সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ০৮:৪৮ অপরাহ্ন

 মুহাম্মাদ  (ﷺ)-এর গুণাবলী ও মর্যাদা

-আবূ মাহী*


ভূমিকা

মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হলেন শেষ নবী ও রাসূল। আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে যে মর্যাদা দান করেছেন, অন্য কাউকে সে মর্যাদার অধিকারী করেননি। তিনি প্রিয় রাসূলের প্রতি তাঁর সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তাঁর বক্ষকে ঈমান ও হিকমাত দ্বারা পূর্ণ করেছেন। তাঁকে নবীদের ইমাম নিযুক্ত করেছেন। নবীগণ ও ফেরেশতাদের উপর বিশেষ মর্যাদা প্রদান করেছেন। তাঁকে হাউযে কাওছার, অসীলা এবং মাক্বামে মাহমূদের অধিকারী করেছেন। বলা যায় যে, তিনি ছিলেন প্রশংসনীয় গুণাবলী এবং অত্যধিক মর্যাদার অধিকারী। মহান আল্লাহ বলেন, وَ اِنَّکَ لَعَلٰی خُلُقٍ عَظِیۡمٍ ‘নিশ্চয় আপনি মহান চরিত্রের উপর রয়েছেন’ (সূরা আল-কলম : ৪)। মহান আল্লাহ বলেন, وَ رَفَعۡنَا لَکَ ذِکۡرَکَ ‘আমরা আপনার জন্য আপনার চর্চা (খ্যাতি)-কে সুউচ্চ করেছি’ (সূরা আলাম নাশরাহ : ৪)। আল্লাহ তা‘আলা মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে যেগুলো প্রশংসনীয় গুণাবলী এবং মহান মর্যাদার অধিকারী করেছেন, একজন মুসলিমের সেগুলো সম্পর্কে জ্ঞান রাখা এবং ঈমান আনা আবশ্যক। তাই ‘মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর গুণাবলী ও মর্যাদা’  শিরোনামে তাঁর প্রশংসনীয় গুণাবলী এবং মর্যাদা সম্পর্কে নিম্নে আলোকপাত করা হল।

মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রশংসনীয় গুণাবলী

নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছিলেন অসামান্য সৌন্দর্যমণ্ডিত এবং প্রশংসনীয় স্বভাবের এমন এক ব্যক্তিত্ব, মানব জীবন ও সমাজের কোনকালেও যার তুলনা হয় না এবং মেলে না। তিনি ছিলেন সর্বগুণে গুণান্বিত এবং সর্বপ্রকার চরিত্র ভূষণে বিভূষিত এমন এক ব্যক্তিত্ব, যার সংশ্রবে আসা ব্যক্তিমাত্রই তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা সম্মানে হৃদয় মন পরিপূর্ণ না করে পারতেন না। তিনি ছিলেন জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকল মানুষেরই অকৃত্রিম বন্ধু, একান্ত নির্ভরযোগ্য সুহৃদ এবং পরম হিতৈষী আপনজন। যেমনটা খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেছেন,

إِنَّكَ لَتَصِلُ الرَّحِمَ وَتَحْمِلُ الْكَلَّ وَتَكْسِبُ الْمَعْدُوْمَ وَتَقْرِى الضَّيْفَ وَتُعِيْنُ عَلَى نَوَائِبِ الْحَقِّ

‘আপনি তো আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সদাচরণ করেন, অসহায়-দুস্থদের দায়িত্ব বহন করেন, নিঃস্বকে সহযোগিতা করেন, মেহমানের আপ্যায়ন করেন এবং হক্ব পথের দুর্দশাগ্রস্তকে সাহায্য করেন’।[১]

তাঁর সাথী, সাহচর্যপ্রাপ্ত ব্যক্তিগণও তাঁর জানমালের হেফাযত, সেবা-যত্ন এবং মান-মর্যাদা সমুন্নত রাখতে এতই সচেতন ও তৎপর থাকতেন যে, মানব জাতির ইতিহাসে কোনকালেও এর কোন নজির মেলে না। শুধু তাই নয়, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতেও কখনো কুণ্ঠাবোধ করতেন না।

নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথী, বন্ধু ও ছাহাবীগণ তাঁকে ভালোবাসতেন আত্মহারার সীমা পর্যন্ত। তাঁর দেহ কিংবা মনে সামান্যতম আঁচড় লাগাটাও তাঁরা বরদাশত করতে পারতেন না। যদিও এ ব্যাপারে তাঁদের গ্রীবা কর্তন করার পর্যায়ে উপনীত হতে হত। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য তাঁদের প্রাণাধিক এ ভক্তি ভালোবাসার কারণ ছিল মানবত্বের বিকাশের ক্ষেত্রে তাঁকে এত অধিক পূর্ণত্ব প্রদান করা হয়েছিল যা কোন দিন কাউকেও দেয়া হয়নি। এ কারণে আমরা অত্যন্ত বিনয়ের সাথে মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রশংসনীয় গুণাবলীর সার সংক্ষেপ লিপিবদ্ধ করছি।

মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নামসমূহ

মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রশংসনীয় গুণাবলীর অন্যতম হল তাঁর অনেকগুলো নাম। তাঁর বিশাল মাহাত্ম্য বিকশিত হয় তাঁর একাধিক নামে। যিনি যত বড় হন, তাঁর নাম তত বেশি হয়। একাধিক নাম একাধিক গুণ ও বৈশিষ্ট্যের প্রতি ইঙ্গিত করে। নাম কেবল পরিচয় ও পরিচিতির জন্য নয়, বরং তার সাথে জড়িয়ে থাকে অনেক মহত্ত্ব ও মাহাত্ম্য। যার গুণ অধিক, তার নামও অধিক। শরী‘আতে মহান আল্লাহর নাম ও গুণাবলী অনেক। তেমনি তাঁর প্রিয় নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নামও অনেক। তাঁর একাধিক নামের মধ্যে অন্যতম হল- ১. মুহাম্মাদ, ২. আহমাদ, ৩. মাহী, ৪. হাশির, ৫. আক্বিব, ৬. মুকাফ্ফী, ৭. তওবার নবী, ৮. রহমতের নবী, ৯. রঊফ এবং ১০. রহীম ইত্যাদি। যেমন নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

إنَّ لِيْ أَسْمَاءً أَنَا مُحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَنَا أَحْمَدُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَنَا الْمَاحِيْ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الَّذِيْ يَمْحُو اللهُ بِي الْكُفْرَ وَأَنَا الْحَاشِرُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الَّذِيْ يُحْشَرُ النَّاسُ عَلَى قَدَمِيْ وَأَنَا الْعَاقِبُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالْعَاقِبُ الَّذِي لَيْسَ بَعْدَهُ نَبِيٌ.

‘আমার অনেকগুলো নাম আছে। আমি মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আমি আহমাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আমি মাহী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আল্লাহ তা‘আলা আমার দ্বারা কুফরকে নিশ্চিহ্ন করবেন। আমি হাশির (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! ক্বিয়ামতের দিন মানব জাতিকে আমার পশ্চাতে সমবেত করা হবে। আর আমি ‘আক্বিব (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আর ‘আক্বিব হল ঐ ব্যক্তি, যার পরে আর কোন নবী নেই’।[২] রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেছেন, أَنَا الْمُقَفِّي صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَنَبِيُّ التَّوْبَةِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَنَبِيُّ الرَّحْمَةِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ‘আমি মুকাফ্ফী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আমি তওবার নবী এবং রহমতের নবী’।[৩] আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে তাঁর দু’টি নাম ‘রঊফ’ ও ‘রহীম’ নামে নামকরণ করেছেন (সূরা আত-তওবাহ : ১২৮)।[৪]

মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দেহ সৌষ্ঠব

মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দেহাবয়ব ছিল-
১). মধ্যম গড়নের (লম্বাও না এবং খাটও না) অতীব সুন্দর ও সুঠাম এবং গায়ের রং ছিল উজ্জ্বল ও গৌরবর্ণের লাবণ্যময় (ধবধবে সাদাও না আবার শ্যাম বর্ণও না) এবং লাল মিশ্রিত।[৫]
২). মুখমগুল ছিল প্রশস্ত[৬], সুর্য ও চন্দ্রের মত, চেহারা ছিল গোলগাল[৭] এবং চক্ষুর পুতুলি ছিল ঘোর কাল ও বড়।[৮]
৩). মাথার চুল খুব বেশী কোঁকড়ানো না এবং সোজাও না। মাথার চুল উভয় কানের মধ্যবর্তী স্থান পর্যন্ত পৌঁছত (অন্য বর্ণনায় দুই কানের লতি পর্যন্ত পৌঁছত) এবং কাঁধের মাঝামাঝি ছিল। চুল ও দাড়িতে বিশটি চুলও সাদা ছিল না[৯], মাথার এবং দাড়ির অগ্রভাবে সামান্য কিছু শুভ্রতা দেখা দিয়েছিল। যখন তিনি তাতে তৈল লাগাতেন, তখন তা প্রকাশ পেত না। আর যখন কেশরাজি বিক্ষিপ্ত হত তখন তা প্রকাশ পেত। তাঁর দাড়ি ছিল খুব বেশী[১০] এবং ঘন।[১১] ঠোটের নিচের পশমে, চোখ এবং কানের মধ্যবর্তী পশমে শুভ্রতা ছিল।[১২]
৪). মাথা ছিল বড়, উভয় পা এবং উভয় হাত ছিল মাংসে পরিপূর্ণ।[১৩] তবে পায়ের গোড়ালীতে স্বল্প মাংস ছিল।[১৪]
৫). উভয় কাঁধের মধ্যবর্তী স্থান বেশ প্রশস্ত ছিল।[১৫]
৬). হাড়ের জোড়াসমূহ ছিল মোটা। বক্ষের উপরে নাভি পর্যন্ত পশমের সরু একটি রেখা ছিল। চলার সময় সম্মুখের দিক ঝুঁকে চলতেন, যেন তিনি কোন উচ্চস্থান হতে নিচের দিকে নামছেন।[১৬]
৭). তাঁর উভয় কাঁধের মধ্যস্থলে বাম কাঁধের উপরিভাগে গোলাকার[১৭] কবুতের ডিমের ন্যায় মোহরে নবুঅতও ছিল; যার বর্ণ ছিল তাঁর গায়ের রঙের সদৃশ।[১৮] এবং তার উপরে আঁচিল (স্তনের বোটা)-এর মত অনেকগুলো তিল ছিল।[১৯]
৮). হাতের তালু ছিল রেশম বস্ত্র অপেক্ষাও অধিকতর কোমল।[২০] তাঁর হাত সুগন্ধিময় থাকত, যেন তা কোন আতরের ডিব্বা হতে বের করার ন্যায়।[২১]
৯). তাঁর ঘাম ছিল মুক্তার ন্যায় এবং শরীরের সুগন্ধি ছিল কস্তুরী বা মেশকে আম্বরের ঘ্রাণ অপেক্ষাও অধিকতর সুগন্ধিময়।[২২] ছাহাবীরা তাঁর ঘামগুলো একত্রিত করে আতর বা সুগন্ধির মধ্যে মিশ্রিত করতেন[২৩] এবং তা বাচ্চাদের ব্যবহারের মাধ্যমে বরকতের আশা করতেন। কারণ তা ছিল সর্বোত্তম সুগন্ধি।[২৪]
১০). তিনি কোন ব্যাপারে আনন্দিত হলে তাঁর চেহারা উজ্জ্বল হয়ে উঠত। মনে হত যেন তাঁর মুখমণ্ডল চাঁদের টুকরা।[২৫]
১১). তিনি কুমারী মেয়েদের চাইতেও বেশী লাজুক ছিলেন। যখন তিনি কোন কিছু অপসন্দ করতেন তখন তাঁর চেহারা দেখে বুঝা যেত।[২৬] রাগান্বিত হলে তাঁর চেহারা পরিবর্তিত[২৭] ও লাল হয়ে যেত। যেন তাঁর দুই গালে ডালিমের রস নিংড়িয়ে দেয়া হয়েছে।[২৮]
১৩). তিনি মুচকি হাসতেন।[২৯] যেমনটা আব্দুল্লাহ ইবনুল হারেস ইবনু জাযয়ি (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, مَا رَأَيْتُ أَحَدًا أَكْثَرَ تَبَسُّمًا مِنْ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ‘আমি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চাইতে অধিক মুচকি হাসির মানুষ কাউকেও দেখিনি’।[৩০]
১৪). শক্ত, সমর্থ এবং শক্তিশালী দেহ সৌষ্ঠবের অধিকারী মহান ও সুন্দর মানুষটির দেহ বৃদ্ধ বয়সে কিছুটা ভারি ও দুর্বল হয়ে গিয়েছিল।[৩১] যেমনটি আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, لَمَّا بَدَّنَ رَسُوْلُ اللهِ وَثَقُلَ كَانَ أَكْثَرُ صَلَاتِهِ جَالِسًا ‘যখন রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বয়স বেশী হল এবং শরীর ভারী হয়ে গেল, তখন তিনি তাঁর অধিকাংশ ছালাতই বসে আদায় করতেন’।[৩২]

