খাদীজা বিনতু খুওয়াইলিদ (রাযিয়াল্লাহু আনহা)
-ছাদীক মাহমূদ*
(শেষ কিস্তি)
অহীর সূচনা এবং খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) -এর সম্পৃক্ততা
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর বিবাহিত জীবনের ১০ম বছরে অহীর সূচনা হয়েছিল। অহীর সূচনায় রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজেকে নিয়ে শংকাবোধ করছিলেন, আর সেই সময় তাঁকে সান্ত্বনা দিয়েছেন খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)। আর রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ও ভীত, শংকিত অবস্থায় তাঁরই নিকট ফিরে আসতেন। অহীর সূচনার সময় রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘হেরা’ গুহায় নির্জনে অবস্থান করতেন। আপন পরিবারের (খাদীজার) নিকট ফিরে এসে কিছু খাদ্যসামগ্রী সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার পূর্বে- এভাবে সেখানে তিনি এক নাগাড়ে বেশ কয়েক দিন ‘ইবাদতে মগ্ন থাকতেন। অতঃপর খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর নিকট ফিরে এসে আবার একই সময়ের জন্য কিছু খাদ্যদ্রব্য নিয়ে যেতেন। এভাবে ‘হেরা’ গুহায় অবস্থানকালে তাঁর নিকট অহী আসল। তাঁর নিকট ফেরেশতা এসে বলল, اِقْرَأْ ‘পাঠ করুন’। আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, مَا أَنَا بِقَارِئٍ ‘আমি পড়তে জানি না’। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,فَأَخَذَنِىْ فَغَطَّنِىْ حَتَّى بَلَغَ مِنِّى الْجَهْدَ ‘সে আমাকে জড়িয়ে ধরে এমনভাবে চাপ দিল যে, আমার খুব কষ্ট হল’। অতঃপর সে আমাকে ছেড়ে দিয়ে বলল, ‘পাঠ করুন’। আমি বললাম, ‘আমি তো পড়তে জানি না’। সে দ্বিতীয়বার আমাকে জড়িয়ে ধরে এমনভাবে চাপ দিল যে, আমার খুব কষ্ট হল। অতঃপর সে আমাকে ছেড়ে দিয়ে বলল, ‘পাঠ করুন’। আমি উত্তর দিলাম, ‘আমি তো পড়তে জানি না’। রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, অতঃপর তৃতীয়বারে তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরে চাপ দিলেন। তারপর ছেড়ে দিয়ে বললেন, ‘পাঠ করুন আপনার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। যিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্তপিণ্ড থেকে, পাঠ করুন, আর আপনার রব অতিশয় দয়ালু’ (সূরা আল-আলাক্ব : ১-৩)। অতঃপর এ আয়াত নিয়ে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রত্যাবর্তন করলেন। তাঁর হৃদয় তখন কাঁপছিল। তিনি খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর নিকট এসে বললেন,زَمِّلُوْنِىْ زَمِّلُوْنِىْ ‘আমাকে চাদর দ্বারা আবৃত কর, আমাকে চাদর দ্বারা আবৃত কর’। তারা তাঁকে চাদর দ্বারা আবৃত করলেন। এমনকি তাঁর শংকা দূর হল। তখন তিনি খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর নিকট ঘটনাবৃত্তান্ত জানিয়ে তাঁকে বললেন, لَقَدْ خَشِيْتُ عَلَى نَفْسِىْ ‘আমি নিজেকে নিয়ে শংকাবোধ করছি’। খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বললেন,
كَلَّا وَاللهِ مَا يُخْزِيْكَ اللهُ أَبَدًا إِنَّكَ لَتَصِلُ الرَّحِمَ وَتَحْمِلُ الْكَلَّ وَتَكْسِبُ الْمَعْدُوْمَ وَتَقْرِى الضَّيْفَ وَتُعِيْنُ عَلَى نَوَائِبِ الْحَقِّ
