উত্তর : দাড়ি রাখা ওয়াজিব। দাড়ি রাখার মাধ্যমে অগ্নিপূজক, মূর্তিপূজক, ইহুদী এবং খ্রিষ্টানদের বিরোধিতা করা হয় (ছহীহ মুসলিম, হা/২৫৯, ২৬০; মুসনাদে আহমাদ, হা/৮৬৫৭)। হাদীছ থেকে বুঝা যায়, পারস্যের অধিবাসী ও কাফের, মুশরিক, ইহুদী, খ্রীষ্টানদের অভ্যাস ছিল, তারা দাড়ি খাট করত। অতঃপর শরী‘আতে তা নিষিদ্ধ করা হয়েছে (নায়লুল আওত্বার, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৫৯)। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, وَأَعْفُوا اللِّحَى ‘তোমরা দাড়ি ছেড়ে দিবে’ (ছহীহ বুখারী, হা/৫৮৯৩)। দাড়ি রাখার অর্থ হল- তা বৃদ্ধি করা, পরিপূর্ণরূপে ছেড়ে দেয়া এবং কেটে না ফেলা। হাদীছে দাড়ি ছেড়ে দেয়ার নির্দেশনা সম্বলিত পাঁচটি (أَعْفُوا وَأَوْفُوا وَأَرْخُوا وَأَرْجُوا وَوَفِّرُوا) বর্ণনা এসেছে (ছহীহ বুখারী, হা/৫৮৯২; ছহীহ মুসলিম, হা/২৫৯, ২৬০; নাসাঈ, হা/৫০৪৬)। প্রত্যেকটি অর্থই হল দাড়িকে তার নিজ অবস্থায় ছেড়ে দেয়া। এটাই হাদীছের প্রকাশ্য ও স্পষ্ট অর্থ (শারহুন নববী ছহীহ মুসলিম, ৩য় খণ্ড, পৃ. ১৫১; তুহফাতুল আহওয়াযী, ৮ম খণ্ড, পৃ. ৩৮)। সালাফে ছালেহীন হাদীছের এই প্রকাশ্য ও স্পষ্ট অর্থই গ্রহণ করেছেন।
ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হজ্জ বা ‘ওমরার সময় তাঁর দাড়ির এক মুষ্টির অতিরিক্ত কেটে ফেলতেন (ছহীহ বুখারী, হা/৫৮৯২) মর্মে যে বক্তব্য এসেছে, তা তার ব্যক্তিগত আমল ও বুঝ। তাছাড়া এটা কেবল হজ্জ ও ওমরার সাথে সম্পৃক্ত। তাই রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বক্তব্য ও আমলকেই আঁকড়ে ধরতে হবে (আহযাব ২১)। কারণ রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে দাড়ি কাটা, ছাঁটা, একমুষ্টি রাখার পক্ষে কোন ছহীহ বর্ণিত হয়নি। ইমাম নববী (রাহিমাহুল্লাহ) দাড়ি কাটা এবং ছেড়ে দেয়ার পক্ষে-বিপক্ষে বিস্তারিত আলোচনা করার পর বলেছেন, সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য বক্তব্য হল, تَرْكُ اللِّحْيَةِ عَلَى حَالِهَا ‘দাড়িকে তার নিজ অবস্থায় ছেড়ে দেয়া’ (শারহুন নববী ‘আলা ছহীহিল মুসলিম, ৩য় খণ্ড, পৃ. ১৫১)। অতএব দাড়িকে ছেড়ে দেয়াই রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আদর্শের অনুসরণ। উল্লেখ্য যে, নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বীয় দাড়ি প্রস্থ এবং দৈর্ঘ্য হতে ছেঁটে নিতেন মর্মে বর্ণনাটি জাল (তিরমিযী, হা/২৭৬২; সিলসিলা যঈফাহ, হা/২৮৮; ১ম খণ্ড, পৃ. ৪৫৬)।
প্রশ্নকারী : আহসান হাবীব, নওগাঁ।