সোমবার, ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:০৫ অপরাহ্ন
উত্তর : চল্লিশ দিন পূর্বে বা রূহ ফুঁকে দেয়ার পূর্বে ভ্রুণমোচন বা গর্ভপাত করা যাবে কি-না সে ব্যাপারে ফক্বীহগণের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। তবে অধিকাংশ আলেম বলেন, ‘বিশেষ প্রয়োজনে রূহ ফুঁকে দেয়ার পূর্বে ভ্রুণমোচন বা ভূপাতিতকরণ জায়েয (আল-বাহরুর রায়িক্ব, ৩/২১৫; হাশিয়াতু ইবনে আবিদীন, ৩/১৭৬; আল-গরারুল বাহিয়্যাহ, ৫/৩৩১; শারহু মুনতাহাল ইরাদাত, ১/১২১; মাত্বালীবু আওলান নূহা, ১/২৬৮ পৃ.)। কেননা এখনো তা জমাটবাঁধা রক্তপিণ্ড অবস্থায় থাকে, আর এই অবস্থায় তাকে সন্তান হিসাবে বিবেচনা করা হয় না (মাত্বালীবু আওলান নূহা, ১/২৬৭ পৃ.; লিক্বাউশ শাহরী, লিক্বা নং-৩৮)। শায়খ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘বিশেষ প্রয়োজন ব্যতীত চল্লিশ দিনের পূর্বেও ভ্রুণ বিনষ্ট করা উচিত নয়। তবে হ্যাঁ, শরী‘আতসম্মত কারণে রূহ ফুঁকে দেয়ার পূর্বে দোষনীয় নয়। যেমন মায়ের জীবনের ঝুঁকি কিংবা ভ্রুণের অসম্পূর্ণতা (ফাতাওয়া নূরুন আলাদ্ দারব্ ইবনে বায, ২১/৪৩০ পৃ.)। ইবনুল হুমাম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘কোনরূপ আকৃতি তৈরি হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত বৈধ। আর আকৃতি তৈরি বলতে চার মাস বা ১২০ দিন বুঝানো হয়েছে। কেননা এই সময়েই রূহ ফুঁকে দেয়া হয় (ফাৎহুল ক্বাদীর, ৩/৪০১ পৃ.)। রামলী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, ‘অধিক গ্রহণযোগ্য মতানুযায়ী রূহ ফুঁকে দেয়ার পর তা সম্পূর্ণরূপে হারাম। আর বিশেষ প্রয়োজনে রূহ ফুঁকে দেয়ার পূর্বে জায়েয’ (নিহায়াতুল মুহতাজ, ৮/৪৪৩ পৃ.)।

ফিক্বাহবিদদের মধ্যে কেউ কেউ বৈধ হওয়ার জন্য শর্তারোপ করে বলেন, শরী‘আতসম্মত ওযর ছাড়া বৈধ নয় (আল-মাওসূ‘আতুল ফিক্বহিয়্যাহ, (২/৫৭ পৃ.)। ‘উচ্চ উলামা পরিষদ’ এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, (১) যথাযথ শারঈ কারণ ও নির্ধারিত সীমারেখা ব্যতীত গর্ভস্থিত ভ্রুণ যে ধাপেরই হোক না কেন সেটা নষ্ট করা নাজায়েয। (২) যদি গর্ভস্থিত ভ্রুণটি প্রথম ধাপে থাকে অর্থাৎ প্রথম চল্লিশ দিনের মধ্যে এবং যদি গর্ভপাত করার মধ্যে কোন শারঈ কল্যাণ থাকে কিংবা কোন ক্ষতি রোধকরণ থাকে, তাহলে গর্ভপাত করা জায়েয হবে। পক্ষান্তরে এই সময়সীমার মধ্যে গর্ভপাতের কারণ যদি হয় সন্তানদের প্রতিপালনের কষ্ট কিংবা তাদের জীবিকা ও শিক্ষার ব্যয়ভার বহনের ভয় কিংবা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশংকা কিংবা স্বামী-স্ত্রীর যে কয়জন সন্তান আছে তারাই যথেষ্ট ইত্যাদি, তাহলে গর্ভপাত করা নাজায়েয (আল-ফাতাওয়া আল-জামি‘আহ, ৩/১০৫৫ পৃ.)। সঊদী আরবের স্থায়ী ফাতাওয়া কমিটির আরেমগণ বলেন, ‘নারীর গর্ভস্থিত ভ্রুণকে কোন শারঈ কারণ ব্যতীত গর্ভপাত করা নাজায়েয। যদি গর্ভস্থিত বস্তুটি বির্যের অবস্থায় থাকে, আর তা থাকে চল্লিশদিন বা তার চেয়ে কম সময়ের মধ্যে এবং সেটি ভূপাতিত করার মধ্যে কোন শারঈ কল্যাণ থাকে কিংবা মায়ের উপর থেকে সম্ভাব্য কোন ক্ষতি রোধ করার বিষয় থাকে, তাহলে এমতাবস্থায় সেটি ভূপতিত করা জায়েয। তবে সন্তানদের প্রতিপালনের কষ্ট, তাদের ব্যয়ভার বহন বা প্রতিপালনের অক্ষমতা কিংবা যে কয়জন সন্তান আছে তারাই যথেষ্ট ইত্যাদি অ-শারঈ কারণগুলো এর মধ্যে পড়বে না। আর যদি ভ্রুণের বয়স চল্লিশ দিন পার হয়ে যায় তাহলে সেটি নষ্ট করা হারাম। কেননা চল্লিশ দিন পর সেটি রক্তপিণ্ডে পরিণত হয়, যা মানবাকৃতির সূচনা। তাই এ স্তরে পৌঁছার পর বিশ্বস্ত কোন ডাক্তার গর্ভধারণ চলমান রাখা মায়ের জীবনের জন্য বিপদজনক এবং চলমান রাখলে মায়ের জীবন বিপন্ন হতে পারে মর্মে সিদ্ধান্ত দেওয়া ব্যতীত সেটি নষ্ট করা জায়েয নয়। আল্লাহই সর্বজ্ঞ (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমা, ২১/৪৫০ পৃ.; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফাতাওয়া নং-১১৫৯৫৪)।