‘আল্লাহর কসম! কখনই নয়। আল্লাহ আপনাকে কখনও লাঞ্ছিত করবেন না। আপনি তো আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সদাচরণ করেন, অসহায়-দুস্থদের দায়িত্ব বহন করেন, নিঃস্বকে সহযোগিতা করেন, মেহমানের আপ্যায়ন করেন এবং হক্ব পথের দুর্দশাগ্রস্তকে সাহায্য করেন’।
অতঃপর তাঁকে নিয়ে খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) তাঁর চাচাতো ভাই ওয়ারাকাহ ইবনু নাওফালের নিকট গেলেন, যিনি অন্ধকার যুগে ঈসায়ী ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। তিনি ইবরানী ভাষায় লিখতে পারতেন এবং আল্লাহর তাওফীক্ব অনুযায়ী ইবরানী ভাষায় ইঞ্জীল হতে ভাষান্তর করতেন। তিনি ছিলেন অতিবৃদ্ধ। খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) তাঁকে বললেন, ‘হে চাচাতো ভাই! আপনার ভাতিজার কথা শুনুন। ওয়ারাকাহ তাঁকে (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, ‘ভাতিজা! তুমি কী দেখ? তখন রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা দেখেছিলেন, সবই বর্ণনা করলেন। তখন ওয়ারাকাহ তাঁকে বললেন, هَذَا النَّامُوْسُ الَّذِىْ نَزَّلَ اللهُ عَلَى مُوْسَى يَا لَيْتَنِىْ فِيْهَا جَذَعًا لَيْتَنِىْ أَكُوْنُ حَيًّا إِذْ يُخْرِجُكَ قَوْمُكَ ‘এটা সেই বার্তাবাহক যাকে আল্লাহ মূসা (আলাইহিস সালাম)-এর নিকট পাঠিয়েছিলেন। ‘আফসোস! আমি যদি সেদিন যুবক থাকতাম। আফসোস! আমি যদি সেদিন জীবিত থাকতাম, যেদিন তোমার কওম তোমাকে বহিষ্কার করবে’। আল্লাহর রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, أَوَمُخْرِجِىَّ هُمْ ‘তারা কি আমাকে বের করে দেবে’? তখন ওয়ারাকাহ ইবনু নাওফিল বললেন, لَمْ يَأْتِ رَجُلٌ قَطُّ بِمِثْلِ مَا جِئْتَ بِهِ إِلَّا عُوْدِىَ وَإِنْ يُدْرِكْنِىْ يَوْمُكَ أَنْصُرْكَ نَصْرًا مُؤَزَّرًا ‘হ্যাঁ, তুমি যা নিয়ে এসেছো অনুরূপ (অহী) কিছু যিনিই নিয়ে এসছেন তাঁর সঙ্গেই বৈরিতাপূর্ণ আচরণ করা হয়েছে। সেদিন যদি আমি থাকি, তবে তোমাকে জোরালোভাবে সাহায্য করব’। এর কিছুদিন পর ওয়ারাকাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) ইন্তিকাল করেন। আর অহীর বিরতি ঘটে।[১]
রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, একদা আমি হাঁটছি, হঠাৎ আসমান হতে একটি শব্দ শুনতে পেয়ে আমার দৃষ্টিকে উপরে তুললাম। দেখলাম, সেই ফেরেশতা, যিনি হেরা গুহায় আমার নিকট এসেছিলেন, আসমান ও যমীনের মাঝে একটি আসনে উপবিষ্ট। এতে আমি শংকিত হলাম। অবিলম্বে আমি ফিরে এসে বললাম, ‘আমাকে চাদর দ্বারা আবৃত কর, আমাকে চাদর দ্বারা আবৃত কর’। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করলেন, ‘হে বস্ত্রাবৃত (রাসূল)! উঠুন, সতর্ক করুন; আর আপনার রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করুন; এবং স্বীয় পরিধেয় বস্ত্র পবিত্র রাখুন; এবং অপবিত্রতা থেকে দূরে থাকুন’ (সূরা আল-মুদদাছছির : ১-৫)। [২]
খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) ও তাঁর সন্তানদের ইসলাম গ্রহণ
খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) ছিলেন প্রথম মুসলিম। এ ব্যাপারে মুসলিমদের মধ্যে ইজমা হয়েছে যে, তিনিই প্রথম মুসলিম। তাঁর পূর্বে কোন নারী-পুরুষ ইসলাম গ্রহণ করেনি।[৩] ইমাম যুহরী (রাহিমাহুল্লাহ) ও ইবনু ইসহাক্ব (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, كانت خديجة أول من أمن بالله ورسوله وصدّق بما جاء به ‘খাদীজাই প্রথম মানুষ যিনি আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপর ঈমান আনয়ন করেন এবং তিনি যা নিয়ে আগমন করেছেন, সেগুলো সত্য বলে স্বীকৃতি প্রদান করেন’।[৪] এমনকি তিনি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে ছালাতও আদায় করেন।[৫] খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) ও রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ছেলে সন্তানগণ ছোট অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন। তবে মেয়েরা ইসলামের ছায়াতলে আসার সুযোগ লাভ করেন, তাঁরা রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে হিজরত করেন, তাঁর আনুগত্য করেন এবং তাঁর উপর ঈমান আনয়ন করেন।[৬]
ইসলামের জন্য খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর অবদান
ইসলামের জন্য খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর অবদান অনুস্বীকার্য। বিপদ-আপদে স্বামীর পাশে দাঁড়ানো, স্বামী ও দ্বীনের জন্য নিজের ধন-সম্পদ ব্যয় করা[৭], কাফির-মুশরিকদের অমার্জিত আচরণকে অত্যন্ত হালকা ও তুচ্ছভাবে তুলে ধরে স্বামীকে সান্ত্বনা দেয়া। এমনকি শী‘আবে আবী তালিবে অন্তরীণ থাকা ইত্যাদি। পারিবারিক ও অর্থনৈতিক জীবনে খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) ছিলেন বিশ্বস্ততম নির্ভরকেন্দ্র। দাম্পত্য জীবনের পঁচিশ বছর সেবা ও সাহচর্য দিয়ে বিপদে শক্তি ও সাহস যুগিয়ে, সান্ত্বনা দিয়ে, অভাব-অনটনে আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে, হেরা গুহায় নিঃসঙ্গ ধ্যান ও সাধনাকালে অকুণ্ঠ সহমর্মিতা, খাদ্যের যোগান দিয়ে, নতুনের শিহরণে ভীত-চকিত রাসূলকে অনন্য সাধারণ প্রেরণা, উৎসাহ ও পরামর্শ দিয়ে, অতুলনীয় প্রেম, ভালবাসা ও সহানুভূতি দিয়ে ইসলামের জন্য ও রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জীবনে তিনি ছিলেন আল্লাহর পক্ষ থেকে এক জীবন্ত নে‘মত স্বরূপ।[৮] ইসলাম গ্রহণের পর খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) তাঁর সকল ধন-সম্পদ দ্বীনের প্রচারের জন্য দান করে দেন। তিনি ধৈর্য ও দৃঢ়তার সাথে সকল প্রতিকূলতা মুকাবিলা করেন। ইবনু ইসহাক্ব (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,
فكان لا يسمع من المشركين شيئاً يكرهه من رد عليه وتكذيب له إلا فرج الله عنه بها تثبته وتصدقه وتخفف عنه وتهون عليه ما يلقى من قومه
‘মুশরিকদের প্রত্যাখ্যান ও অবিশ্বাসের কারণে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে ব্যথা অনুভব করতেন, খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর দ্বারা আল্লাহ তা দূর করে দিতেন। কারণ তিনি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সান্ত্বনা দিতেন, সাহস ও উৎসাহ যোগাতেন। তিনি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সকল কথাই বিনা দ্বিধায় বিশ্বাস করতেন। মুশরিকদের সকল অমার্জিত আচরণ তিনি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে অত্যন্ত হালকা ও তুচ্ছভাবে তুলে ধরতেন’।[৯] ইবনু ইসহাক্ব (রাহিমাহুল্লাহ) আরো বলেন,
وَكَانَتْ لَهُ وَزِيْرَ صِدْقٍ عَلَى الْإِسْلَامِ يَسْكُنُ إِلَيْهَا وَ يَشْكُوْ إِلَيْهَا