দেহ সৌষ্ঠবের সুগঠন ও সৌন্দর্যের বর্ণনায় ছাহাবীগণ

১). রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দেহ সৌষ্ঠবের সুগঠন ও সৌন্দর্যের বর্ণনা পেশ করে চাচা আবূ তালেব বলেছিলেন, وَأَبْيَضَ يُسْتَسْقَى الْغَمَامُ بِوَجْهِهِ ثِمَالُ الْيَتَامَى عِصْمَةٌ لِلْأَرَامِلِ ‘তিনি শ্রভ্র, যার চেহারার অসীলায় বৃষ্টি প্রার্থনা করা হয়ে থাকে। যিনি ইয়াতীমের আশ্রয়স্থল ও বিধবাদের রক্ষক’।[৩৩]

২). একদা রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উপস্থিত ছিলেন, এমতাবস্থায় যখন তাঁর দেহ মোবারক ঘর্মাক্ত হল তখন তাঁর মুখমণ্ডল উজ্জ্বলতায় ঝলমলিয়ে উঠল। এ অবস্থা প্রত্যক্ষ করে আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) আবূ কাবীর হুযালীর এ কবিতা আবৃত্তি করলেন, وَإِذَا نَظَرْتَ إِلَى أَسِرَّةِ وَجْهِهِ بَرِقَتْ كَبَرْقِ الْعَارِضِ الْمُتَهَلِّلِ ‘তাঁর মুখমণ্ডলের উজ্জ্বলতার দিকে লক্ষ্য করবে তখন তা এমনভাবে আলোকিত দেখবে যেন ঘনঘটার মধ্য থেকে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে’।[৩৪]

৩). আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) কবি যুহাইরের এ কবিতা আবৃত্তি করতেন, যা হারিম বিন সিনান সম্পর্কে বলা হয়েছিল, لو كنت فى شىء سوى بشر كنت المضىء لليلة البدر ‘যদি আপনি মানুষ ছাড়া অন্য কিছুর অন্তর্ভুক্ত হতেন তবে আপনি স্বয়ং চতুর্দশী রাত্রিকে আলোকিত করতেন’। অতঃপর বলতেন যে, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমনটিই ছিলেন’।[৩৫]

৪). আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন,

كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَزْهَرَ اللَّوْنِ كَانَ عَرَقُهُ اللُّؤْلُؤُ إِذَا مَشَى تَكَفَّأَ وَمَا مَسَسْتُ دِيْبَاجَةً وَلَا حَرِيْرًا أَلْيَنَ مِنْ كَفِّ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلَا شَمَمْتُ مَسْكًا وَلَا عَنْبَرَةً أَطْيَبَ مِنْ رَائِحَةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ

‘রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গৌরবর্ণের ছিলেন। তাঁর ঘাম ছিল মুক্তার ন্যায়। হাঁটার সময় তিনি সম্মুখের দিকে কিছুটা ঝুঁকে চলতেন। আমি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাতের তালু অপেক্ষা অধিকতর কোমল কোন রেশম বা কোন রেশম বস্ত্র স্পর্শ করিনি। আর আমি কখনও নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর শরীরের সুগন্ধি অপেক্ষা অধিকতর সুগন্ধি কস্তুরী বা মেশকে আম্বরের ঘ্রাণ গ্রহণ করিনি’।[৩৬] তিনি আরো বলেন,لَمْ أَرَ بَعْدَهُ وَلَا قَبْلَهُ مِثْلَهُ ‘আমি তাঁর পূর্বে এবং পরে অনুরূপ আকৃতির আর কাউকেও দেখিনি’।[৩৭]

৫). আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন,  لَمْ أَرَ قَبْلَهُ وَلَا بَعْدَهُ مِثْلَهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ‘তাঁর পূর্বে বা পরে তাঁর মত সুগঠন ও সুন্দর কোন মানুষকে আমি দেখিনি’।[৩৮]

৬). বারা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন,  لَمْ أَرَ شَيْئًا قَطُّ أَحْسَنَ مِنْهُ ‘আমি তাঁর চাইতে অধিক সুন্দর আর কাউকেও কখনও দেখিনি’।[৩৯] তিনি আরো বলেন, مَا رَأَيْتُ مِنْ ذِي لِمَّةٍ أَحْسَنَ فِي حُلَّةٍ حَمْرَاءَ مِنْ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ  ‘বাবরী চুলবিশিষ্ট লাল ডোরা কাটা পোশাকে রাসূলুল্লাহ (রাহিমাহুল্লাহ) অপেক্ষা সুন্দর আর কাউকেও আমি দেখিনি’।[৪০]

