রবিবার, ১২ মে ২০২৪, ০৮:১২ অপরাহ্ন

মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর গুণাবলী ও মর্যাদা

- আবূ মাহী*


 (৪র্থ কিস্তি)

লজ্জাশীলতা এবং অবনত দৃষ্টিসম্পন্ন

মহান আল্লাহ বলেন,

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَدۡخُلُوۡا بُیُوۡتَ النَّبِیِّ  اِلَّاۤ اَنۡ یُّؤۡذَنَ لَکُمۡ  اِلٰی طَعَامٍ غَیۡرَ نٰظِرِیۡنَ  اِنٰىہُ ۙ وَ لٰکِنۡ  اِذَا دُعِیۡتُمۡ فَادۡخُلُوۡا فَاِذَا طَعِمۡتُمۡ فَانۡتَشِرُوۡا وَ لَا مُسۡتَاۡنِسِیۡنَ لِحَدِیۡثٍ ؕ اِنَّ ذٰلِکُمۡ کَانَ یُؤۡذِی النَّبِیَّ فَیَسۡتَحۡیٖ مِنۡکُمۡ ۫ وَ اللّٰہُ  لَا یَسۡتَحۡیٖ مِنَ الۡحَقِّ

‘হে মুমিনগণ! তোমাদেরকে অনুমতি দেয়া না হলে তোমরা আহার প্রস্তুতির জন্য অপেক্ষা না করে (ভোজনের জন্য) নবী গৃহে প্রবেশ করো না। তবে তোমাদেরকে আহ্বান করা হলে তোমরা প্রবেশ করো এবং আহার শেষে তোমরা চলে যাও; তোমরা কথা-বার্তায় মশগুল হয়ে পড়ো না, কারণ তোমাদের এই আচরণ নবী কে পীড়া দেয়, অথচ তিনি তোমাদের থেকে (উঠিয়ে দিতে) সংকোচ বোধ করেন; কিন্তু আল্লাহ সত্য বলতে সংকোচ বোধ করেন না’ (সূরা আল-আহযাব : ৫৩)।

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ছিলেন সবচেয়ে লজ্জাশীল এবং অবনত দৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি কখনই নিজ দৃষ্টি অন্যের উপর অধিক সময় ধরে রাখতেন না। সব সময় দৃষ্টি নীচের দিকে রাখতেন এবং আকাশের দিকে রাখার চেয়ে মাটির দিকে দৃষ্টি রাখাটাই অধিক পসন্দ করতেন। লজ্জা প্রবণতা তাঁর মধ্যে এত অধিক ছিল যে, কোন অপসন্দনীয় কথা কাউকেও তিনি মুখোমুখী বলতেন না। আবূ সাঈদ খুদরী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন,

كَانَ النَّبِيُّ ﷺ أَشَدَّ حَيَاءً مِنَ الْعَذْرَاءِ فِيْ خِدْرِهَا فَإِذَا رَأَى شَيْئًا يَكْرَهُهُ عَرَفْنَاهُ فِيْ وَجْهِهِ

‘নবী করীম (ﷺ) কুমারী মেয়েদের চাইতেও বেশী লাজুক ছিলেন। যখন তিনি কোন কিছু অপছন্দ করতেন তখন আমরা তাঁর চেহারা দেখে বুঝতে পেতাম’।[১] ফারাযদাক্বের কবিতাতেও রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর লজ্জাশীলতার বর্ণনা ফুটে উঠেছে।

يغضي حياء ويغضي من مهابته ** فلا يكلم إلا حين يتبسم

‘লজ্জাশীলতার কারণে নবী করীম (ﷺ) দৃষ্টি নীচু রাখতেন এবং তাঁর ভয়ে অন্যান্যরা দৃষ্টি নীচু রাখতেন। তিনি যখন মৃদু হাসতেন তখন তাঁর সঙ্গে কথোপকথন করা হত’।[২]