‘রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) ছিলেন ইসলামের ব্যাপারে সত্য ও সঠিক উযীর। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (বিপদ-আপদে) তাঁর নিকট স্বস্তি অনুভব করতেন এবং তাঁর নিকট পরামর্শ করতেন’।[১০] এমনকি নবুঅতের সপ্তম বছর মুহাররম মাসে কুরাইশরা মুসলিমদের যখন বয়কট করে। তাঁরা শী‘আবে আবী তালিবে আশ্রয় গ্রহণ করেন। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)ও সেখানে অন্তরীণ হন। বনু হাশেম ও বনু মুত্ত্বালিব উভয় গোত্রের আবালবৃদ্ধবনিতা নিদারুণ কষ্টের সম্মুখীন হন। সঞ্চিত খাদ্যশস্য ফুরিয়ে গেলে তাদের অবস্থা চরমে ওঠে। ফলে তারা গাছের ছাল-পাতা খেয়ে জীবন ধারণে বাধ্য হন। নারী ও শিশুরা ক্ষুধায়-তৃষ্ণায় উচ্চৈঃস্বরে ক্রন্দন করত। তাদের ক্রন্দন ধ্বনি গিরি সংকটের বাইরের লোকেরা শুনতে পেত। সেই সংকটময় মুহূর্তেও হাকীম ইবনু হিজামের মাধ্যমে খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) খাদ্যের ব্যবস্থা করতেন।[১১] আসলে তিনি ইসলাম ও রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সকল প্রতিকূল অবস্থার অন্যতম সঙ্গী ছিলেন। প্রতিক্ষণে ছিলেন আশ্রয় কেন্দ্র, যা পরবর্তী নারীদের জন্য এক অনন্য আদর্শ।
খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর মৃত্যু
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রাণাধিক প্রিয়া স্ত্রী খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) স্নেহশীল চাচা আবূ ত্বালিবের মৃত্যুর অনধিক দুই মাস পরে মতান্তরে ৩ দিন পরে দশম নববী বর্ষে হিজরতের ৩ বছর পূর্বে রামাযান মাসে মৃত্যুবরণ করেন। এসময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর।[১২]
খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর চরিত্র ও মর্যাদা
খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) ছিলেন মক্কার শ্রেষ্ঠ ধনী ও সম্ভ্রান্ত মহিলা এবং সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারিণী হিসাবে (পবিত্রা) নামে খ্যাত। ইবনু হিশাম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, وكانت خديجة امرأة حازمة شريفة لبيبة ‘খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) ছিলেন বিচক্ষণ, সম্ভ্রান্ত, বুদ্ধিমতী মহিলা’।[১৩] তাঁর মর্যাদা অত্যধিক। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর পূর্বে কাউকে বিবাহ করেননি এবং তাঁর উপস্থিতিতে অন্য কাউকে স্ত্রী হিসাবে গ্রহণ করেননি। ইবরাহীম ছাড়া রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সকল সন্তান তাঁরই। খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) তাঁর সম্পদ থেকে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য খরচ করতেন এবং রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ও তাঁর সম্পদ নিয়ে ব্যবসা করতেন।[১৪] বাস্তব কথা হল আল্লাহ তা‘আলা যেভাবে তাঁকে সম্মানিত করতে চেয়েছেন, তিনি সেরকমই সম্মানিতা ছিলেন।[১৫] তিনি আল্লাহর নিকট এতটাই সম্মানিতা ছিলেন যে, আল্লাহ তা‘আলা আসমান থেকে তাঁর প্রতি সালাম প্রেরণ করেছেন ও জিবরীল (আলাইহিস সালাম) রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মাধ্যমে তাঁকে সালাম দিয়েছেন এবং আল্লাহ তা‘আলা দুনিয়াতেই তাঁকে জান্নাতের মধ্যে মুক্তাখচিত একটি প্রাসাদের সুসংবাদ প্রদান করেছেন। আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা জিবরীল (আলাইহিস সালাম) নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বললেন,
يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هَذِهِ خَدِيْجَةُ قَدْ أَتَتْ مَعَهَا إِنَاءٌ فِيْهِ إِدَامٌ وَطَعَامٌ فَإِذَا أَتَتْكَ فَاقْرَأْ عَلَيْهَا السَّلَامَ مِنْ رَبِّهَا وَمِنِّيْ وَبَشِّرْهَا بِبَيْتٍ فِي الْجَنَّةِ مِنْ قَصَبٍ لَا صَخَبَ فِيْهِ وَلَا نَصَبَ
‘হে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! এই যে খাদীজা একটি পাত্র নিয়ে আসছেন। তাতে তরকারি ও খাবার আছে। তিনি যখন আপনার নিকট আসবেন, তখন আপনি তাঁকে তাঁর রবের পক্ষ থেকে এবং আমার পক্ষ হতে সালাম বলবেন এবং তাঁকে জান্নাতের মধ্যে মুক্তাখচিত এমন একটি প্রাসাদের সুসংবাদ প্রদান করবেন, যেখানে কোন হৈ-হুল্লোড় নেই এবং কোন কষ্টও নেই।[১৬] তিনি হলেন শ্রেষ্ঠ নারী জান্নাতীদের একজন। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
أَفْضَلُ نِسَاءِ أَهْلِ الْجَنَّةِ خَدِيجَةُ بِنْتُ خُوَيْلِدٍ وَفَاطِمَةُ بِنْتُ مُحَمَّدٍ وَآسِيَةُ بِنْتُ مُزَاحِمٍ امْرَأَةُ فِرْعَوْنَ وَمَرْيَمُ ابْنَةُ عِمْرَانَ
‘খাদীজা বিনতু খুওয়াইলিদ, ফাতিমা বিনতু মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আসীয়া বিনতু মুযাহিম এবং মারইয়াম বিনতু ‘ইমরান হল সর্বশ্রেষ্ঠ জান্নাতী নারী’।[১৭] তিনি ছিলেন উম্মতে মুহাম্মাদীর সমগ্র নারী সমাজের শ্রেষ্ঠ নারী। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,خَيْرُ نِسَائِهَا مَرْيَمُ بِنْتُ عِمْرَانَ وَخَيْرُ نِسَائِهَا خَدِيجَةُ بِنْتُ خُوَيْلِدٍ ‘মারইয়াম বিনতে ইমরান ছিলেন তৎকালীন সমস্ত নারীর মধ্যে শ্রেষ্ঠ। আর খাদীজা বিনতে খুওয়াইলিদ হলেন বর্তমান উম্মতের সমগ্র নারী সমাজের শ্রেষ্ঠ’।[১৮] নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,حَسْبُكَ مِنْ نِسَاءِ الْعَالَمِيْنَ مَرْيَمُ بِنْتُ عِمْرَانَ وَخَدِيْجَةُ بِنْتُ خُوَيْلِدٍ وَفَاطِمَةُ بِنْتُ محمَّدٍ وَآسِيَةُ امْرَأَةَ فِرْعَوْنَ ‘সারা বিশ্বের মহিলাদের মধ্যে হতে মারইয়াম বিনতে ঈমরান, খাদীজা বিনতে খুওয়াইলিদ, ফাতেমা বিনতে মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং ফেরাউনের স্ত্রী আসিয়া তোমার জন্য যথেষ্ট’।[১৯]
তিনি এতটাই সম্মানিতা ছিলেন যে, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সর্বদা তাঁর প্রশংসা করতেন, তাঁর বান্ধবীদের বিভিন্ন উপহার প্রদান করতেন, সকল স্ত্রীদের উপর তাঁকে মর্যাদা প্রদান করতেন। আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন,
مَا غِرْتُ عَلَى أَحَدٍ مِنْ نِسَاءِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا غِرْتُ عَلَى خَدِيْجَةَ وَمَا رَأَيْتُهَا وَلَكِنْ كَانَ يُكْثِرُ ذِكْرَهَا وَرُبَّمَا ذَبَحَ الشَّاةَ ثُمَّ يُقَطِّعُهَا أَعْضَاءً ثُمَّ يَبْعَثُهَا فِيْ صَدَائِقِ خَدِيْجَةَ فَرُبَّمَا قُلْتُ لَهُ كَأَنَّهُ لَمْ تَكُنْ فِي الدُّنْيَا اِمْرَأَةٌ اِلَّا خَدِيْجَةَ فَيَقُوْلُ إِنَّهَا كَانَت وَكَانَت وَكَانَتْ وَكَانَ لِيْ مِنْهَا وُلْدٌ
