বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:১৮ অপরাহ্ন
উত্তর : চল্লিশ দিন পূর্বে বা রূহ ফুঁকে দেয়ার পূর্বে ভ্রুণমোচন বা গর্ভপাত করা যাবে কি-না সে ব্যাপারে ফক্বীহগণের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। তবে অধিকাংশ আলেম বলেন, ‘বিশেষ প্রয়োজনে রূহ ফুঁকে দেয়ার পূর্বে ভ্রুণমোচন বা ভূপাতিতকরণ জায়েয (আল-বাহরুর রায়িক্ব, ৩/২১৫; হাশিয়াতু ইবনে আবিদীন, ৩/১৭৬; আল-গরারুল বাহিয়্যাহ, ৫/৩৩১; শারহু মুনতাহাল ইরাদাত, ১/১২১; মাত্বালীবু আওলান নূহা, ১/২৬৮ পৃ.)। কেননা এখনো তা জমাটবাঁধা রক্তপিণ্ড অবস্থায় থাকে, আর এই অবস্থায় তাকে সন্তান হিসাবে বিবেচনা করা হয় না (মাত্বালীবু আওলান নূহা, ১/২৬৭ পৃ.; লিক্বাউশ শাহরী, লিক্বা নং-৩৮)। শায়খ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘বিশেষ প্রয়োজন ব্যতীত চল্লিশ দিনের পূর্বেও ভ্রুণ বিনষ্ট করা উচিত নয়। তবে হ্যাঁ, শরী‘আতসম্মত কারণে রূহ ফুঁকে দেয়ার পূর্বে দোষনীয় নয়। যেমন মায়ের জীবনের ঝুঁকি কিংবা ভ্রুণের অসম্পূর্ণতা (ফাতাওয়া নূরুন আলাদ্ দারব্ ইবনে বায, ২১/৪৩০ পৃ.)। ইবনুল হুমাম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘কোনরূপ আকৃতি তৈরি হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত বৈধ। আর আকৃতি তৈরি বলতে চার মাস বা ১২০ দিন বুঝানো হয়েছে। কেননা এই সময়েই রূহ ফুঁকে দেয়া হয় (ফাৎহুল ক্বাদীর, ৩/৪০১ পৃ.)। রামলী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, ‘অধিক গ্রহণযোগ্য মতানুযায়ী রূহ ফুঁকে দেয়ার পর তা সম্পূর্ণরূপে হারাম। আর বিশেষ প্রয়োজনে রূহ ফুঁকে দেয়ার পূর্বে জায়েয’ (নিহায়াতুল মুহতাজ, ৮/৪৪৩ পৃ.)।

ফিক্বাহবিদদের মধ্যে কেউ কেউ বৈধ হওয়ার জন্য শর্তারোপ করে বলেন, শরী‘আতসম্মত ওযর ছাড়া বৈধ নয় (আল-মাওসূ‘আতুল ফিক্বহিয়্যাহ, (২/৫৭ পৃ.)। ‘উচ্চ উলামা পরিষদ’ এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, (১) যথাযথ শারঈ কারণ ও নির্ধারিত সীমারেখা ব্যতীত গর্ভস্থিত ভ্রুণ যে ধাপেরই হোক না কেন সেটা নষ্ট করা নাজায়েয। (২) যদি গর্ভস্থিত ভ্রুণটি প্রথম ধাপে থাকে অর্থাৎ প্রথম চল্লিশ দিনের মধ্যে এবং যদি গর্ভপাত করার মধ্যে কোন শারঈ কল্যাণ থাকে কিংবা কোন ক্ষতি রোধকরণ থাকে, তাহলে গর্ভপাত করা জায়েয হবে। পক্ষান্তরে এই সময়সীমার মধ্যে গর্ভপাতের কারণ যদি হয় সন্তানদের প্রতিপালনের কষ্ট কিংবা তাদের জীবিকা ও শিক্ষার ব্যয়ভার বহনের ভয় কিংবা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশংকা কিংবা স্বামী-স্ত্রীর যে কয়জন সন্তান আছে তারাই যথেষ্ট ইত্যাদি, তাহলে গর্ভপাত করা নাজায়েয (আল-ফাতাওয়া আল-জামি‘আহ, ৩/১০৫৫ পৃ.)। সঊদী আরবের স্থায়ী ফাতাওয়া কমিটির আরেমগণ বলেন, ‘নারীর গর্ভস্থিত ভ্রুণকে কোন শারঈ কারণ ব্যতীত গর্ভপাত করা নাজায়েয। যদি গর্ভস্থিত বস্তুটি বির্যের অবস্থায় থাকে, আর তা থাকে চল্লিশদিন বা তার চেয়ে কম সময়ের মধ্যে এবং সেটি ভূপাতিত করার মধ্যে কোন শারঈ কল্যাণ থাকে কিংবা মায়ের উপর থেকে সম্ভাব্য কোন ক্ষতি রোধ করার বিষয় থাকে, তাহলে এমতাবস্থায় সেটি ভূপতিত করা জায়েয। তবে সন্তানদের প্রতিপালনের কষ্ট, তাদের ব্যয়ভার বহন বা প্রতিপালনের অক্ষমতা কিংবা যে কয়জন সন্তান আছে তারাই যথেষ্ট ইত্যাদি অ-শারঈ কারণগুলো এর মধ্যে পড়বে না। আর যদি ভ্রুণের বয়স চল্লিশ দিন পার হয়ে যায় তাহলে সেটি নষ্ট করা হারাম। কেননা চল্লিশ দিন পর সেটি রক্তপিণ্ডে পরিণত হয়, যা মানবাকৃতির সূচনা। তাই এ স্তরে পৌঁছার পর বিশ্বস্ত কোন ডাক্তার গর্ভধারণ চলমান রাখা মায়ের জীবনের জন্য বিপদজনক এবং চলমান রাখলে মায়ের জীবন বিপন্ন হতে পারে মর্মে সিদ্ধান্ত দেওয়া ব্যতীত সেটি নষ্ট করা জায়েয নয়। আল্লাহই সর্বজ্ঞ (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমা, ২১/৪৫০ পৃ.; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফাতাওয়া নং-১১৫৯৫৪)।