ন্যায়পরায়ণতা, সত্যবাদীতা এবং আমানতদারিতা

নবী করীম (ﷺ) ছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ন্যায় বিচারক, সর্বাধিক পবিত্র, সর্বাধিক সত্যবাদী এবং সব চেয়ে নির্ভরযোগ্য আমানতদার। তাঁর এ সকল গুণাবলীর কথা বন্ধু তো বটেই, শত্রুগণও এক বাক্যে স্বীকার করে থাকেন। নবুওতের পূর্বে জাহেলিয়াত যুগে তাঁকে আল-আমীন উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছিল। যে যুগেও বিরোধের ন্যায়সঙ্গত মীমাংসার উদ্দেশ্যে লোকেরা তাঁর ন্যায়বিচার গ্রহণ করত এবং তাঁর নিকট ন্যায় বিচারের জন্য আগমন করত।[৩] তিনি (ﷺ) ছিলেন সত্যবাদী, যা জাহেল কাফির-মুশরিকরাও অকপটে স্বীকার করত। যেমন রোম সম্রাট হিরাক্বল আবূ সুফইয়ানকে রাসূল মুহাম্মাদ (ﷺ) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, فَهَلْ كُنْتُمْ تَتَّهِمُوْنَهُ بِالْكَذِبِ قَبْلَ أَنْ يَقُوْلَ مَا قَالَ  ‘তাঁর বর্তমানের কথাবার্তার পূর্বে তোমরা তাঁকে কখনো মিথ্যাচারের অপবাদ দিয়েছ কি? আবূ সুফইয়ান বলেছিলেন, না।[৪] অর্থাৎ মুহাম্মাদ (ﷺ) যে সত্যবাদী ছিলেন, তাঁরা তা স্বীকার করত। আব্দুল্লাহ ইবনু সালাম (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন,

لَمَّا قَدِمَ النَّبِيُّ  ﷺ الْمَدِيْنَةَ جِئْتُ فَلَمَّا تَبَيَّنْتُ وَجْهَهُ عَرَفْتُ أَنَّ وَجْهَهُ لَيْسَ بِوَجْهِ كَذَّابٍ

‘যখন নবী করীম (ﷺ) হিজরত করে মদীনায় আগমন করলেন, আমি তাঁর নিকট আসলাম। যখন আমি তাঁর চেহারা নিরীক্ষণ করলাম, তখন বুঝতে পারলাম যে, তাঁর চেহারা কোন মিথ্যুকের চেহারা নয়’।[৫] মহান আল্লাহ বলেন, 

فَاِنَّہُمۡ لَا یُکَذِّبُوۡنَکَ وَ لٰکِنَّ الظّٰلِمِیۡنَ  بِاٰیٰتِ  اللّٰہِ  یَجۡحَدُوۡنَ

‘এ লোকজনেরা আপনাকে মিথ্যা বলে না বরং এ জালেমরা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অস্বীকার করছে’ (সূরা আল-আন‘আম : ৩৩)।

ক্রোধ ও প্রতিহিংসাপরায়ণতার ঊর্ধ্বে অবস্থান

নবী করীম (ﷺ) ক্রোধ ও প্রতিহিংসাপরায়ণতার অনেক উর্ধ্বে অবস্থান করতেন। তিনি নিজের কোন ব্যাপারে কখনও প্রতিশোধ গ্রহণ করেননি। তবে আল্লাহর জন্য হলে প্রতিশোধ গ্রহণ করতেন। আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন,

مَا خُيِّرَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ بَيْنَ أَمْرَيْنِ قَطُّ إِلَّا أَخَذَ أَيْسَرَهُمَا مَا لَمْ يَكُنْ إِثْمًا فَإِنْ كَانَ إِثْمًا كَانَ أَبْعَدَ النَّاسِ مِنْهُ وَمَا انْتَقَمَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ لِنَفْسِهِ فِيْ شَيْءٍ قَطُّ إِلَّا أَنْ يُنْتَهَكُ حُرْمَةُ اللهِ فَيَنْتَقِمُ لِلهِ بِهَا

‘রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর জন্য যখনই দু’টি ব্যাপারে এখতিয়ার দেয়া হয়েছে তখন তিনি উভয়টির মধ্যে যেটি সহজতর সেটি গ্রহণ করেছেন। তবে এই শর্তে যে, সেটি যেন কোন প্রকারের গোনাহের কাজ না হয়। কিন্তু যদি তা গোনাহের কাজ হত, তবে তিনি তা হতে সকলের চাইতে অনেক দূরে সরে থাকতেন। আর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নিজের কোন ব্যাপারে কখনও প্রতিশোধ গ্রহণ করেননি। তবে কেউ যদি আল্লাহর নিষিদ্ধ কোন কাজ করত, তখন আল্লাহর উদ্দেশ্যে তার উপর প্রতিশোধ গ্রহণ করতেন’।[৬] আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) আরো বলেন,