‘খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর প্রতি আমার যতটা ঈর্ষা হত, ততটা ঈর্ষা আমি নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অপর কোন স্ত্রীর প্রতি পোষণ করতাম না। অথচ আমি তাঁকে দেখিনি। কিন্তু নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অধিকাংশ সময় তাঁর কথা আলোচনা করতেন। যখন বকরী যবহ করতেন, তখন তার বিভিন্ন অঙ্গ কাটতেন অতঃপর তা খাদীজার বান্ধবীদের জন্য পাঠাতেন। আমি কখনও কখনও রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতাম, মনে হয় যেন পৃথিবীতে খাদীজা ব্যতীত আর কোন স্ত্রীলোকই নেই। তখন তিনি বলতেন, নিশ্চয় সে এরূপ ছিল, এরূপ ছিল, এরূপ ছিল। আর তার পক্ষ হতেই আমার সন্তান-সন্ততি রয়েছে।[২০]
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শুধু তাঁকেই ভালবাসতেন এমন না? বরং তাঁর রেখে যাওয়া স্মৃতিকেও অত্যধিক ভালবাসতেন। খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর গলার হার নিয়ে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যে অনুভূতি, আবেগ, ভালবাসা ছাহাবীগণ লক্ষ্য করেছেন, পৃথিবীর ইতিহাসে একজন স্ত্রীর প্রতি স্বামীর এরকম ভালবাসা ইতিহাসের পাতায় বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন মক্কার কাফেররা বদরে তাদের বন্দীদের মুক্তির জন্য রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খেদমতে মুক্তিপন পাঠাল, তখন যয়নাব (রাযিয়াল্লাহু আনহা) তাঁর স্বামী আবুল আছের মুক্তির জন্যও কিছু মাল পাঠালেন। তন্মধ্যে ঐ হারটিও ছিল যা খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর কাছে ছিল। পরে খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) তা আবুল আছের সাথে যয়নাবের বিবাহের সময় দিয়েছিলেন। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন হারটি দেখলেন, তখন অত্যন্ত সহানুভূতি প্রকাশ করলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছাহাবীদেরকে বললেন, إِنْ رَأَيْتُمْ أَنْ تُطْلِقُوْا لَهَا أَسِيْرَهَا وَتَرُدُّوْا عَلَيْهَا الَّذِيْ لَهَا ‘যদি তোমরা সমীচীন মনে কর, তাহলে যয়নাবের বন্দীকে ছেড়ে দাও এবং যয়নাব যে সমস্ত মাল সম্পদ পাঠিয়েছে, তা তাকে ফেরত দিয়ে দাও’। ছাহাবীগণ বললেন, হ্যাঁ। নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার নিকট হতে এই অঙ্গীকার নিয়েছিলেন যে, সে যেন যয়নাবকে মদীনায় তার নিকট আসার পথে বাধা না দেয়। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যায়দ ইবনু হারেসা ও একজন আনছারীকে মক্কায় পাঠালেন এবং তাদের উভয়কে বলে দিলেন, তোমরা মক্কার অনতিদূরে ইয়া’জিজ উপত্যকায় অবস্থান করবে। যয়নাব সেই পর্যন্ত এসে পৌঁছলে তোমরা উভয়েই তার সঙ্গী হবে এবং তাকে মদীনায় নিয়ে আসবে।[২১]
পরিশেষে বলতে চাই, খাদীজা বিনতু খুওয়াইলিদ (রাযিয়াল্লাহু আনহা) ছিলেন একজন সম্ভ্রান্ত মহিলা এবং সর্বোত্তম চরিত্রের এক অনুপমা মহিলা। ইসলাম ও স্বামীর জন্য তার সেবা, সাহচর্য, শক্তি ও সাহস, সান্ত¡না, আর্থিক সহযোগিতা, অকুণ্ঠ সহমর্মিতা, ভীত-চকিত অবস্থায় প্রেরণা, উৎসাহ ও পরামর্শ, অতুলনীয় প্রেম, ভালবাসা ও সহানুভূতি দিয়ে ইসলামের জন্য ও রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জীবনে তিনি ছিলেন আল্লাহর পক্ষ থেকে এক জীবন্ত নে‘মত। যা বর্তমান নারীদের জন্য এক অনন্য আদর্শ। আল্লাহ তা‘আলা প্রত্যেক নারীকে তাঁর সেই অনন্য আদর্শ গ্রহণ করার তাওফীক্ব দান করুন-আমীন!!