৭). কা‘ব ইবনু মালেক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا سُرَّ اسْتَنَارَ وَجْهُهُ حَتَّى كَأَنَّ وَجْهَهُ قِطْعَةُ قَمَرٍ وَكُنَّا نَعْرِفُ ذَلِكَ  ‘রাসূলুল্লাহ (রাহিমাহুল্লাহ) যখন কোন ব্যাপারে আনন্দিত হতেন তখন তাঁর চেহারা উজ্জ্বল হয়ে উঠত। মনে হত যেন তাঁর মুখমণ্ডল চাঁদের টুকরা। আমরা সকলেই তা অনুভব করতাম’।[৪১]

৮). উম্মু মা‘বাদ খুযায়ীয়্যাহ[৪২] বলেন, 

ظَاهِرَ الْوَضَاءَةِ ، أَبْلَجَ الْوَجْهِ ، حَسَنَ الْخَلْقِ ، لَمْ تَعِبْهُ ثَجْلَةٌ ، وَلَمْ تُزْرِيْهِ صَعْلَةٌ ، وَسِيْمٌ قَسِيْمٌ ، فِيْ عَيْنَيْهِ دَعِجٌ ، وَفِيْ أَشْفَارِهِ وَطَفٌ ، وَفِيْ صَوْتِهِ صَهَلٌ ، وَفِيْ عُنُقِهِ سَطَعٌ ، وَفِيْ لِحْيَتِهِ كَثَاثَةٌ ، أَزَجُّ أَقْرَنُ ، إِنْ صَمَتَ فَعَلَيْهِ الْوَقَارُ ، وَإِنْ تَكَلَّمَ سَمَاهُ وَعَلَاهُ الْبَهَاءُ ، أَجْمَلُ النَّاسِ وَأَبْهَاهُ مِنْ بَعِيْدٍ ، وَأَحْسَنُهُ وَأَجْمَلُهُ مِنْ قَرِيْبٍ ، حُلْوُ الْمَنْطِقِ فَصْلًا ، لَا نَزْرٌ وَلَا هَذْرٌ ، كَأَنَّ مَنْطِقَهُ خَرَزَاتُ نَظْمٍ ، يَتَحَدَّرْنَ رَبْعَةٌ لَا تَشْنَأَهُ مِنْ طُوْلٍ ، وَلَا تَقْتَحِمُهُ عَيْنٌ مِنْ قِصَرٍ ، غُصْنٌ بَيْنَ غُصْنَيْنِ ، فَهُوَ أَنْضَرُ الثَّلَاثَةِ مَنْظَرًا وَأَحْسَنُهُمْ ،قَدْرًا لَهُ رُفَقَاءُ يَحُفُّوْنَ بِهِ ،إِنْ قَالَ سَمِعُوْا لِقَوْلِهِ ، وَإِنْ أَمَرَ تَبَادَرُوْا إِلَى أَمْرِهِ ، مَحْفُوْدٌ مَحْشُوْدٌ لَا عَابِسٌ وَلَا مُفَنَّدٌ.

‘ঝকঝকে গাত্রবর্ণ, সমুজ্জ্বল মুখমণ্ডল, সুশোভন দেহ সৌষ্ঠব, লম্বোদর ও টেকো মাথা হতে ক্রটিমুক্ত, সুমিষ্ট উজ্জ্বলতায় সুস্নাত সুশোভন চিত্র, দীর্ঘ পলকবিশিষ্ট সুরমা সুশোভিত চক্ষু, গাম্ভীর্যমণ্ডিত কণ্ঠস্বর, দীর্ঘ গ্রীবা, পরস্পর সন্নিবেশিত চিকন ভ্রুযুগল, জাঁকাল কৃষ্ণ কেশদাম, নীরবতা অবলম্বন করলে সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে গাম্ভীর্য, অত্যন্ত আকর্ষণীয় কথনভঙ্গী, সুমিষ্টভাষী, সুষ্পষ্ট ও পরিচ্ছন্ন কথাবার্তা না সংক্ষিপ্ত, না অতিরিক্ত, কথা বললে মনে হয় মালা থেকে মুক্তা ঝরছে, মানানসই মধ্যম উচ্চতা বিশিষ্ট দেহ, না অস্বাভাবিক দীর্ঘ, না খর্ব, দু’ শাখার মধ্যে এক শাখা বিশিষ্ট তিনটির মধ্যে যেটি সব চেয়ে তাজা, সুন্দর ও উজ্জ্বলতাপূর্ণ। বন্ধুগণ তাঁর চারপাশে গোলাকৃতি ধারণ করেন। তিনি যখন কোন কিছু বলেন তাঁরা অত্যন্ত মনোযোগের সঙ্গে তা শ্রবণ করেন। তাঁর পক্ষ থেকে কোন নির্দেশপ্রাপ্ত হলে তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে তা পালন করেন। আনুগত্যশীল, সম্মানিত, সুমিষ্ট ও স্বল্পভাষী’।[৪৩]