مَا ضَرَبَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ لِنَفْسِهِ شَيْئًا قَطُّ بِيَدِهِ وَلَا امْرَأَةً وَلَا خَادِمًا إِلَّا أَنْ يُجَاهِدَ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ وَمَا نِيْلَ مِنْهُ شَيْءٌ قَطُّ فَيَنْتَقِمُ مِنْ صَاحِبِهِ إِلَّا أَنْ يُنْتَهَكَ شَيْءٌ مِنْ مَحَارِمِ اللهِ فَيَنْتَقِمُ لِلهِ

‘আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ ব্যতীত রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর স্বহস্তে কোন নারীকে, কোন খাদিমকে কোন দিন আঘাত করেননি। আর যে তাঁর অনিষ্ট করেছে তার থেকে প্রতিশোধও নেননি। তবে আল্লাহর মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয় এমন বিষয়ে তিনি তার প্রতিশোধ নিয়েছেন’।[৭]

সর্বাধিক প্রতিজ্ঞাপরায়ণ

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ছিলেন সর্বাধিক প্রতিজ্ঞাপরায়ণ। ন্যায়সঙ্গত কোন চুক্তি কিংবা বোঝাপড়ার ক্ষেত্রে সর্বাগ্রে তিনিই সহজভাবে সম্মতি জ্ঞাপন করতেন। তিনি কখনো চুক্তি ভঙ্গ করতেন না। রোম সম্রাট হিরাক্বল আবূ সুফইয়ানকে রাসূল মুহাম্মাদ (ﷺ) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, فَهَلْ يَغْدِرُ؟ ‘তিনি কি প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন?’ আবূ সুফইয়ান বলেছিলেন, না।[৮]

সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ছিলেন অতুলনীয় ব্যক্তি বৈশিষ্ট্যে মণ্ডিত ও সুশোভিত সর্বকালোপযোগী এক পরিপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। মহান আল্লাহ মুহাম্মাদ (ﷺ)-কে এক অতুলনীয় আদর্শবোধ, একাগ্রচিত্ততা এবং চরিত্র সম্পদে ভূষিত করেছিলেন। মহান আল্লাহ তাঁর সুমহান চরিত্র সম্পর্কে বলেন, وَ اِنَّکَ لَعَلٰی خُلُقٍ عَظِیۡمٍ ‘নিশ্চয় আপনি মহান চরিত্রের উচ্চামার্গে উন্নীত’ (সূরা আল-ক্বলাম : ৪)। আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-কে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর চরিত্র সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তিনি তাঁর চরিত্র সম্পর্কে বলেন, كَانَ خُلُقُهُ الْقُرْآنَ ‘কুরআনই তাঁর চরিত্র’।[৯] আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, كَانَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ مِنْ أَحْسَنِ النَّاسِ خُلُقًا ‘রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ছিলেন সর্বোত্তম চরিত্রের মানুষ’।[১০]

তাঁর চরিত্রে অন্যদের কষ্ট দেয়ার মত কোন কালিমা লেপন হয়নি। তিনি কখনো কাউকে গালি, কষ্ট, অভিশাপ দিতেন না এবং কার জন্য অশালীন বাক্য ব্যবহার করতেন না। আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, لَمْ يَكُنْ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ فَاحِشًا وَلَا لَعَّانًا وَلَا سَبَّابًا كَانَ يَقُوْلُ عِنْدَ الْمَعْتَبَةِ مَا لَهُ تُرِبَ جَبِيْنُهُ ‘রাসূলুল্লাহ (ﷺ) অশালীন বাক্য, অভিশাপকারী এবং গালি প্রদানকারী ছিলেন না। তিনি যখন কারও মধ্যে অপছন্দনীয় কাজ দেখতেন তখন বলতেন যে, তার কি হল? তার কাপল ভুলন্ঠিত হোক’।[১১]

কোন প্রকার সংকীর্ণতা কিংবা অশালীনতা থেকে তাঁর স্থান ছিল অনেক দূরত্বে। মুশরিক কর্তৃক অবর্ণনীয় দুঃখ যন্ত্রণা সত্ত্বেও কাউকেও তিনি কোন অভিশাপ দেননি কিংবা অন্যায়াচরণের পরিবর্তে অন্যায়াচরণ করেননি বরং প্রতিদানে তিনি দিয়েছেন ক্ষমা ও মার্জনা। একদা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে জিজ্ঞেস করা হল, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! কাফির মুশরিকদের উপর অভিশাপ করুন। তিনি বলেছিলেন, إِنِّيْ لَمْ أُبْعَثْ لَعَّانًا وَإِنَّمَا بُعِثْتُ رَحْمَةً ‘আমাকে অভিসম্পাতকারী করে পাঠানো হয়নি বরং আমাকে রহমতস্বরূপ পাঠানো হয়েছে’।[১২] আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন,