* পি-এইচ. ডি গবেষক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
তথ্যসূত্র :
[১]. ছহীহ বুখারী, হা/৩,; ছহীহ মুসলিম, হা/১৬০।
[২]. ছহীহ বুখারী, হা/৪; ছহীহ মুসলিম, হা/১৬১।
[৩]. উসদুল গাবাহ, ৩য় খণ্ড, পৃ. ৩৩৭; ইবনুল আছীর, আল-কামিল ফিত তা’রীখ, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৫৭; তারীখুল ইসলাম ওয়া ওফাইয়াতুল মাশাহীরি ওয়াল আ‘লাম, ১ম খণ্ড, পৃ. ১২৭; আল্লামা আব্দুর রহমান ইবনু খালদুন, তা’রীখ ইবনু খালুদুন, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ৪; মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ আছ-ছালেহী, সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ ফী ছীরাতে খায়রিল ইবাদ, ২য় খণ্ড, পৃ. ৩০০।
[৪]. আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ, ৩য় খণ্ড, পৃ. ৩৩; উসদুল গাবাহ, ৩য় খ-, পৃ. ৩৩৭; তারীখুল ইসলাম ওয়া ওফাইয়াতুল মাশাহীরি ওয়াল আ‘লাম, ১ম খণ্ড, পৃ. ১২৮।
[৫]. আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ, ৩য় খণ্ড, পৃ. ৩৩; আবূ রবী‘ সুলাইমান ইবনু মূসা আল-আন্দালুসী, আল-ইকতিফায়ু বিমা তাযাম্মানা মিন মাগাযী রাসূলিল্লাহি ওয়াছ ছালা-ছাতিল খুলাফায়ি (বৈরূত : ‘আলিমুল কুতুব, ১৪১৭ হি.), ১ম খণ্ড, পৃ. ১৫৬।
[৬]. উসদুল গাবাহ, ৩য় খণ্ড, পৃ. ৩৩৮।
[৭]. সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ২য় খ-, পৃ. ১১১।
[৮]. আর-রাহীকুল মাখতূম, পৃ. ৮৯; মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব, সীরাতুর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (রাজশাহী : হাদীছ ফাউণ্ডেশন বাংলাদেশ, ৩য় সংস্করণ, ২০১৬ খ্রি.), পৃ. ১৮৩।
[৯]. আস-সীরাতুন নবূবিয়্যাহ লি ইবনে ইসহাক্ব, পৃ. ৪২; আবূ ওমর মুহাম্মাদ ইবনু আব্দিল বার, আল-ইসতী‘আব ফী মা‘রিফাতিল আছহাব (বৈরূত : দারূল জীল, ১৪১২ হি.), ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ১৮২০; আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ, ৩য় খণ্ড, পৃ. ৩২; উসদুল গাবাহ, ৩য় খণ্ড, পৃ. ৩৩৯; আল-ইকতিফায়ু বিমা তাযাম্মানা মিন মাগাযী রাসূলিল্লাহি ওয়াছ ছালা-ছাতিল খুলাফায়ি, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৫৬।
[১০]. সীরাত ইবনু হিশাম, ২য় খণ্ড, পৃ. ২৬৪; আস-সীরাতুন নবূবিয়্যাহ লি ইবনে কাছীর, ২য় খণ্ড, পৃ. ১২২; আল-ইকতিফায়ু বিমা তাযাম্মানা মিন মাগাযী রাসূলিল্লাহি ওয়াছ ছালা-ছাতিল খুলাফায়ি, ১ম খণ্ড, পৃ. ২২৫।
[১১]. আর-রাহীকুল মাখতূম, পৃ. ৮৯।
[১২]. আত-ত্ববাক্বাতুল কুবরা, ৮ম খণ্ড, পৃ. ২১৭; আর-রাহীকুল মাখতূম, পৃ. ৯৩।
[১৩]. সীরাত ইবনু হিশাম, ২য় খণ্ড, পৃ. ৭।
[১৪]. সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ২য় খণ্ড, পৃ. ১১১।
[১৫]. সীরাত ইবনু হিশাম, ২য় খণ্ড, পৃ. ৭।
[১৬]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৮২০; ছহীহ মুসলিম, হা/২৪৩২।
[১৭]. মুসনাদে আহমাদ, হা/২৬৬৮; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৭০১০।
[১৮]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৪৩২; ছহীহ মুসলিম, হা/২৪৩০।
[১৯]. তিরমিযী, হা/৩৮৭৮।
[২০]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৮২০; ছহীহ মুসলিম, হা/২৪৩২।
[২১]. মুসনাদে আহমাদ, হা/২৬৪০৫; আবূ দাঊদ, হা/২৬৯২।