবীন’ বলতে কোন্ কোন্ ছালাতকে বুঝানো হয় এবং এই সকল ছালাতের ফযীলত কেমন? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৫) : জনৈক ইমাম বলেন, ১০ যিলহজ্জের পরের দিনও অর্থাৎ ১১ যিলহজ্জও আল্লাহর কাছে অনেক মর্যাদাপূর্ণ। উক্ত দাবী কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩২) : অনিচ্ছাকৃতভাবে পাওয়া সূদের অর্থ কোথায় ব্যয় করবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩১) : বর্তমানে ছোট বাচ্চাদের পোশাক মানেই বিভিন্ন প্রাণীর কার্টুনযুক্ত পোশাক। এরূপ ছবি ও কার্টুনযুক্ত পোশাক বাচ্চাদের পরানো যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৬) : ছহীহ হাদীছের অনুসরণ করার কারণে অনেকে ‘জঙ্গী’ বলছে। এ জন্য পরিবারও চিন্তিত। তারাও চাপ সৃষ্টি করছে। এমন পরিস্থিতিতে কী করা উচিত? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৪) : হোমিও ঔষধ খাওয়া যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ

ফেসবুক পেজ