(চলবে ইনশাআল্লাহ)


* পি-এইচ. ডি গবেষক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

তথ্যসূত্র :
[১]. ছহীহ বুখারী, হা/৩; ছহীহ মুসলিম, হা/১৬০।
[২]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৫৩২, ৪৮৯৬; ছহীহ মুসলিম, হা/২৩৫৪; তিরমিযী, হা/২৮৪০; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৬৭৮০; মিশকাত, হা/৫৭৭৬।
[৩]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৩৫৫; মিশকাত, হা/৫৭৭৭।
[৪]. ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৬৩১৩, সনদ ছহীহ; মুহাম্মাদ আলী ছাবূনী, ছাফওয়াতুত তাফাসীর, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩৮১। ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, আল্লাহ তা‘আলা তাঁর দু’টি নামে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নামকরণ করেছেন।
[৫]. ছহীহ বুখারী, হা/৩২৩৯, ৩৫৪৭, ৩৫৪৮, ৩৫৪৯, ৩৫৫১, ৫৮৪৮,৫৯০০, ৫৯০৫; ছহীহ মুসলিম, হা/১৬৫, ২৩৩০, ২৩৩৭, ২৩৪৭, ২৩৪০; মুসনাদে আহমাদ, হা/৯৪৬; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৬৩১১; মিশকাত, হা/৫৭৮২, ৫৭৮৩, ৫৭৮৭, ৫৭৯০। হাদীছ আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু), বারা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) এবং আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) এবং আবূ তোফাইল (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত।
[৬]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৩৩৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/২১০২৪; মিশকাত, হা/৫৭৮৪। হাদীছটি সামুরা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত।
[৭]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৩৪৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/২১০৩৬; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৬২৯৭; মিশকাত, হা/৫৭৭৯। হাদীছটি জাবের ইবনু সামুরাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত।
[৮]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৩৩৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/২১০২৪; মিশকাত, হা/৫৭৮৪। হাদীছটি সামুরা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত।
[৯]. ছহীহ বুখারী, হা/৩২৩৯, ৩৫৪৭, ৩৫৪৮, ৩৫৪৯, ৩৫৫১, ৫৮৪৮, ৫৯০০, ৫৯০৫; ছহীহ মুসলিম, হা/১৬৫, ২৩৩৭, ২৩৪৭; মিশকাত, হা/৫৭৮২, ৫৭৮৩। হাদীছ আনাস ও বারা (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিত।
[১০]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৩৪৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/২১০৩৬; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৬২৯৭; মিশকাত, হা/৫৭৭৯। হাদীছটি জাবের ইবনু সামুরাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত।
[১১]. মুসনাদে আহমাদ, হা/৭৪৬; মিশকাত, হা/৫৭৯০, সনদ হাসান লি গয়রিহি। হাদীছটি আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত।
[১২]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৩৪১; মিশকাত, হা/৫৭৮৬। হাদীছটি আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত।
[১৩]. ছহীহ বুখারী, হা/৫৯০৬, ৫৯০৭, ৫৯০৯, ৫৯১০; মিশকাত, হা/৫৭৮২। হাদীছটি আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত।
[১৪]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৩৩৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/২১০২৪; মিশকাত, হা/৫৭৮৪। হাদীছটি সামুরা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত।