প্রশ্নকারী : আব্দুল জাব্বার, সাতক্ষীরা।





প্রশ্ন (৮) : বর্তমান সময়ে খুবই প্রচলিত একটা ব্যাবসা হচ্ছে, কম মূল্যে পণ্য বিক্রির উদ্দেশ্যে ক্রেতার নিকট থেকে আগেই পণ্যের টাকা নিয়ে নেয়। অতঃপর ২/৩ মাস বা আরো বেশি সময়ের পর পণ্য দেয়। মানুষের প্রয়োজনীয় যত পণ্য আছে প্রায় সবই দিয়ে থাকে বিভিন্ন অফারে। যেমন ৫০%, ১০০%, কোন কোনটা ১৫০% ছাড়। যেমন : ২৫ হাজার টাকার ফ্রীজ ১২ হাজার টাকায়- ডেলিভারি দিবে ২/৩ মাস পর। এভাবে মোবাইল, মোটর সাইকেল ইত্যাদি। এই ব্যবসা কি জায়েয? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৩) : হারাম পথে উপার্জিত সম্পদ দ্বারা হজ্জ করলে হজ্জ হবে কি? সন্তানের হারাম পথে উপার্জিত অর্থ দিয়ে পিতা-মাতা হজ্জ করতে পারবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৫) : ইমাম দু‘আ কুনূত পাঠ করার সময় মুক্তাদীগণ শুধু আমীন আমীন বলবেন, না-কি ইমামের সাথে দু‘আ কুনূতও পাঠ করবেন? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৭) : পিতা-মাতার জন্য কুরআনে বর্ণিত দু‘আ ‘রব্বির হামহুমা কামা রব্বায়ানি ছগীর’ রয়েছে। কিন্তু মৃত আত্মীয়-স্বজন বা মৃত কোন মুসলিম ব্যক্তির জন্য আরবীতে কোন দু‘আ আছে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২২) : কোন জরুরী কারণে মুক্বীম অবস্থায় ছালাত জমা করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৯) : ছালাত শুরুর প্রথম তাকবীর ‘আল্লাহু আকবার’ ইমাম ও মুক্তাদী উভয়ে কি উচ্চৈঃস্বরে বলতে পারবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩০) : জনৈক আলোচক বলেন, ইখতিলাফের সময় আমার সুন্নাতের উপর অটল থাকা আগুনের অঙ্গার মুষ্ঠিবদ্ধ ধরে রাখার মত কঠিন হবে। উক্ত দাবী কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২১) : জনৈক ব্যক্তি বলেছেন, মক্কা বিজয়ের আগে নবী করীম (ﷺ) নাকি মূর্তিকে সিজদা করতেন। কথা কি আদৌ সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২) : জনৈক খত্বীব বলেন, মুহাররমের ১ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত ছিয়াম রাখলে ৫০ বছর নফল ছিয়াম পালনের নেকী লেখা হয়। উক্ত বক্তব্য কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৮) : আড়াই মাসের গর্ভবতী হঠাৎ করে রক্তপাত শুরু হলে বাচ্চা নষ্ট হয়ে যায়। এখন তার ছালাতের মাসআলা কী হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৯) : গীবত করা যেনার চেয়ে বড় পাপ। উক্ত বক্তব্য কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৫) : জনৈক এক আলেম বলেছেন, দু‘আয়ে কুনুত ছাড়া বিতর ছালাত হবে না। উক্ত বক্তব্য কি সঠিক? বিতর ছালাত দু‘আয়ে কুনুত ছাড়া শুদ্ধ হবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