উত্তর : ফের্কাবন্দীর পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ। এর মাধ্যমে পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব, শান্তি ও নিরাপত্তা ধ্বংস হয়ে পড়ে। সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। ইসলামী সমাজ সংস্কার আন্দোলন অসাড় হয়ে পড়ে এবং ঐক্যবদ্ধ মুসলিম জাতিকে শক্তিহীন করে দেয়। এজন্য দলে দলে বিভক্ত হওয়া ও মতভেদকে আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্পষ্টভাবে নিষেধ করেছেন (সূরা আলে ইমরান : ১০৩)। এছাড়া আল্লাহ্র রজ্জুকে সম্মিলিতভাবে সুদৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরতে বলেছেন এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হতে নিষেধ করেছেন (ছহীহ মুসলিম, হা/১৭১৫)। বর্ণিত وَلَا تَفَرَّقُوْا ‘তোমরা পরস্পরে বিভক্ত হয়ো না’-এর ব্যাখ্যায় ইবনু কাছীর (৭০১-৭৭৪ হি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, أمرهم بالجماعة ونهاهم عن التفرقة ‘তাদেরকে জামা‘আতবদ্ধ জীবন-যাপনের নির্দেশ দিয়েছেন এবং বিভক্তি হতে নিষেধ করেছেন’ (তাফসীর ইবনু কাছীর, ২য় খণ্ড, পৃ. ৮৯)। ইমাম কুরতুবী (৬০০-৬৭১ হি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, إن الله تعالى يأمر بالألفة وينهى عن الفرقة فإن الفرقة هلكة والجماعة نجاة ‘আল্লাহ তা‘আলা মিলেমিশে ঐক্যবদ্ধ থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন এবং বিভক্ত হতে নিষেধ করেছেন। কেননা বিভক্ত ধ্বংসের কারণ এবং ঐক্যবদ্ধ থাকা মুক্তির কারণ’ (তাফসীরে কুরতুবী, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ১৫৯)। আর বিভক্তি ব্যর্থতা ও শক্তি বিনষ্টের কারণ (আযওয়াউল বায়ান, ২য় খণ্ড, পৃ. ১০২)। যেমন মহান আল্লাহ বলেন,
وَأَطِيْعُوا اللَّهَ وَرَسُوْلَهُ وَلَا تَنَازَعُوْا فَتَفْشَلُوْا وَتَذْهَبَ رِيْحُكُمْ وَاصْبِرُوْا إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِيْنَ
‘আর তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করবে এবং নিজেদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ করবে না, অন্যথা শক্তি বিলুপ্ত হবে, আর তোমরা সাহস হারিয়ে দুর্বল হয়ে পড়বে এবং তোমাদের মনের দৃঢ়তা ও তোমরা ধৈর্যসহকারে সব কাজ করবে, আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন’ (সূরা আল-আনফাল : ৪৫-৪৭)।
প্রশ্নকারী : আবুল হোসেন, মোহনপুর, রাজশাহী।