[১৫]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৫৫১, ৫৮৪৮, ৩২৩৯; ছহীহ মুসলিম, হা/২৩৩৭; মিশকাত, হা/৫৭৮৩। হাদীছটি বারা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত।
[১৬]. তিরমিযী, হা/১৭৫৪; মুসতাদরাক হাকিম, হা/৪১৯৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭৪৬; মিশকাত, হা/৫৭৯০, সনদ ছহীহ। হাদীছটি আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত।
[১৭]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৩৪৬; মিশকাত, হা/৫৭৮০। হাদীছটি আব্দুল্লাহ ইবনু সিরজাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত।
[১৮]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৩৪৪; তিরমিযী, হা/৩৬৪৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/২১০৩৬; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৬৩০১; মিশকাত, হা/৫৭৭৯। হাদীছটি জাবের ইবনু সামুরাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত।
[১৯]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৩৪৬; মিশকাত, হা/৫৭৮০। হাদীছটি আব্দুল্লাহ ইবনু সিরজাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত।
[২০]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৫৪৭; ছহীহ মুসলিম, হা/২৩৩০; মিশকাত, হা/৫৭৮৭। হাদীছটি আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত।
[২১]. জাবির ইবনু সামুরা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে প্রথম ছালাত আদায় করলাম। অতঃপর তিনি তাঁর ঘরে যাওয়ার উদ্দেশ্য বের হলেন এবং আমিও তাঁর সঙ্গে বের হলাম। অতঃপর এই সময় কতিপয় শিশু তাঁর সামনে এসে উপস্থিত হল। তখন তিনি প্রতিটি শিশুর গালে হাত বুলিয়ে দিলেন। অবশেষে আমার উভয় গালে হাত বুলালেন। তখন আমি তাঁর হাতের শীতলতা ও সুগন্ধি অনুভব করলাম। তাঁর হাতটি এমন সুগন্ধিময় ছিল যে, যেন তাকে কোন আতরের ডিব্বা হতে বের করে এনেছেন। দ্র. ছহীহ মুসলিম, হা/২৩২৯; মিশকাত, হা/৫৭৮৯।
[২২]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৫৪৭; ছহীহ মুসলিম, হা/২৩৩০; মিশকাত, হা/৫৭৮৭। হাদীছটি আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত।
[২৩]. হাদীছে এসেছে, উম্মু সুলাইম (রাযিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর নিকট আসতেন এবং দ্বিপ্রহরে তথায় বিশ্রাম করতেন। তখন উম্মু সুলাইম (রাযিয়াল্লাহু আনহা) তাঁর জন্য একটি চামড়ার মাদুর বিছিয়ে দিতেন এবং নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাতে বিশ্রাম করতেন। নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর শরীর হতে অত্যধিক ঘাম বের হত। উম্মু সুলাইম (রাযিয়াল্লাহু আনহা) তাঁর ঘামগুলো একত্রিত করে আতর বা সুগন্ধির মধ্যে মিশ্রিত করতেন। নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, হে উম্মু সুলাইম (রাযিয়াল্লাহু আনহা)! তুমি এটা কী করছ? তিনি বললেন, এটা আপনার শরীরের ঘাম। এটাকে আমরা আমাদের সুগন্ধির সাথে মিশ্রিত করব। আর এটা সর্বোত্তম সুগন্ধি। অপর বর্ণনায় আছে, উম্মু সুলাইম (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমরা এটার মাধ্যমে আমাদের বাচ্চাদের ব্যবহারের মাধ্যমে বরকতের আশা করি। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি সঠিক কাজ করেছ। দ্রষ্টব্য : ছহীহ মুসলিম, হা/২৩৩১, ২৩৩২; মিশকাত, হা/৫৭৮৮।
[২৪]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৩৩১; মিশকাত, হা/৫৭৮৮।
[২৫]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৫৫৬; ছহীহ মুসলিম, হা/২৭৬৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৭২২০; মুসতাদরাক হাকিম, হা/৪১৯৩; মিশকাত, হা/৫৭৯৮।