لَمْ يَكُنْ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ فَاحِشًا وَلَا مُتَفَحِّشًا وَلَا سَخَّابًا فِي الْأَسْوَاقِ وَلَا يَجْزِي بِالسَّيِّئَةِ السَّيِّئَةَ وَلَكِنْ يَعْفُو وَيَصْفَحُ

‘রাসূলুল্লাহ (ﷺ) অশ্লীল ও অশোভন কথা বলতেন না, বাজারে শোরগোলকারী ছিলেন না এবং তিনি মন্দের প্রতিশোধ মন্দের দ্বারা নিতেন না। বরং ক্ষমা করতেন এবং উপেক্ষা করতেন’।[১৩]

স্নেহশীল ও করুণাপরায়ণ

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ছিলেন খুবই হিতাকাঙ্ক্ষী, স্নেহশীল ও করুণাপরায়ণ। তবে মুমিনদের প্রতি ভালোবাসা, স্নেহ ও করুণা অধিক মাত্রায় ছিল। মহান আল্লাহ নবী করীম (ﷺ)-এর গুণাবলী পেশ করে বলেন, لَقَدۡ جَآءَکُمۡ رَسُوۡلٌ مِّنۡ اَنۡفُسِکُمۡ عَزِیۡزٌ عَلَیۡہِ مَا عَنِتُّمۡ حَرِیۡصٌ عَلَیۡکُمۡ بِالۡمُؤۡمِنِیۡنَ رَءُوۡفٌ رَّحِیۡمٌ ‘তোমাদের নিকট আগমন করেছেন তোমাদেরই জাত-স্বত্ত্বার এমন একজন রাসূল যার কাছে তোমাদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া অতি কষ্টদায়ক মনে হয়, যিনি হচ্ছেন তোমাদের খুবই হিতাকাঙ্ক্ষী, মুমিনদের প্রতি বড়ই স্নেহশীল, করুণাপরায়ণ’ (সূরা আত-তাওবাহ : ১২৮)।

তিনি ছিলেন স্নেহময়। আদর, সোহাগ, বাৎসল্য, প্রীতি, ভালোবাসা দিয়ে তার জীবন পরিপূর্ণ ছিল। ছোটরা তাঁর স্নেহালিঙ্গনে শীতলতা ও সুগন্ধি অনুভব করতেন। ছোটদের প্রতি তিনি ছিলেন মায়ামমতায় সহৃদয়। ছোটদের প্রতি তিনি এতটাই স্নেহময় ছিলেন যে, কেউ যদি তাঁর ‘মোহরে নবুওত’ নিয়ে খেলাধূলা করত, তবুও তিনি তাদের কিছু বলতেন না। বরং তাদের খেলার সুযোগ দিতেন। হাদীছে এসেছে, একদা উম্মু খালেদ ... নবী করীম (ﷺ)-এর মোহরে নবুওত স্পর্শ করে খেলতে লাগল। তখন তাঁর পিতা তাঁকে ধমক দিলেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর পিতাকে বললেন, তাঁকে ছেড়ে দাও।[১৪]

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ছোটদের প্রতি ভালোবাসার পরশ বুলিয়ে দিতেন। জাবির ইবনু সামুরা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সাথে প্রথম ছালাত আদায় করলাম। অতঃপর তিনি তাঁর ঘরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হলেন এবং আমিও তাঁর সঙ্গে বের হলাম। এ সময় কয়েকজন শিশু তাঁর সামনে এসে উপস্থিত হল। তখন তিনি প্রতিটি শিশুর গালে হাত বুলিয়ে দিলেন। অবশেষে আমার উভয় গালে হাত বুলালেন। তখন আমি তাঁর হাতের শীতলতা ও সুগন্ধি অনুভব করলাম। তাঁর হাতটি এমন সুগন্ধময় ছিল যে, যেন তাকে কোন আতরের ডিব্বা হতে বের করে এনেছেন।[১৫]

আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর চাইতে সন্তানের প্রতি অত্যধিক স্নেহ মমতা পোষণাকারী আর কাউকেও দেখিনি। তাঁর পুত্র ইবরাহীম মদীনার উচুঁ প্রান্তে ধাত্রী মায়ের কাছে দুধ পান করতেন, তিনি সেখানে গমন করতেন এবং আমরাও তাঁর সঙ্গে গমন করতাম। তিনি উক্ত গৃহে প্রবেশ করতেন অথচ সেই গৃহটি ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন থাকত। কারণ ইবরাহীমের ধাত্রী মায়ের স্বামী ছিল একজন কর্মকার। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইবরাহীমকে কোলে তুলে নিতেন এবং আদর করে চুমু দিতেন। অতঃপর ফিরে আসতেন। যখন ইবরাহীম মৃত্যুবরণ করলেন, তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, إِنَّ إِبْرَاهِيْمَ ابْنِيْ وَإِنَّهُ مَاتَ فِي الثَّدْيِ وَإِنَّ لَهُ لَظِئْرَيْنِ تُكْمِلَانِ رَضَاعَهُ فِي الْجَنَّةِ ‘ইবরাহীম আমার পুত্র, সে দুধ পান করা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে। অবশ্যই সে জান্নাতে তাঁর দুগ্ধ পানের মুদ্দত পূর্ণ করবে’।[১৬]

ধৈর্যশীলা

মহান আল্লাহ আল-কুরআনের প্রায় বিশ জায়গাতে তাঁকে ধৈর্য ধারণের নির্দেশ প্রদান করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন, وَ لِرَبِّکَ  فَاصۡبِرۡ ‘এবং আপনার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে ধৈর্যধারণ করুন’ (সূরা আল-মুদ্দাস্সির : ৭)। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর গুণাবলীর মধ্যে অন্যতম গুণাবলী হল তিনি অত্যন্ত ধৈর্যশীল ছিলেন। হাদীছে বর্ণিত হয়েছে,

عَنْ أَبِيْ سَعِيْدِ الْخُدْرِيِّ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ إِنَّ أُنَاسًا مِّنَ الْأَنْصَارِ سَأَلُوْا رَسُوْلَ اللهِ ﷺ فَأَعْطَاهُمْ ثُمَّ سَأَلُوْهُ فَأَعْطَاهُمْ حَتَّى نَفِدَ مَا عِنْدَهُ. فَقَالَ مَا يَكُوْنُ عِنْدِيْ مِنْ خَيْرٍ فَلَنْ أَدَّخِرَهُ عَنْكُمْ وَمَنْ يَّسْتَعِفَّ يُعِفَّهُ اللهُ وَمَنْ يَّسْتَغْنِ يُغْنِهِ اللهُ وَمَنْ يَّتَصَبَّرْ يُصَبِّرْهُ اللهُ وَمَا أُعْطِيَ أَحَدٌ عَطَاءً هُوَ خَيْرٌ وَأَوْسَعُ مِنَ الصَّبْرِ

আবূ সাঈদ খুদরী صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ বলেন, আনসারদের কতক লোক রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নিকট কিছু চাইল এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাদেরকে দিলেন। অতঃপর তারা আবার চাইল, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাদেরকে আবার দিলেন। এমনটি তাঁর নিকট যা ছিল তা শেষ হয়ে গেল। এ সময় রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, আমার নিকট যে মাল থাকে আমি তা তোমাদেরকে না দিয়ে কখনও জমা করে রাখি না। (কিন্তু মনে রেখ) যে চাওয়া হতে বেঁচে থাকতে চায়, আল্লাহ তাকে বেঁচে থাকার উপায় করে দেন এবং যে করো মুখাপেক্ষী না হয়ে থাকতে চায় আল্লাহ তাকে করো মুখাপেক্ষী না করেই রাখেন। আর যে র্ধৈয ধারণ করতে চায় আল্লাহ তাকে ধৈর্য ধারণ করার তাওফীক্ব প্রদান করেন। মনে রেখ ধৈর্য অপেক্ষা উত্তম ও প্রশস্ততর কোন দান কেউ লাভ করতে পারে না।[১৭]

রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর উপর নানামুখী অত্যাচার করার পর তিনি যে ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন, এ জন্যই তিনি মহান ব্যক্তিত্ব। ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা (সূরা আল-আনফাল : ৩১), প্রতিবেশীদের অত্যাচার (সূরা আল-আন‘আম : ৩৪), কা‘বাগৃহে ছালাতরত অবস্থায় কষ্টদান[১৮], সম্মুখে ও পশ্চাতে নিন্দা করা ও অভিশাপ দেয়া (সূরা হুমাযাহ : ১), মুখে থুথু নিক্ষেপ করা[১৯], মুখে পচা হাড়ের গুড়া ছুঁড়ে মারা[২০], অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করা (সূরা আল-ক্বিয়ামাহ : ৩১-৩৩), শারীরিক নির্যাতন সহ হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এরপরও তিনি ধৈর্যের পরিচয় প্রদান করেছেন। মক্বা বিজয়ের দিন যখন ঐ অত্যাচারীরা তাঁর সামনে উপস্থিত, তখন তিনি তাদের উদ্দেশ্যে বললেন,ما تقولون أنى فاعل بكم؟ قالوا خيراً، أخ كريم، وابن أخ كريم ‘(হে কুরাইশগণ!) আমি তোমাদের সাথে কিরূপ আচরণ করব বলে তোমরা আশা কর? সবাই বলে উঠল, ‘উত্তম আচরণ। আপনি দয়ালু ভাই ও দয়ালু ভাইয়ের পুত্র’। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, ‘আমি তোমাদের সেকথাই বলছি, যেকথা ইউসুফ তাঁর ভাইদের বলেছিলেন,لَا تَثۡرِیۡبَ عَلَیۡکُمُ الۡیَوۡمَ ‘তোমাদের প্রতি আজ আর কোন অভিযোগ নেই’ (সূরা ইউসুফ : ৯২)। যাও তোমরা সবাই মুক্ত’।[২১]

ক্ষমা পরায়ণতা

মহান আল্লাহ বলেন, فَبِمَا رَحۡمَۃٍ مِّنَ اللّٰہِ لِنۡتَ لَہُمۡ ۚ وَ لَوۡ کُنۡتَ فَظًّا غَلِیۡظَ الۡقَلۡبِ لَانۡفَضُّوۡا مِنۡ حَوۡلِکَ ۪ فَاعۡفُ عَنۡہُمۡ وَ اسۡتَغۡفِرۡ لَہُمۡ ‘অতএব আল্লাহর অনুগ্রহ এই যে, আপনি তাদের প্রতি কোমল চিত্ত এবং আপনি যদি কর্কশ ভাষী, কঠোর হৃদয় হতেন, তবে নিশ্চয় তারা আপনার সংসর্গ হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেত, অতএব আপনি তাদেরকে ক্ষমা করুন ও তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন’ (সূরা আলে ‘ইমরান : ১৫৯)।

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ছিলেন অত্যন্ত ক্ষমাশীল। মহান আল্লাহ বলেন,  خُذِ الۡعَفۡوَ وَ اۡمُرۡ بِالۡعُرۡفِ وَ اَعۡرِضۡ عَنِ  الۡجٰہِلِیۡنَ  ‘(হে নবী!) আপনি বিনয় ও ক্ষমা পরায়ণতার নীতি গ্রহণ করুন এবং লোকদেরকে সৎকাজের নির্দেশ দিন, আর মূর্খদেরকে এড়িয়ে চলুন’ (সূরা আল-আ‘রাফ : ১৯৯)। তিনি এতটাই ক্ষমাশীল ছিলেন যে, নিজ কওমের লোকেরা তাঁকে রক্ষাক্ত করলেও তিনি পাল্টা প্রতিশোধ গ্রহণ না করে তাদের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন এবং তাদের জন্য হেদায়াতের দু‘আ করেছেন। হাদীছে এসেছে,

عَنِ ابْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كَأَنِّيْ أَنْظُرُ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ ﷺ يَحْكِيْ نَبِيًّا مِّنَ الْأَنْبِيَاءِ ضَرَبَهُ قَوْمُهُ فَأَدْمَوْهُ وَهُوَ يَمْسَحُ الدَّمَ عَنْ وَجْهِهِ وَيَقُوْلُ اللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِقَوْمِيْ فَإِنَّهُمْ لَا يَعْلَمُوْنَ

