উত্তর : উক্ত উক্তি দ্বারা মূলত সমকামিতার ভয়াবহতা প্রকাশ করা হয়েছে। যেমন ইমাম ইবনুল ক্বাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘যেহেতু সমকামিতার অনিষ্টতা সর্বাধিক ধ্বংসাত্মক, সেহেতু ইহকালে ও পরকালে এর শাস্তিও হবে সবচেয়ে ভয়াবহ’ (আল-জাওয়াবুল কাফী, ১/১৬৮ পৃ.)। ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেন, مَنْ وَجَدْتُمُوْهُ يَعْمَلُ عَمَلَ قَوْمِ لُوْطٍ فَاقْتُلُوْا الْفَاعِلَ وَالْـمَفْعُوْلَ بِهِ ‘তোমরা যে মানুষকে লূত্ব সম্প্রদায়ের কুকর্মে (সমকামিতায়) নিয়োজিত পাবে সেই কুকর্মকারীকে এবং যার সাথে কুকর্ম করা হয়েছে তাদের উভয়কেই হত্যা করবে’ (আবূ দাঊদ, হা/৪৪৬২; তিরমিযী, হা/১৪৫৬)। রাসূল (ﷺ) লূত্ব জাতির অনুরূপ অপকর্মে লিপ্ত ব্যক্তি সম্পর্কে বলেন, اُرْجُمُوْا الْأَعْلَى وَالْأَسْفَلَ اُرْجُمُوْهُمَا جَمِيْعًا ‘তোমরা উপরের এবং নিচের উভয় ব্যক্তিকেই রজম করে অর্থাৎ প্রস্তরাঘাতে হত্যা কর’ (ইবনু মাজাহ, হা/২৫৬২, ২০৯২; হাকিম, হা/৮০৪৮; মুসনাদ আবূ ইয়া‘আলা, হা/৬৬৮৭; শারহু মুশকিলিল আছার, হা/৩৮৩৩)।
দেশে ইসলামী শাসক নেই সেজন্য তার উপর শাস্তি (দ- বা শাস্তি) কার্যকর করা সম্ভবপর নয়। এক্ষেত্রে গুনাহগার ব্যক্তি দুনিয়াবী তুচ্ছ শাস্তি থেকে পরিত্রাণ পেলেও কিন্তু পরকালের ভয়াবহ শাস্তি থেকে রক্ষা পাবে না। তাই পরকালের শাস্তি থেকে মুক্তি প্রাপ্তির জন্য আল্লাহ তা‘আলার নিকট অত্যন্ত খালেছভাবে তাওবাহ ও ইস্তিগফার করতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা খালিছ তাওবাহর মাধ্যমে শিরকের মত মারাত্মক ও ধ্বংসাত্মক, হত্যার মত ভয়াবহ এবং ব্যভিচারের মত জঘন্য গুনাহকেও ক্ষমা করার ঘোষণা করেছেন (সূরা আল-ফুরক্বান : ৬৮-৭০)। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, وَ اِنِّیۡ لَغَفَّارٌ لِّمَنۡ تَابَ وَ اٰمَنَ وَ عَمِلَ صَالِحًا ثُمَّ اہۡتَدٰی ‘আর অবশ্যই আমি তার প্রতি ক্ষমাশীল, যে তাওবাহ করে, ঈমান আনয়ন করে এবং সৎকর্ম করে অতঃপর সৎ পথে চলতে থাকে’ (সূরা ত্বোহা : ৮২)। নবী করীম (ﷺ) বেেলছেন, التَّائِبُ مِنَ الذَّنْبِ كَمَنْ لَا ذَنْبَ لَهُ ‘গুনাহ থেকে তাওবাহকারী নিষ্পাপ ব্যক্তিতুল্য’ (ইবনু মাজাহ, হা/৪২৫০, সনদ হাসান)। উল্লেখ্য যে, তওবাহ্ কবুলের জন্য তিনটি শর্ত রয়েছে। যথা : ১- পাপকে সম্পূর্ণরূপে বর্জন করতে হবে। ২- কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত ও লজ্জিত হতে হবে। ৩- ঐ পাপ পুনরায় না করার দৃঢ় সঙ্কল্প করতে হবে। সুতরাং যদি এর মধ্যে একটি শর্তও লুপ্ত হয়, তাহলে সেই তওবাহ বিশুদ্ধ হবে না। পক্ষান্তরে যদি সেই পাপ মানুষের অধিকারের সঙ্গে সম্পর্কিত হয়, তাহলে তা কবুলের জন্য চারটি শর্ত আছে। উপরিউক্ত তিনটি এবং চতুর্থ শর্ত হল, অধিকারীর অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। যদি অবৈধ পন্থায় কারো মাল বা অন্য কিছু নিয়ে থাকে, তাহলে তা ফিরিয়ে দিতে হবে’ (রিয়াযুছ ছলিহীন, তাওবাহ্ অনুচ্ছেদ, পৃ. ১৪-২২ পৃ.)।
প্রশ্নকারী : মুহাম্মাদ, রায়ের বাজার, ঢাকা।