[২৬]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৫৬২, ৬১০২, ৬১১৯; ছহীহ মুসলিম, হা/২৩২০; আদাবুল মুফরাদ, হা/৪৬৭; ইবনু মাজাহ, হা/৪১৮০; মুসনাদে আহমাদ, হা/১১৭০১; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৬৩০৬; মিশকাত, হা/৫৮১৩। হাদীছটি আবূ সাঈদ খুদরী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত।
[২৭]. দারেমী, হা/৪৪৩; মিশকাত, হা/১৯৪, সনদ হাসান। হাদীছটি জাবের (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত।
[২৮]. তিরমিযী, হা/২১৩৩, ‘তাক্বদীর’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১; মিশকাত, হা/৯৮, সনদ হাসান। হাদীছটি আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত।
[২৯]. ছহীহ বুখারী, হা/৬০৯২; ছহীহ মুসলিম, হা/৮৯৯; আদাবুল মুফরাদ, হা/২৫১; মিশকাত, হা/৫৮১৪। হাদীছটি আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিত।
[৩০]. তিরমিযী, হা/৩৬৪১।
[৩১]. ছহীহ বুখারী, হা/১৯৮, ৫৯০, ৬৬৫; ছহীহ মুসলিম, হা/৭৩২; মিশকাত, হা/১১৯৭।
[৩২]. ছহীহ বুখারী, হা/৫৯০; ছহীহ মুসলিম, হা/৭৩২; মিশকাত, হা/১১৯৭।
[৩৩]. ছহীহ বুখারী, হা/১০০৮, ‘ইসতিসক্বা’ অধ্যায়, ‘অনাবৃষ্টির সময় ইমামের নিকট বৃষ্টির জন্য লোকদের দু‘আর আবেদন’ অনুচ্ছেদ; ইবনু মাজাহ, হা/১২৭২।
[৩৪]. আবূ নাঈম আল-আছবাহানী, হিলইয়াতুল আওলিয়া ওয়া ত্ববাক্বাতুল আছফিয়া (বৈরূত : দারুল কিতাবিল ‘আরাবী, ৪র্থ সংস্করণ), ২য় খণ্ড, পৃ. ৪৬; শামসুদ্দীন আল-কুরতুবী, আল-জামেঈ লি আহকামিল কুরআন, ২য় খণ্ড, পৃ. ৩৪২; ইবনুল ক্বাইয়িম, মাদারিজুস সালিকীন (বৈরূত : দারুল কিতাবিল ‘আরাবী, ২য় সংস্করণ, ১৩৯৩ হি.), ১ম খণ্ড, পৃ. ৪৯০; ছফীউর রহমান মোবারকপুরী, আর-রাহীকুল মাখতূম (ওযারাতুল আওক্বাফ ও শুয়ূনিল ইসলামিয়্যাহ, ১৪২৮ হি.), পৃ. ৪৭৯।
[৩৫]. ইমাম বায়হাক্বী, দালাইলুন নবুওত (দারুল কুতুবিল ‘ইলমিয়্যাহ, ১৪০৮ হি.), ১ম খণ্ড, পৃ. ৩০১; আর-রাহীকুল মাখতূম, পৃ. ৪৭৬; ছলিহ ইবনু আব্দুল্লাহ, নাযরাতুন নাঈম ফী মাকারিমি আখলাকির রাসূল (জেদ্দা : দারুল ওয়াসীলাহ, ৪র্থ সংস্করণ), ১ম খণ্ড, পৃ. ৪১৬।
[৩৬]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৫৪৭; ছহীহ মুসলিম, হা/২৩৩০; মিশকাত, হা/৫৭৮৭।
[৩৭]. ছহীহ বুখারী, হা/৫৯০৬, ৫৯০৭, ৫৯০৯; মিশকাত, হা/৫৭৮২।
[৩৮]. তিরমিযী, হা/১৭৫৪; মুসতাদরাক হাকিম, হা/৪১৯৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭৪৬; মিশকাত, হা/৫৭৯০, সনদ ছহীহ।
[৩৯]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৫৫১, ৫৮৪৮, ৩২৩৯; ছহীহ মুসলিম, হা/২৩৩৭; মিশকাত, হা/৫৭৮৩।
[৪০]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৩৩৭; মিশকাত, হা/৫৭৮৩।
[৪১]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৫৫৬, ; ছহীহ মুসলিম, হা/২৭৬৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৭২২০; মুসতাদরাক হাকিম, হা/৪১৯৩; মিশকাত, হা/৫৭৯৮।
[৪২]. হিজরতের সময় রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উম্মু মা‘বাদ খুযায়ীয়্যাহ নাম্নী এক মহিলার তাঁবুর পাশ দিয়ে গমন করেন। নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর গমনের পর তাঁর চেহারা মোবারক সম্পর্কে উম্মু মা‘বাদ স্বীয় স্বামীর নিকট রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপরিউক্ত বর্ণনা চিত্র তুলে ধরেছিলেন।
[৪৩]. মুসতাদরাক হাকিম, হা/৪২৭৪, সনদ ছহীহ; ত্বাবারাণী, আল-মু‘জামুল কাবীর, হা/৩৫২৪; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৭০৪; দালাইলুন নবুওত, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৭৯; আর-রাহীকুল মাখতূম, পৃ. ৪৭৯।




প্রসঙ্গসমূহ »: জীবন কথা নবী-রাসূল

ফেসবুক পেজ