ইবনু মাসঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, আমি যেন এখনও রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর দিকে তাকাচ্ছি, যখন তিনি কোন একজন নবীদের মধ্যে থেকে এমন নবীর ঘটনা বর্ণনা করছিলেন, যাকে তার নিজ কওমের লোকেরা প্রহার করে রক্তাক্ত করেছিল। আর তিনি নিজের চেহারা হতে রক্ত মুছতে ছিলেন আর বলছিলেন, হে আল্লাহ! আপনি আমার কওমের কৃত অপরাধ ক্ষমা করে দিন। কেননা তারা অজ্ঞ’।[২২]

আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে জিজ্ঞেস করলেন; হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! উহুদের দিন অপেক্ষা অধিক কষ্টের কোন দিন আপনার জীবনে ছিল কি? তিনি বললেন, তোমার কওম হতে যে অচরণ পেয়েছি তা হতেও অধিক কষ্টদায়ক ছিল। তাদের নিকট হতে সর্বাধিক বেদনাদায়ক যা আমি পেয়েছি তা হল ‘আক্বাবার দিনের আঘাত; যেদিন আমি দাওয়াত নিয়ে স্বয়ং উপস্থিত হয়েছিলাম। আমি যা নিয়ে তাঁর সম্মুখে উপস্থিত হয়েছিলাম সে তাতে কোন সাড়া দেয়নি। অতঃপর আমি ভারাক্রান্ত অবস্থায় সামনে চললাম। সা‘আলিব নামক স্থানে পৌঁছিার পর আমি কিছুটা স্বস্তি পেলাম। তখন আমি উপরের দিকে মাথা তুলে দেখলাম যে, একখগু মেঘ আমাকে ছায়া দিচ্ছে। পুনরায় লক্ষ্য করলাম, দেখলাম মেঘের মধ্যে জিবরীল (আলাইহিস সালাম)। জিবরীল (আলাইহিস সালাম) আমাকে ডেকে বললেন যে, আল্লাহ তা‘আলা আপনার সম্প্রদায়ের কথা শুনেছেন এবং তারা আপনাকে যা বলেছে তাও শুনেছেন। তিনি পাহাড় পর্বত তদারককারী ফেরেশতাকে আপনার খেদমতে পাঠিয়েছেন। সুতরাং ঐ সমস্ত লোকদের সম্পর্কে আপনার যা ইচ্ছে তাঁকে নিদের্শ দিন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, অতঃপর মালাকুল জিবাল আমাকে আহবান করলেন। অতঃপর আমাকে সালাম দিলেন এবং বললেন, হে মুহাম্মাদ (ﷺ)! আল্লাহ তা‘আলা আপনার কওমের উক্তিসমূহ শুনেছেন। আমি মালাকুল জিবাল। আপনার প্রতিপালক আমাকে আপনার নিকট পাঠিয়েছেন। যাতে করে আপনার যা ইচ্ছা আমাকে নির্দেশ করতে পারেন। আপনি যদি ইচ্ছা করেন তাহলে এই পাহাড় দু’টি তাদের উপর চাপিয়ে দিব। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন,

بَلْ أَرْجُوْ أَنْ يُخْرِجَ اللهُ مِنْ أَصْلَابِهِمْ مَنْ يَعْبُدُ اللهَ وَحْدَهُ وَلَا يُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا 

‘বরং আমি আশা করি; আল্লাহ তা‘আলা তাদের ঔরসে এমন বংশধরের জন্ম দিবেন যারা এক আল্লাহ্র ইবাদত করবে, তাঁর সাথে কাউকে শরীক করবে না’।[২৩]

(ইনশাআল্লাহ চলবে)