প্রশ্নকারী : আব্দুল জাব্বার, সাতক্ষীরা।





প্রশ্ন (২৩) : প্রাণী অথবা মানুষের ছবি বিশিষ্ট কাপড় পরিধান করে ছালাত আদায় করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৪) : আমার মেয়ের জন্মের সপ্তম দিনে আক্বীক্বা করেছি। কিন্তু নামটা ইসলামী বা সুন্দর অর্থবোধক নয়। এমতাবস্থায় আবার আক্বীক্বা করতে হবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৪) : বার্ধক্যের কারণে মাঝে মধ্যে ফোঁটা ফোঁটা পেশাব পড়ে। এমতাবস্থায় ছালাত হবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৭) : উবাই ইবনু কা‘ব (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, যে ছেলেটিকে খিযির হত্যা করেছিলেন, তাকে কাফির হিসাবেই সীলমোহর করা হয়েছিল। সে বেঁচে থাকলে তার পিতা-মাতাকে সীমালঙ্ঘন ও কুফরীর দ্বারা বিব্রত করত। উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যা কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৮) : প্রতি বছর ‘আরাফার দিন (৯ যিলহজ্জ) ছিয়াম রাখা সুন্নাত। কিন্তু বাংলাদেশের হিসাব অনুযায়ী সাধারণত ৮ কিংবা ৭ যিলহজ্জ তারিখে ‘আরাফা হয়। এক্ষণে করণীয় কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২০) : আমি গরু মোটাতাজা করি। ছয় থেকে আট মাস পালন করে বিক্রি করি। প্রশ্ন হল- গরুর বর্তমান মূল্যের টাকা হিসাব করে যাকাত দিতে হবে, না-কি মূলধন টাকা হিসাব করে যাকাত দিতে হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৯) : নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মৃত ব্যক্তিকে কবরে রাখা হলে সে সূর্যকে অস্তমিত হতে দেখতে পায়। তখন সে উঠে বসে এবং তার চক্ষুদ্বয় মলতে মলতে বলে, আমাকে ছেড়ে দাও, আমি ছালাত আদায় করব (ইবনু মাজাহ, হা/৪২৭২)। অনেকেই উক্ত হাদীছের আলোকে বলে থাকে যে, মৃত ব্যক্তি কবরে ছালাত পড়ে। তাদের দাবি কি গ্রহণযোগ্য? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৪৪) : ঈদুল ফিতরের ছালাত আদায়ের পর পরিবারের সবাই মিলে কবর যিয়ারত করা কি যায়েয? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১১) : রামাযানের ক্বাযা বা ছুটে যাওয়া ছিয়াম কখন আদায় করতে হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২) : ইসলামে বায়‘আতের বিধান কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৭) : তিন ভাইয়ের মধ্যে দুই ভাই শহরে থাকে। তারা শহরে থাকলেও একই পরিবারভুক্ত। এমন পরিবারের পক্ষ থেকে একটি ছাগল কুরবানী দেয়া যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৭) : বিভিন্ন ভাষায় রচিত গল্প, নাটক, উপন্যাসের বই বিক্রি করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ

ফেসবুক পেজ