* পি-এইচ. ডি গবেষক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

তথ্যসূত্র :
[১]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৫৬২, ৬১০২, ৬১১৯; ছহীহ মুসলিম, হা/২৩২০; মিশকাত, হা/৫৮১৩।
[২]. আর-রাহীকুল মাখতূম, পৃ. ৪৭৮।
[৩]. ইবনু হিশাম, আস-সীরাত আন-নবুবিয়্যাহ, তাহক্বীক্ব : আব্দুর রঊফ সা‘দ (বৈরূত : দারুল জীল, ১৪১১ হি.), ২য় খণ্ড, পৃ. ১৯; মুসতাদরাক হাকিম, হা/১৬৮৩; আবুল ফিদা ইসমাঈল ইবনু কাছীর, তাফসীরুল কুরআনিল ‘আযীম, (বৈরূত : দারুত ত্বায়্যেবাহ, ২য় সংস্করণ, ১৪২০ হি.), ১ম খণ্ড, পৃ. ৪৩৮; আখবারু মাক্কাতা ফী ক্বদীমিদ দাহ্র ওয়া হাদীছিহি, ৪র্থ খণ্ড পৃ. ৪৫; দালাইলুন নবুওত, ২য় খণ্ড, পৃ. ৬২; ছিরাত ইবনু ইসহাক্ব, ২য় খণ্ড, পৃ. ৮৮; উসদুল গাবা, ১ম খণ্ড, পৃ. ১০; আবুল ফিদা ইসমাঈল ইবনু কাছীর, আস-সিরাহ আন-নবুবিয়্যাহ, তাহক্বীক্ব : মুছত্বফা আব্দুল ওয়াহিদ (বৈরূত : দারুল মা‘রেফাহ, ১৩৯৬ হি.), ১ম খণ্ড, পৃ. ২৮০; আর-রাহীকুল মাখতূম, পৃ. ৪৭।
[৪]. ছহীহ বুখারী, হা/৪৫৫৩; ছহীহ মুসলিম, হা/১৭৭৩; মিশকাত, হা/৫৮৬১।
[৫]. তিরমিযী, হা/২৪৮৫; ইবনু মাজাহ, হা/৩২৫১; দারেমী, হা/১৪৬০, ২৬৩২; মিশকাত, হা/১৯০৭।
[৬]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৫৬০, ৬১২৬; ছহীহ মুসলিম, হা/২৩২৭; মিশকাত, হা/৫৮১৭।
[৭]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৩২৮; মিশকাত, হা/৫৮১৮।
[৮]. ছহীহ বুখারী, হা/৪৫৫৩; ছহীহ মুসলিম, হা/১৭৭৩; মিশকাত, হা/৫৮৬১।
[৯]. মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪৬৪৫।
[১০]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৩১০; মিশকাত, হা/৫৮০২।
[১১]. ছহীহ বুখারী, হা/৬০৬৪; মিশকাত, হা/৫৮১১।
[১২]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৫৯৯; মিশকাত, হা/৫৮১২।
[১৩]. তিরমিযী, হা/২০১৬; মিশকাত, হা/৫৮২০, সনদ ছহীহ।
[১৪]. ছহীহ বুখারী, হা/৩০৭১, ৫৯৯৩; মিশকাত, হা/৫৭৮১।
[১৫]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৩২৯; মিশকাত, হা/৫৭৮৯।
[১৬]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৩১৬; মিশকাত, হা/৫৮৩১।
[১৭]. ছহীহ বুখারী, হা/১৪৬৯; ছহীহ মুসলিম, হা/১০৫৩; মিশকাত, হা/১৮৪৪।
[১৮]. ছহীহ বুখারী, হা/২৪০, ৫২০; ছহীহ মুসলিম, হা/১৭৯৪; মিশকাত, হা/৫৮৪৭।
[১৯]. সূরা আন-নাজমের ১ ও ৮ নং আয়াতের তাফসীর দ্রষ্টব্য।
[২০]. ইবনু হিশাম, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩৬১-৩৬২।
[২১]. ইবনু হিশাম, আস-সীরাত আন-নবুবিয়্যাহ, ৫ম খণ্ড, পৃ. ৭৪; ইবনু কাছীর আস-সিরাহ আন-নবুবিয়্যাহ, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ৮২; আর-রাহীকুল মাখতূম, পৃ. ৩৮৫; আল্লামা কাযী ‘ইয়ায, আশ-শিফা বি তা‘আরীফি হুকূক্বিল মুছত্বফা (বৈরূত : দারুল ফিকর, ১৪০৯ হি.), ১ম খণ্ড, পৃ. ১১০; মুহাম্মাদ ইবনু ‘আফীফী, নূরুল ইয়াক্বীন ফী সীরাতি সায়্যিদিল মুরসালীন, তাহক্বীক্ব : হাইছাম হিলাল (বৈরূত : দারুল মা‘রেফাহ, ১৪২৫ হি.), পৃ. ২২৪; আর-রাহীকুল মাখতূম, পৃ. ৩৮৫।
[২২]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৪৭৭; ছহীহ মুসলিম, হা/১৭৯২; মিশকাত, হা/৫৩১৩।
[২৩]. ছহীহ বুখারী, হা/৩২৩১; ছহীহ মুসলিম, হা/১৭৯৫; মিশকাত, হা/৫৮৪৮।




প্রসঙ্গসমূহ »: নবী-রাসূল

ফেসবুক পেজ